ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ডিজিটাল প্রযুক্তি যত বেশী বাড়ছে, ডিজিটাল অপরাধের পরিমান তত বাড়ছে। ডিজিটাল আইন না থাকলে কিংবা এই আইন সম্পুর্ণ ভাবে প্রত্যাখ্যান করলে ডিজিটাল দুনিয়ায় বসবাস করা সম্ভব হবেনা। নারী – শিশুসহ নতুন প্রজন্ম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিনিয়ত হেনস্থা হচ্ছেন। একই সাথে সাম্প্রদায়িকতা, সন্ত্রাস, মৌলবাদ ও রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারণা চূড়ান্ত ভাবে বেড়ে চলেছে। আমরা এসবকে মোকাবেলা করতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনেরই সহায়তা নিচ্ছি। এই আইনের বদৌলতে ২২ হাজার পর্ন সাইট ও ৪ হাজার জুয়ার সাইট বন্ধ করা হয়েছে। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছেনা। এছাড়াও ব্যক্তিগত তথ্য নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে, পাইরেসি, কপিরাইট ও ট্রেডমার্ক ভায়োলেশন হচ্ছে। এসব বন্ধ করতে আইনের প্রয়োগ অপরিহার্য।
মন্ত্রী আজ শনিবার ঢাকায় ইন্টারনেট গভার্ন্যান্স ফোরাম আয়োজিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ শীর্ষক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
সংগঠনের সভাপতি, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. শামীম রেজা, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী এডভোকেট ফারহানা হক, টিআরএনবি সভাপতি সাংবাদিক রাশেদ মেহেদী, ফাইভার এট হোমের চীফ টেকনোলজি অফিসার সুমন আহমেদ সাব্বির প্রমূখ বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এডভোকেট খন্দকার হাসান মাহমুদ।
কম্পিউটার প্রযুক্তি বিপ্লবের অগ্রদূত মোস্তাফা জব্বার অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ভারত ও সিঙ্গাপুরসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ন্ত্রণে বিদ্যমান আইনের উদাহরণ দিয়ে বলেন, দেশ ও মানুষের নিরাপত্তা বিধানে সোস্যাল মিডিয়ার ব্যাপারে আইনী পদক্ষেপ গ্রহণের সময় এসেছে। দেশ ও দেশের মানুষ সবার আগে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
২০০৮ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘোষণার ধারাবাহিকতায় ২০০৯ থেকে গত ১২ বছরে দেশে ডিজিটাল প্রযুক্তির বিকাশের চিত্র তুলে ধরে বলেন, ২০০৮ সালে দেশে ৮ জিবিপিএস ইন্টারনেট ব্যবহার হতো, ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিলো ৮ লাখ যা বর্তমানে ১১ কোটিতে উন্নীত হয়েছে। তিনি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তার জন্য সচেতনতা দরকার। কিভাবে পাসওয়ার্ড সংরক্ষণ করতে হবে, কিভাবে নিজেদের নিরাপদ রাখা যাবে সে বিষয়টা নিয়ে ব্যবহারকারিদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে। নিরাপদ ইন্টারনেটের জন্য মন্ত্রী ব্যাপক জনসচেতনতা গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি সকলকে অনুরোধ করেন যেন তারা আইনটির কোন ত্রুটি থাকলে তা সরকারের দৃষ্টিতে আনার জন্য অনুরোধ করেন।
সভাপতির বক্তৃতায় হাসানুল হক ইনু ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রয়োগকারি সংস্থা, বিচারক, আইনজীবীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের এই বিষয়ে ব্যাপক প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বলেন, ডিজিটাল জগৎ প্রসারিত হচ্ছে । ফলে এর সাথে প্রতিষ্ঠান সমূহকে শক্তিশালী করতে হবে । তা না হলে মানুষ হয়রানির শিকার হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।