ডিজিটাল মার্কেটিং ও ডাটাবেজ এখনকার প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ দুটি বিষয়। গতকাল ইরা ইনফোটেক লি.-এর সভাকক্ষে তৃতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘ইরা টেক-টক’ শীর্ষক আইডিয়া শেয়ারিং সেমিনার ও মুক্ত আলোচনা সভা। এবারের প্রতিপাদ্য ছিল ‘ডিজিটাল মার্কেটিং ফিউচার ইন বাংলাদেশ’। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাইজ আইটি সলিউশনসনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক একেএম রাশেদুল মাজিদ। সেমিনারটিতে সভাপতিত্ব করেন ইরা ইনফোটেকের সিইও মো. সিরাজুল ইসলাম। ইরা ইনফোটেকে কর্মরত কর্মীদের কাছ থেকে জেনে হয় ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে আগামীতে কোন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায় সেই বিষয়ে বিভিন্ন আইডিয়া। প্রধান অতিথির বক্তব্যে একেএম রাশেদুল মাজিদ বলেন, ‘বিশ্বের অন্য দেশের সঙ্গে আমাদের দেশও এগিয়ে চলেছে। ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে অন্য দেশগুলোর মতো না হলেও ইতোমধ্যে এর চর্চা শুরু হয়েছে। বিজ্ঞাপন প্রদর্শন ও প্রচারণার কাছে বিজ্ঞাপনের জন্য অন্য সব মাধ্যমগুলোর তুলনায় খরচ ৭০ শতাংশ কম। এছাড়াও ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের বড় সুবিধা হলো-এর অডিয়েন্স শনাক্ত করা যায়। কোন বয়সের বা কোন এলাকায় বা কোন অডিয়েন্সের কাছে আমি আমার পণ্যের বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করাতে চাই তা চিহ্নিত করা যায়।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমারা অনেক ধরনের পণ্য উত্পাদনের ক্ষমতা রাখি। অনেক সময় এই ভেবে অনেকেই উত্পাদন থেকে সরে আসে যে, আমি একটি পণ্য উত্পাদন করার ক্ষমতা রাখি কিন্তু আমার পণ্যের ক্রেতা বা গ্রাহক আমাদের দেশের তুলনায় অন্য দেশে বেশি রয়েছে। আমি এই পণ্যগুলো ওই দেশের ব্যবহারকারীদের নিকট কিভাবে পৌঁছে দেবো? তাদেরকে আশা দেখাতে চাই। বর্ডার লেস পণ্য উত্পাদন করার দক্ষতা থাকলে তা করতে পারেন। আপনার পণ্যের জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং হবে, আপনার পণ্য এদেশ থেকেই বিক্রি হবে। যেমন ধরুন, আমি একটি ব্রাউজিং সফটওয়্যার আবিষ্কার করেছি। এই সফটওয়্যারটি আমাদের দেশের তুলনায় ভারতে বেশ চাহিদা রয়েছে। সফটওয়্যারটি ইতোমধ্যে ১.৫ মিলিয়ন বার ডাউনলোড হয়েছে। এই ব্রাউজিং সফটওয়্যারটি আমি বাংলাদেশকে টার্গেট করে তৈরি করিনি। আমার লক্ষ্য ছিল বিশ্ববাজার।’ সেমিনারে ইনফোটেকের সিইও মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘সভ্যতা সর্বদা পরিবর্তনশীল। প্রতিটি সভ্যতা সৃষ্টির রহস্য রয়েছে। যখন যে সভ্যতার উদ্ভব হয়েছে তখন সেই সভ্যতার লোকজন বেশি আধুনিক ও আগামীর পরিকল্পা করতে পারতেন। উপযুক্ত সময়ে সঠিক চিন্তা না করতে পারলে আমরা চিন্তার সেক্টরে পঙ্গুতে পরিণত হবো।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন ধরনের সফটওয়্যার ডেভেলপ ও তৈরি করতে শুরু করেছি অনেক আগে থেকেই। নতুন নতুন চাহিদা আমাদের সামনে এসে হাজির হচ্ছে। প্রতিনিয়ত আমরা নতুন সমস্যায় যেন না পড়ি সেজন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হচ্ছে। বর্তমানে ডাটাবেজ-এর চাহিদা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আমরা এখন থেকে যদি ডাটাবেজ নিয়ে চিন্তা না করি তাহলে পরনির্ভরশীলতা আমাদের ছাড়বে না।’ সেমিনারে ইরা ইনফোটেকের সিইও ডাটাবেজ সম্পর্কে বিস্তর আলোচনা করেন। এ সময় উপস্থিত বক্তারাও ডাটাবেজ সম্পর্কে তাদের নিজস্ব মতামত ও সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন। সেমিনারে ইরা ইনফোটেকের সিইও সিরাজুল ইসলাম তার প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মীদের চিহ্নিত করা আইডিয়াগুলো নিয়ে বাস্তবায়নমূলক কাজ করার তাগিদ দেন। তিনি বলেন, ‘শুধু আইডিয়া দিলেই হবে না, এগুলো বাস্তবায়নও করতে হবে।’ তিনি জানান, ইরা ইনফোটেক প্রায়ই এ ধরনের মুক্ত আলোচনার আয়োজন করে থাকে। এই আয়োজনের মাধ্যমে উঠে আসে সমাজের বিভিন্ন সমস্য ও তার সমাধান। উল্লেখ্য, অনুষ্ঠানের শেষদিকে উপস্থিত কর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন রাইজ আইটি সলিউশনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক একেএম রাশেদুল মাজিদ। সেমিনারটিতে প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন ।