প্রযুক্তি খবর

‘থ্রিডি প্রিন্টার’ এবার বাড়ি বানাবে!

By Baadshah

April 30, 2018

থ্রিডি প্রিন্টারে তৈরি হবে বাড়ি, আর সেখানে আপনি স্বচ্ছন্দেই বসবাস করতে পারবেন । সম্প্রতি ‘আইকন’ নামের যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের নতুন এক ব্যবসায় উদ্যোগ এ প্রযুক্তির পরীক্ষামূলক কাজ শুরু করছে। বসতবাড়ির নকশা নামিয়ে বা নিজে তৈরি করে তা বাসযোগ্য বাড়ির আকারে ত্রিমাত্রিক মুদ্রণ করে দেয় প্রতিষ্ঠানটি। উন্নত প্রযুক্তি ও বড় আকৃতির এ ত্রিমাত্রিক মুদ্রণযন্ত্রের নাম ‘ভলকান’।

পৃথিবীর জনসংখ্যার প্রায় একশো কোটি মানুষ প্রতিদিন খোলা আকাশের নিচে ঘুমাতে যায়। মূলত বাড়ি তৈরির জায়গা, বাড়ি তৈরির খরচ কিংবা প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণেই বিপুলসংখ্যক মানুষের মাথা গোঁজার ঠাঁই হয় না। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের দুটি কোম্পানি যৌথভাবে এমন এক প্রযুক্তি নিয়ে এসেছেন যা সস্তায় এবং খুব কম জায়গার মধ্যে বাড়ি তৈরির ব্যবস্থা করে দেবে।  ৩৮০ বর্গফুটের একতলা একটি বাড়ি তৈরি করতে সময় লাগবে মাত্র দুই দিন। আর খরচও খুব একটা বেশি নয়, ১০ হাজার মার্কিন ডলার। স্বল্প সময়ের মধ্যে অত্যন্ত নিখুঁত আর নান্দনিক মডেলের বাড়ি তৈরি করতে তারা থ্রিডি প্রিন্টিং প্রযুক্তি কাজে লাগানোর পথ খুঁজে বের করেছেন।

থ্রিডি প্রযুক্তিতে তৈরি করা বাড়িটি শুধু মাথা গোঁজার মতোই হবে না সত্যিকার হয়ে উঠবে সুখের ঠিকানা। মূলত উন্নয়নশীল দেশের সব মানুষের জন্য ঘর নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই এই প্রকল্পটি কাজে লাগাতে চান। নির্মাণ প্রতিষ্ঠান আইকন এবং অলাভজনক সংস্থা নিউ স্টোরি যৌথভাবে বাস্তবায়ন করতে চান ৩৮০ বর্গফুটের ক্ষুদে বাড়ির

এই বাড়ির নিরাপত্তার দিক নিয়েও ভাবতে হবে না বাড়ির মালিককে। সেই বিষয়গুলো মাথায় রেখেই এই প্রযুক্তি তৈরি করা হয়েছে। বাড়ির দেয়াল মজবুত রাখতে ভেতর ও বাইরের দেয়ালে কংক্রিটের স্তর ব্যবহার করা হবে। তবে বাড়ি তৈরির মূল উপাদান হিসেবে কী থাকছে তা এখনও নিশ্চিতভাবে বলা হয়নি। আগামী বছরের মধ্যেই এ প্রকল্পের পূর্ণাঙ্গ কাজ শুরুর কথা রয়েছে। এই প্রযুক্তিকে কাজে লাগাতে পারলে দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষের জন্য দ্রুত ঘর নির্মাণও করা সম্ভব। প্রতিষ্ঠানটির স্বপ্ন, মঙ্গলে বসতি গড়ে তুলতে এ ধরণের ত্রিমাত্রিক মুদ্রণের বাড়ি তৈরি করা।

থ্রিডি প্রিন্টিংয়ে বাড়ি তৈরির সম্পর্কে বলতে গিয়ে প্রতিষ্ঠান দুটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, থ্রিডি প্রিন্টিংয়ের ছোট মেশিনে যেভাবে কোনো কিছু পরতে পরতে প্রিন্ট করা হয় এই বাড়ির দেয়াল এবং ছাদও তৈরি করা হবে সেইভাবে। পার্থক্য শুধু থ্রিডি প্রিন্টারের মাধ্যমে বাড়ি তৈরি করার ক্ষেত্রে কংক্রিটের জায়গায় অন্য এক ধরনের উপাদান ব্যবহার করা হবে। আইকনের প্রধান নির্বাহী বলেন, এই মেশিনের সাহায্যে আমরা সর্বোচ্চ ১১ ফুট উচ্চতার বাড়ি প্রিন্ট করতে সক্ষম।

আপাতত ৩৮০ বর্গফুটের বাড়ির জন্য ১০ হাজার ডলার খরচের হিসেব দিলেও প্রতিষ্ঠান দুটি আশা করছে এই বাড়ির আয়তন ৬৫০ এ নিয়ে গেলে খরচ তুলনামূলকভাবে কমে আসবে। বাড়ি তৈরির জন্য একসঙ্গে বেশি পরিমাণ কাঁচামাল সংগ্রহ করতে পারলে এবং থ্রিডি প্রিন্টিং মেশিনের অগ্রগতির ফলে খরচ কমে আসলে বাড়ি তৈরির খরচও অনেক কমে আসবে। তাদের আশা, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে এর থেকেও কম টাকায় মানুষের জন্য বাড়ি তৈরি করতে পারবেন তারা।

সূত্র: ফরচুন