ইভেন্ট

তিন দুয়ারের কোলে গ্রন্থে’র মোড়ক উন্মোচন

By Baadshah

January 09, 2019

সম্প্রতি আশুলিয়ার এবিসি গার্ডেন প্রাঙ্গনে ইউপিএল থেকে প্রকাশিত সফল নির্মাণশিল্পী সুভাষ ঘোষের স্মৃতিচারণমূলক আত্মকথা তিন দুয়ারের কোলে গ্রন্থে’র প্রকাশনা উৎসব পালন করা হলো।

লেখক সুভাষ ঘোষ বর্তমানে অ্যাসোসিয়েটেড বিল্ডার্স কর্পোরেশন লিমিটেডের (এবিসি) চেয়ারম্যান পদে অধিষ্ঠিত। তাঁর জন্ম পাবনার সুজানগরে এবং শৈশব কেটেছে সেখানে। তাঁর আত্মকথায় ছেলেবেলার স্মৃতি, লেখাপড়া, চোখের সামনে ঘটতে দেখা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, দেশভাগ, একাত্তর ইত্যাদি ঘটনাবলীর পাশাপাশি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি হিসেবে একজন বিচক্ষণ ব্যবসায়ী হিসেবে তার উত্থানের কাহিনি – এসবই বাক্সময় হয়ে উঠেছে লেখকের সাবলীল বয়ানে।

অনুষ্ঠানের আলোচনা পর্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন জনপ্রিয় অভিনেতা, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও এশিয়াটিক থ্রি-সিক্সটি’র গ্রুপ চেয়ারম্যান জনাব আলী যাকের। বইয়ের আলোচনায় তিনি বলেন যে বইটি পড়তে গিয়ে তিনি লেখকের সহোদর হিসেবে নিজেকে কল্পনা করেছেন, এবং বাংলাদেশে রচিত আত্মজীবনীর মধ্যে এই বইটি অন্যতম শ্রেষ্ঠ বই হিসেবে বিবেচিত হবে বলে তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন। আলী যাকের বইটির মুখবন্ধও রচনা করেছেন, যেখানে তিনি বইটিকে বর্ণনা করেছেন “আনপুটডাউনেব্ল” হিসেবে, অর্থাৎ, “যে বইটি রেখে ওঠা যায় না”। জনাব আলী যাকের তাঁর মুখবন্ধে লেখকের বাল্যকালের স্মৃতি রোমন্থনকে আখ্যায়িত করেছেন এভাবে: ‘এক চিরায়ত বাঙালীর সর্বজনীন এবং শাশ্বত অভিজ্ঞতাপুষ্ট আত্মকাহিনী যা আমাদেরও নিজস্ব কথা’। দেশভাগ ও ষাটের দশকে পাকিস্তানী সরকারের প্ররোচনায় শুরু সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সময়ে লেখকের অভিজ্ঞতা এবং তার সাথে তার নিজের অভিজ্ঞতার সামঞ্জস্য নিয়েও তিনি কথা বলেন।

এছাড়াও বইটি নিয়ে আলোচনায় অংশ নিয়েছেন স্থপতি মোশতাকুর রহমান, প্রকৌশলী কানুতোষ মজুমদার, শ্রী দীপেন চক্রবর্তী, লেখকের ভাই সুজিত ঘোষ, লেখকের কন্যা শ্রাবন্তী দত্ত, এবং লেখক সুভাষ ঘোষ। প্রকৌশলী কানুতোষ মজুমদার বলেন যে বইটি শুধু একটি আত্মজীবনী নয়, বরঞ্চ এটি একটি সাহিত্যকর্মে উত্তীর্ণ হয়েছে; সুভাষ ঘোষ একজন প্রকৌশলী থেকে একজন সুলেখকে রূপান্তরিত হয়েছেন।

অনুষ্ঠানে এমেরিটাস প্রকাশক ও ইউপিএল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহিউদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। তিনি বইটির বিষয়ে বিশেষ আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন যে বাংলাদেশে ভাল লেখকের ঘাটতি আছে, এবং এই বইটি এধরণের ভাল লেখার শূন্যতা পূরণে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। তিনি লেখককে তার লেখালেখির কাজ চালিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করেন। আলোচনা অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেছেন রাখাল রাহা। অনুষ্ঠানে এছাড়াও ছিল মোড়ক উন্মোচন পর্ব, মধ্যাহ্ন ভোজ, বইটির অংশবিশেষ থেকে পাঠ ও তার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ সঙ্গীত পরিবেশন পর্ব।

প্রখ্যাত সাংবাদিক ও প্রথম আলো’র সম্পাদক জনাব মতিউর রহমান তাঁর শুভেচ্ছা বার্তায় স্মৃতিকথাটি রচনায় বিবরণের মাধুর্য্য এবং লেখকের জীবন সংগ্রাম ও সাফল্যের জন্য লেখককে অভিনন্দন জানান। তিনি মনে করেন যে এধরণের লেখা অনেকের জন্য বিপুল অনুপ্রেরণা যোগাবে। উল্লেখ্য যে প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বইটির একটি বিশদ পর্যালোচনা রচনা করেছেন।