মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা গ্রহণের মোবাইল অ্যাপলিকেশন ‘মাইস্টাডি’ তৈরিতে ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশ ও দূরবীন ল্যাবস লিমিটেড এর সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে গ্রামীণফোন। জাতীয় পাঠ্যক্রম অনুযায়ী গণিত, ইংরেজী ও আইসিটি বিষয়গুলো নিয়ে ৯ম ও ১০ শ্রেনীর শিক্ষার্থীদের জন্য ‘মাইস্টাডি’ মোবাইল অ্যাপটি কাজ করবে। শিক্ষার্থীরা যেনো বিষয়গুলো সহজভাবে বুঝতে পারে সে লক্ষ্যে স্বশিক্ষা ও স্ব-মূল্যায়ন করার সুবিধা প্রদান করবে অ্যাপটি। দেশব্যাপি সমান তালে সবাই অ্যাপটি ব্যবহার করে মানসম্মত শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পাবে এবং নির্দিষ্ট বিষয়ের যে কোনো কন্টেন্ট সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারনা পাবে। ‘মাইস্টাডি’র কন্টেন্টগুলো শিক্ষার্থীরা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে পাওয়ার সুযোগ পাবে। গ্রামীণফোনের সিইও মাইকেল ফোলি, ব্রিটিশ কাউন্সিলের বাংলাদেশ ডিরেক্টর বারবারা উইকহ্যাম, দূরবীন ল্যাবসের ডিরেক্টর রিয়াজ মনোয়ার নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। বর্তমানের ডিজিটাল সময়ে, প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীর জন্য ডিজিটাল শিক্ষামূলক কনটেন্ট একটি অতীব প্রয়োজনীয় বিষয় হয়ে উঠছে। বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের জন্য ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ থাকলেও, গঠনমূলক ও যথাযথ শিক্ষা উপকরণ বাংলায় পাওয়া বেশ কঠিন। এই অপ্রতুলতার কথা মাথায় রেখেই দীর্ঘদিন ধরে দেশে এবং দেশের বাইরে শিক্ষার উন্নয়নে কাজ করে আসা ব্রিটিশ কাউন্সিল এবং বাংলাদেশেরডিজিটাল শিক্ষার উন্নয়নে কাজ করা প্রতিষ্ঠান দূরবীন ল্যাবস এর সাথে কাজ করার উদ্যেগ নিয়েছে গ্রামীণফোন। অনুষ্ঠানে গ্রামীণফোনে সিইও মাইকেল ফোলি বলেন, “ধীরে শুরু হলেও এটা নিশ্চিতভাবেই বলা যায় অনলাইন শিক্ষা আমাদের জ্ঞান আহরণের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করে দেবে এবং এটি ইতিমধ্যেই আমাদের সমাজে প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। বাংলাদেশের সামনে জ্ঞান এর ডিজিটালকরণ ও গণতন্ত্রায়ণ এবং মানসম্মত শিক্ষার সাথে ব্যবধান হ্রাসের ভালো সুযোগ রয়েছে। বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত ব্রিটিশ কাউন্সিল এবং আমাদের দেশীয় ইনোভেশন পার্টনার দূরবীন ল্যাবস-এর সহযোগিতায়‘মাইস্টাডি’ বর্তমান সময়ে শিক্ষার উন্নয়নে প্রয়োজনীয় ও সর্বোৎকৃষ্ট কনটেন্ট প্রদানে সক্ষম হবে বলে আমরা আশাবাদী।” ধারণামূলক কাঠামো গঠন, ইউজার ইন্টারফেস, স্থানীয় শিক্ষামূলক কনটেন্ট লেখকদের কাছ থেকে মোবাইল কনটেন্ট শ্রেণীবদ্ধ করতে প্রয়োজনীয় ডিজাইন নির্দেশনা প্রদানে প্রধান ভূমিকা পালন করবে ব্রিটিশ কাউন্সিল। অন্যদিকে, ব্রিটিশ কাউন্সিলের নির্দেশনা মেনে ডিজিটাল কনটেন্ট উন্নয়নে কাজ করবে দূরবীন ল্যাবস। এছাড়া, দূরবীন ল্যাবস লিমিটেডের দায়িত্বে থাকবে নিজস্ব এডটেক এক্সপার্টাইজ কাজে লাগিয়ে মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন এবং কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্ল্যাটফর্মের রূপরেখা ঠিক রাখা। অনুষ্ঠানে ব্রিটিশ কাউন্সিলের পক্ষে কান্ট্রি ডিরেক্টর বারবারা উইকহ্যাম বলেন, “বাংলাদেশের শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও অন্যান্য এজেন্সির সঙ্গে ইংরেজি বিষয়ক জ্ঞান এবং শিক্ষার উন্নয়নে কাজ করার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা রয়েছে আমাদের। আমরা মনে করি ডিজিটাল ডোমেইনে এই উদ্যোগ উন্নয়নের পরবর্তী ধাপ হিসেবেই বিবেচিত হবে। বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় টেলিকম প্রতিষ্ঠান গ্রামীণফোন এবং ডিজিটাল পর্যায়ে নেতৃত্ব দেয়া দূরবীন ল্যাবসের সঙ্গে কাজ করতে পেরে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত।” দূরবীন ল্যাবসের রিয়াজ মনোয়ার বলেন, “বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশে ডিজিটাল শিক্ষা আশীর্বাদ হিসেবে কাজ করবে, যেটি এখানকার শিক্ষার্থীদের গুণগত শিক্ষা প্রদানে একটি সহায়ক হিসেবে আবির্ভূত হবে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি জিপি মাইস্টাডি অ্যাপটি আমাদের ডিজিটাল শিক্ষাকে আরো কয়েক ধাপ সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে এবং লাখো শিক্ষার্থীর জ্ঞান অর্জন এবং জ্ঞানের পরিধি বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে কাজ করবে।” শিক্ষা ক্ষেত্রে বিশেষ করে মেয়েদের জন্য ‘মাইস্টাডি’ অ্যাপটি সমতা বিধানকারী উপাদান হিসেবে কাজ করবে, ঘরে বসেই ওরা বিশ্বের নানা প্রান্তের নানা বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে সক্ষম হবে। তাছাড়া, দূর দূরান্তের শিক্ষার্থীদের জন্য এটি বিশেষভাবে কাজে দেবে। এসডিজি ১০-এর লক্ষ্য ‘বৈষম্য নিরসন’-এর বিষয়ে প্রতিশ্রতিবদ্ধতার অংশ হিসেবে গ্রামীণফোন এ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ব্রিটিশ কাউন্সিলও স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক শিক্ষা ব্যবস্থায় তার উল্লেখযোগ্য দক্ষতা স্বেচ্ছায় এতে কাজে লাগাচ্ছে। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন গ্রামীণফোনের ডেপুটি সিইও ও সিএমও ইয়াসির আজমান, চিফ কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার মাহমুদ হোসেন; হেড অব সাস্টেইনেবিলিটি আনজুম রাশনা হাসান এবং হেড অব কমিউনিকেশনস সৈয়দ তালাত কামালসহ গ্রামীণফোনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ। এছাড়া ব্রিটিশ কাউন্সিলের বাংলাদেশ ডিরেক্টর বারবারা উইকহ্যামসহ ব্রিটিশ কাউন্সিল ও দূরবীন ল্যাবের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।