আজ রাজধানীর বসুন্ধরায় জিপি হাউজে অনুষ্ঠিত টেলিনর ইয়ুথ ফোরাম ২০১৮- এর গ্র্যান্ড ফিনালেতে ৮ ফাইনালিস্টের মধ্যে থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ’র শিক্ষার্থী সায়মা মেহেদী খান এবং সামিন আলম বিজয়ী হয়েছেন। টিওয়াইএফ ২০১৮- এর বিজয়ীরা আগামী ডিসেম্বরে টেলিনরের কার্যক্রম রয়েছে এমন সাতটি দেশের প্রতিনিধিদের সাথে যোগ দিতে নরওয়ের রাজধানী অসলোতে যাবে। গ্র্যান্ড ফিনালেতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। টেলিনরের কার্যক্রম রয়েছে এমন ৮ টি দেশের ১৮ থেকে ২৮ বছর বয়সী তরুণদের সবার সামনে নিজেদের জীবন পরিবর্তনকারী ধারণা উপস্থাপনের সুযোগ করে দিতে নোবেল পিস সেন্টারের সাথে যৌথভাবে প্রতি বছর টেলিনর ইয়ুথ ফোরাম আয়োজন করে টেলিনর গ্রুপ। এবারের টিওয়াইএফ’র প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘ব্রাইট মাইন্ডস রিডিউসিং ইনকুয়ালিটিস’। বাংলাদেশে টেলিনর ইয়ুথ ফোরামের ষষ্ঠ পর্বের নির্বাচনী পর্যায়ের আয়োজন করে গ্রামীণফোন। ১৪শ’ আবেদনের মধ্য থেকে বাছাই প্রক্রিয়ায় ৬০ জন আবেদনকারীকে ধারণা উপস্থাপনের জন্য মনোনীত করা হয়। মনোনীত ৬০ জন গত ৪ ও ৫ সেপ্টেম্বর জিপি হাউজে নিজেদের ধারণা উপস্থাপন করে। সেখান থেকেই ৭ জনকে টিওয়াইএফ গ্র্যান্ড ফিনালের জন্য নির্বাচন করা হয়। টিওয়াইএফ বাংলাদেশের ফাইনালিস্টরা হলেন- ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির তাসনীম ওমর আভা, সামীন আলম ও সৈয়দ সামীন শাহরিয়ার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ’র তারেক মুসানা, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালের (বিউপি) মো. নাজিব ইনতেসার, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ’র সাবিহা সাজু ইবনে আবেদিন এবং আর্মি আইবিএ’র ইফতেখার মাহমুদ। এ সাতজনের বাইরেও প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বে নিজের ধারণা উপস্থাপনের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ’র শিক্ষার্থী সায়মা মেহেদী খান ‘ওয়াইল্ড এন্ট্রি’ হিসেবে মনোনীত হয় । নির্বাচিত ফাইনালিস্টের বাইরে ৮ম থেকে ২০ তম জনের তালিকা থেকে ওয়াইল্ড এন্ট্রি হিসেবে একজন মনোনীত হয়। টিওয়াইএফ- এ প্রতিবছর দু’জন তরুণ বিজয়ী হিসেবে মনোনীত হয় এবং টেলিনর ইয়ুথ ফোরামের বৈশ্বিক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করে । এ বছরের বিজয়ী ধারণাগুলো হলো কৃষি নেট এবং প্রোজেক্ট সুরক্ষা । একটি কঠোর নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীদের নির্বাচন করা হয় এবং তারা পরবর্তীতে গ্রামীণফোনের বিশেষজ্ঞ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান থেকে আগত বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে জুরিবোর্ডের সামনে তাদের ধারণা উপস্থাপন করে। আট জনের মধ্যে থেকে সেরা ধারণা উপস্থাপনকারী ২ জনকে বিজয়ী হিসেবে নির্বাচিত করে বিচারক প্যানেল। বিজয়ীরা নোবেল শান্তি পুরষ্কার অনুষ্ঠান চলাকালীন নরওয়ের অসলোতে টিওয়াইএফ সম্মেলনে অংশ নেবে। টিওয়াইএফ গ্র্যান্ড ফিনালে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বনামধন্য শিক্ষক, দেশের নানান স্টার্টআপের সফল উদ্যেক্তারা, সাংবাদিক, সরকারি কর্মকর্তা, ডিজিটাল ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বিশেষজ্ঞ এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। অনুষ্ঠানে টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘আমাদের তরুণরা নতুন নতুন প্রযুক্তি নিয়ে সামাজিক সমস্যা সমাধানে কাজ করছে দেখে খুবই আনন্দ বোধ করছি। তারা বিশ্বের যে কোন মঞ্চে নিজেদের প্রমান করার যোগ্যতা রাখে। তাদের এমন একটি বৈশ্বিক মঞ্চে যাবার সুযোগ করে দেয়ার জন্য আমি গ্রামীণফোন ও টেলিনর গ্রুপকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’ গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী মাইকেল ফোলি বলেন, ‘টিওয়াইএফ’র শুরু থেকেই এটা আমার জন্য বছরের সবচেয়ে রোমাঞ্চকর দিনগুলোর একটি। গত কয়েক বছরে এটি দেশের ভবিষ্যত নেতৃবৃন্দের জন্য বিশ্ব পরিবর্তনকারী ধারণা নিয়ে কাজ করার জন্য একটি সম্মানজনক প্ল্যাটফর্ম হিসেবে গড়ে উঠেছে।’ এদিন অন্যান্য অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নরওয়ের রাষ্ট্রদূত মিজ সিডসেল ব্লেকেন, ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত মিজ উইনি এসট্রুপ পেটারসেন, পাকিস্তানের হাই কমিশনার রাফিউজ্জামান সিদ্দিকী এবং বিউপি’র উপাচার্য মেজর জেনারেল মো. এমদাদ-উল-বারী, এনডিসি, পিএসসি, টিই । এ বছরের জুলাইয়ে গ্রামীণফোণ একটি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে টিওয়াইএফ ২০১৮- এর উদ্বোধন করে। প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষার্থী ও আগ্রহী অংশগ্রহণকারীদের টেলিনরের ওয়েবপেজ এবং গ্রামীণফোনের ওয়েবপেজ ও অফিসিয়াল ফেসবুক পেজের মাধ্যমে তাদের ধারণা উপস্থাপনের আহ্বান জানায়। ২০১৩ সালে টিওয়াইএফ যাত্রা শুরুর পর তরুণ নেতৃত্ব, উদ্ভাবন ও সামাজিক উদ্যোগ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে এসেছে।