তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক বলেছেন আমরা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের দ্বার প্রান্তে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রচলিত শিক্ষার পাশাপাশি ডিজিটাল শিল্প বিপ্লবের সাথে সামঞ্জস্য রেখে শিক্ষার্থীদেরকে প্রস্তুতি নিতে হবে।
প্রতিমন্ত্রী আজ আগারগাঁওস্থ আইসিটি টাওয়ারে বিসিসি’র মিলনায়তনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে জাপানে কর্মসংস্থান উপযোগী করে গড়ে তোলা আইটি ইঞ্জিনিয়ারদের সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করছিলেন।
জাপান আমাদের দীর্ঘ পরীক্ষিত ও বিশ্বস্থ বন্ধু উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন বাংলাদেশের সাথে জাপানের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্ণ হতে যাচ্ছে। তিনি বলেন জাপানিরা শান্তিপ্রিয়, নিয়মানুবর্তিতা পালনকারী হিসেবে বিশ্বের সুপরিচিত। সনদ পাওয়া শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারাই হবেন জাপানে বাংলাদেশের ব্যান্ড এ্যম্বাসেডর। জাপানি জনগণের সাথে কাজ করার এই সুযোগ আমাদের তরুণদের জন্য দারুণ অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি পেশাদারিত্ব ও প্রশিক্ষণলব্ধ জ্ঞান যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে জাপানের আইটি সেক্টরের উপযোগী করে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করতে প্রশিক্ষণ গ্রহণকারীদের প্রতি আহ্বান জানান।
প্রতিমন্ত্রী বলেন আমাদের দেশে প্রতি বছর ২০ লাখ গ্রাজুয়েট বের হয়। জাপানে প্রতিবছর প্রায় দুই লাখ আইটি প্রফেশনাল চাহিদা রয়েছে। তাই ভালোবাসা, সম্মান, দায়িত্ববোধ এবং সময়ানুবর্তিতা এ চারটি বিষয় নিষ্ঠার সাথে পালনের মাধ্যমে জাপানের শ্রম বাজারে প্রবেশের এ সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।
জাইকা বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ হিতশি হিরাতা বলেন, বি-জেট প্রোগ্রাম বাংলাদেশ ও জাপান এবং দুই দেশের মানুষের মধ্যেকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের এক দারুণ উদাহরণ। ভবিষ্যতেও এটি আরও দৃঢ় হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
ঢাকাস্থ জাপান দূতাবাসের ভারপ্রাপ্ত চার্জ দ্যা এফেয়ার্স ইয়াসুহারু শিনত বলেন, জাপানে কর্মক্ষম লোক কমে যাচ্ছে। তাই আশেপাশের দেশ থেকে শ্রমিক আনা হচ্ছে। বাংলাদেশের বি-জেট থেকে এর আগে পাঁচটি ব্যাচ জাপানে গিয়েছে। সেখানে তাদের কাজের সুনাম ও প্রশংসা শুনছি আমরা।
উল্লেখ্য, জাইকা ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে জাপানিজ আইটি সেক্টরের উপযোগী করে আইটি ইঞ্জিনিয়ারের দক্ষতা উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রকল্পটি চলবে ২০২১ সাল পর্যন্ত। তারই অংশ হিসেবে প্রকল্পের আওতায় জাপানি ভাষা, জাপানি বিজনেস কালচার এবং আইডি’র ওপর তিন মাস মেয়াদি প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এর আগের পাঁচটি ব্যাচে ১৫৬ জন শিক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। যাদের মধ্যে ১১৩ জনের জাপানে এবং বাকি ৪৩ জনের দেশেই কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়। এবারের ৩৫ জনের মধ্যে ছয় জনের ইতিমধ্যে জাপানে কর্মসংস্থান নিশ্চিত হয়েছে। আর বাকি ২৯ জনের কর্মসংস্থানের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এই প্রোগ্রামের ষষ্ঠ ব্যাচে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অংশ নেওয়া ৪০ জনের মধ্যে সফলভাবে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ৩৫ জন শিক্ষার্থীর মাঝে প্রতিমন্ত্রী সনদপত্র বিতরণ করেন।
বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক পার্থপ্রতিম দেব এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যোর মধ্যে বক্তৃতা করছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম, জাইকা বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ হিতশি হিরাতা, ঢাকাস্থ জাপান দূতাবাসের ভারপ্রাপ্ত চার্জ দ্যা এফেয়ার্স ইয়াসুহারু শিনত ও প্রকল্প পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার গোলাম সারোয়ার প্রমুখ।