TechJano

ডিস ও ইন্টারনেটের ঝুলন্ত তার অপসারণ শুরু ঢাকা উত্তর সিটিতে

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশেনের (ডিএনসিসি) মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় রাজধানীর গুলশান ২ নম্বর গোলচত্বর থেকে ডিস ও ইন্টারনেটেরে অবৈধ ঝুলন্ত তার অপসারণ কাজের উদ্বোধন করেন। গুলশান এভিনিউতে ঝুলন্ত তার অপসারণের মাধ্যমে (পাকিস্তান অ্যাম্বেসি থেকে শুটিং ক্লাব পর্যন্ত) ডিএনসিসি এলাকায় ঝুলন্ত ডিস ও ইন্টারনেটের তার অপসারণ কার্যক্রম শুরু হলো।

ডিস ও ইন্টারনেটেরে অবৈধ ঝুলন্ত তার অপসারণ উদ্বোধনকালে মেয়র বলেন, তারের জঞ্জাল আজ থেকে ১০ বছর আগে যে অবস্থা ছিল, এখনো একই অবস্থা। কিন্তু এই শহরকে এভাবে চলতে দেওয়া যায় না। মনে হচ্ছে ঝুলন্ত তার মানেই ঢাকা শহর, ঢাকার আসল চিত্র। এই যে দেখুন এই জায়গাটির একদিকে ফাইভ স্টার হোটেল, আরেক দিকে তারের জঞ্জাল। কিন্তু ঢাকার এই চিত্র আমরা কেউ দেখতে চাই না। তাই আমি গত কোরবানির ঈদের আগে বলেছিলাম, ১ অক্টোবর থেকে আমরা ঝুলন্ত তারগুলোকে নামিয়ে দেবো।

মেয়র আরো বলেন, আমরা ন্যাশনওয়াইড টেলিকমিউনিকেশন ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক (এনটিটিএন), ইন্টারনেট সার্ভিস প্রভাইডার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি), ক্যাবল অপারেটরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (কোয়াব) এর সাথে সাতবার সভা করেছি, সবাইকে নিয়ে সিরিজ অফ মিটিং করেছি, সমস্যাটি সমাধানের জন্য। একটি কথা জানাতে চাই, যখনই আমরা মিটিং করছি, এনটিটিএন, আইএসপিএবি, কোয়াবের সাথে, যখনই মিটিং শুরু করি, মনে হয় একজনের সাথে আরেকজনের শত্রুতা। আইএসপিএবি দোষ দেয় এনটিটিএনকে, এনটিটিএন দোষ দেয় কোয়াবকে।

আতিকুল ইসলাম বলেন, এই মুহূর্তে আপনারা জানেন দেশে কোভিড চলছে, স্কুলের বাচ্চারা বাসায় বসে অনলাইনে এবং টেলিভিশনে পড়াশোনা করছে। অনেকে বাসায় বসে অনলাইনে কাজ করছেন, জীবিকা নির্বাহ করছেন, সবকিছু মিলিয়ে পরিবেশটা অন্যরকম। আমাকে অনেক অভিভাবক অনুরোধ করেছেন। আপনারা দেখবেন আজকে তার কাটবে তা এই গুলশান এভিনিউর উত্তর থেকে দক্ষিণে যত তার আছে সব গুলো কেটে দেবো। গুলশান এভিনিউতে টোটাল নয়টি মোড় আছে। এই নয়টি মোড়ের তার, তাদের অনুরোধে আরো সাত দিন সময় দেওয়া হলো। সাত দিনের মধ্যে ক্রসিংয়ের তারগুলোও কেটে দেবে। আমরা চাচ্ছি এটি টেকসই করার জন্য। স্বল্প মেয়াদী পদ্ধতিতে আমি যেতে চাচ্ছি না। আজকে যে তার কাটা হচ্ছে এটাই কিন্তু সেবা প্রদানকারীরাই কাটছেন। এই প্রথম তারা নিজের তার নিজেরা কাটছেন। তাদেরকে আমি এখানে ডাক দিয়েছি, কারণ ঢাকা হচ্ছে আপনাদের সকলের।

এ অভিযানের কারণে রাজধানীতে ডিশ ও ইন্টারনেটের কোন ঝুলন্ত তার থাকবে না। এ সকল ঝুলন্ত তার আন্ডারগ্রাউন্ডে নিয়ে যেতে নির্দেশনা দিয়েছেন মেয়র। কিন্তু সেবাদানকারীদের সিংহভাগ তাতে প্রস্তুত না থাকায় বড় পরিমাণ গ্রাহক ডিশ সেবা বঞ্চিত হবেন| এর আগে ঝুলন্ত তার অপসারনে অভিযান চালায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন| এ প্রেক্ষাপটে অনেক গ্রাহক ডিরেক্ট টু হোম (ডিটিএইচ) সংযোগের প্রতি ঝুঁকতে শুরু করেছে।

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এখানে এনটিটিএন কাজ করছে না, আমি মনে করছি এটি এনটিটিএন এর ব্যর্থতা। তারা ১০ বছর যাবৎ লাইসেন্স নিয়েছে, তারা কেন মাটির নিচ দিয়ে লাইন নেয় নাই? সুতরাং আমি সাব্যস্ত করেছি, তাদের সাথে মিটিং করে, আমাদের রাস্তার পাশে যে সসার ড্রেনগুলো আছে এগুলোর নিচ দিয়ে আমি পাইপ বসিয়ে দেবো। উনারা রাজি হয়েছেন। এ বাবদ ডিএনসিসিকে তারা ভাড়া দেবেন। আমি ইতিমধ্যে প্রকৌশল বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছি, আমাদের যত নতুন রাস্তা হবে, সেই রাস্তাাগুলোর নিচ দিয়ে লাইন নেয়ার জন্য ব্যবস্থা রাখা হবে। আমরা চাই একটা স্থায়ী সমাধান। গুলশান এভিনিউর অবৈধ ডিস ও ইন্টারনেটের ঝুলন্ত তার অপসারণের পরে গুলশান ১ থেকে রাস্তার পূর্ব ও পশ্চিম পাশে, গুলশান ২ থেকে পূর্ব ও পশ্চিম দিকে সকল তার অপসারণ করা হবে।

মেয়র শংকা প্রকাশ করে বলেন, আজ যদি ঢাকা শহরের তার পুরোটা কেটে দেই, তাহলে ঢাকা শহর কলাপ্স হয়ে যাবে। আমাদের বাচ্চাদের পড়াশোনা হবে না। আমি বিশ্বাস করি আমরা যেভাবে অভিযান পরিচালনা করছি, আগামী এক বছরের মধ্যে ডিএনসিসির সম্পূর্ণ এলাকার তারগুলোকে নামিয়ে ফেলার চেষ্টা করব। এটা আমাদেরকে নামাতেই হবে।
ঝুলন্ত তার অপসারণকালে অন্যান্যের মধ্যে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সেলিম রেজা, সচিব মোজাম্মেল হক, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমিরুল ইসলাম, কোয়াব এর সভাপতি এস এম আনোয়ার কবির, আইএসপিএবি এর সভাপতি মোঃ আমিনুল হাকিম উপস্থিত ছিলেন।

Exit mobile version