সরকারি অর্থে কোনো পণ্য, কার্য ও সেবা ক্রয়ের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতে এবং ক্রয়কার্যে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়েছে এটুআই। এলক্ষ্যে সোমবার আগারগাঁওয়ের জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কমপ্লেক্সের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত ‘সাপ্লাইয়ার রিলেশনশীপ ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম ২০২২’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের সম্মানিত সিনিয়র সচিব জনাব এন এম জিয়াউল আলম পিএএ। এটুআই-এর প্রকল্প পরিচালক (যুগ্মসচিব) ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এটুআই-এর যুগ্ম-প্রকল্প পরিচালক (যুগ্মসচিব) জনাব নাহিদ সুলতানা মল্লিক, এটুআই-এর যুগ্ম-প্রকল্প পরিচালক (যুগ্মসচিব) জনাব মো: ছাইফুল ইসলাম ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সদস্য (যুগ্মসচিব) জনাব শীষ হায়দার চৌধুরী।
উল্লেখ্য, ডিজিটাল বাংলাদেশে বিভিন্ন উদ্ভাবনী কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের জন্য পণ্য, কার্য বা সেবা ক্রয়ের লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট দরপত্রের ভিত্তিতে স্বচ্ছতার সাথে বিভিন্ন ভেন্ডর/সরবরাহকারীদের কাজ করা সুযোগ দিতে এটুআই অবিচল ও অনঢ়। বিভিন্ন সময় দেখা যায়, দরপত্রের কাগজপত্রগুলো নির্ভুল ও চাহিদা অনুযায়ী সাজানো, টেন্ডার বিষয়ে ফার্মগুলোর করণীয় এবং বর্জনীয় সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা এবং পর্যাপ্ত জ্ঞানের অভাবে দরপত্র জমা দেওয়ার সময় প্রয়োজনীয় নথি বা কাগজপত্র দিতে ব্যর্থ হন। এসব কারণে পণ্য, কার্য ও সেবা ক্রয়ে পুনঃদরপত্র আহ্বানের পরিমাণ বেড়ে যায়। যা নিয়োগকারী এবং সরবরাহকারী উভয় প্রতিষ্ঠানের জন্য সময়সাপেক্ষ ও আর্থিক ক্ষতির কারণ হয়ে উঠে। এসকল বিষয় বিবেচনায় সংশ্লিষ্ট সরবরাহকারীদের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি এবং বিদ্যমান নেতিবাচক ও ভুল ধারণা দূরীকরণের লক্ষ্যে প্রথমবারের মতো দেশের সুনামধন্য ৪3টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের নিয়ে এধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে এটুআই। এরই ধারাবাহিকতায় ভবিষ্যতেও বিভিন্ন ধাপে দরপত্রের সাথে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে এধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব জনাব এন এম জিয়াউল আলম পিএএ বলেন, স্বচ্ছতার মাধ্যমে সরকারি কেনাকাটায় জবাবদিহিতা নিশ্চিতে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন ও বিধিমালার সুনির্দিষ্ট নিয়মকানুন মেনেই করা হয়ে থাকে। তারপরও অনেকসময় দেখা যায়, দরপত্র প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠাগুলো প্রকিউরমেন্ট পলিসি, চাহিদা এবং টেন্ডারে উল্লেখিত সময়সীমার মধ্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমাদানের ক্ষেত্রে কিছু ভুল করে থাকেন। সেসব দরপত্র প্রিলিমিনারি ও টেকনিক্যাল মূল্যায়নে বাদ পড়ে যায়। এসব পর্যায়ে যাতে টেন্ডার বাদ না পড়ে এবং কার্যাদেশ পাওয়ার জন্য সরবরাহকারীগণ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই-বাছাই করে দরপত্রে উল্লেখিত বিভিন্ন চাহিদার বিপরীতে সঠিক ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ জমা দিবেন বলে আশা করি। পণ্য, কার্য ও সেবা ক্রয়ের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাস্তবায়ন তথা সরবরাহকারীদের ভোগান্তি হ্রাসে দেশে প্রথমবারের মতো এটুআই আয়োজিত এই মিথস্ক্রিয়া বিশেষ ভূমিকা পালন করবে। ভবিষ্যতে সরকারের অন্যান্য মন্ত্রণালয়ও যেনো তাদের সরবরাহকারীদের নিয়ে এমন আয়োজন করেন সে বিষয়েও এটুআই গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে এটুআই এর প্রকল্প পরিচালক বলেন, সরকারি অফিসের দরপত্র আহ্বান প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের বিষয়ে দেশের নতুন স্টার্টআপগুলোর খুব বেশি জানাশোনা থাকে না। এজন্য দরপত্র জমাদানের ক্ষেত্রে তাদের কিছু ভুল-ত্রুটি থেকে যায়। এছাড়া, সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে এটুআই এর টেন্ডার পাওয়ার জন্য বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত অর্থের চেয়ে অনেকই কম টাকা উদ্ধৃত করেন। যার কারণে মূল্যায়ন শেষে বিভিন্ন সেবা ও পণ্য সরবরাহের কার্যাদেশ পেলেও এর বিপরীতে প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে কাঙ্খিত সেবা পাওয়া নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়। টেন্ডার আহ্বানের বিষয়ে এটুআই সবসময় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা চেষ্টা করলেও প্রয়োজনীয় কার্যক্ষমতার অভাবে পুনঃদরপত্র আহ্বান করতে হয়, যা উভয়পক্ষের জন্যই অনেক ঝক্কি ঝামেলার।
দিনব্যাপী এই আয়োজনে অন্যান্যদের মধ্যে, এটুআই এর প্রকিউরমেন্ট কন্সালটেন্ট মোহাম্মদ সালাহ উদ্দীন, এটুআই এর সাথে পূর্বে কাজ করা ও টেন্ডারে অংশ নেওয়া সরবরাহকারী বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিবৃন্দ এবং এটুআই-এর বিভিন্ন টিমের প্রধানগণ এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।