করোনাভাইরাস মহামারী রুখতে যেখানে সারা বিশ্ব লড়ছে, সেখানে অনেক কোম্পানির জন্য ব্যবসা চালিয়ে যাওয়াই কঠিন হয়ে পড়েছে। একই সাথে কর্মচারীদের সুরক্ষা এবং সুস্থতা নিশ্চিত করাও প্রতিটি সংস্থার পক্ষে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এমন অবস্থায় আলিবাবা গ্রুপের অঙ্গ সংগঠন ও দেশের বৃহত্তম অনলাইন মার্কেটপ্লেস দারাজ বাংলাদেশ তাদের কর্মীদের- শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা এবং আর্থিক নিরাপত্তা প্রদানের উপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সঙ্কটটি মোকাবেলা করছে এবং ব্যবসায়িক কাজ পরিচালনা করছে।
সংস্থাটি ভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসাবে কর্মীদের “বাড়ি থেকে কাজ” বা “ওয়ার্ক ফ্রম হোম” নিশ্চিত করেছে যার মাধ্যমে সকলেই নিরাপদে বাড়ি বসে ভার্চুয়ালি অফিসের কাজ করতে পারবেন। “ওয়ার্ক ফ্রম হোম” বাস্তবায়ন ছাড়াও দারাজ বাংলাদেশ সময় মতো সম্পূর্ণ বেতন, বোনাস এবং অন্যান্য সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে কর্মীদের চাকরির সুরক্ষার আশ্বাস দিয়েছে।
এছাড়াও সংস্থাটি ভার্চুয়াল জব ইন্টারভিউ-এর মাধ্যমে এই কঠিন সময়েও ৬৫০ জনেরও বেশি নতুন কর্মী নিয়োগ দিয়েছে। ভাইরাসের বিস্তার রোধে উল্লেখযোগ্য ভুমিকা পালনের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকদের চাহিদা পূরণের জন্য যথা সাধ্য কাজ করে গেছে এবং বিভিন্ন সামাজিক দায়িত্ব পালন করছে।
দারাজ বাংলাদেশের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সৈয়দ মোস্তাহিদল হক বলেন, “কর্মচারীরা আমাদের বৃহত্তম সম্পদ, এই মুহূর্তে আমাদের প্রিয় কর্মচারী, ডেলিভারি এজেন্ট এবং গ্রাহকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করাই আমাদের প্রধান দায়িত্ব। আমরা যেকোন মুহুর্তে আমাদের গ্রাহকদের চাহিদা পূরণ করতে প্রস্তুত। একই সাথে সংক্রমণের বিস্তার রোধে সহায়তা করা আমাদের সামাজিক কর্তব্য আর তাই আমাদের কর্মস্থলে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কঠোর দিকনির্দেশনা বজায়ে রাখতেও আমরা বদ্ধপরিকর।”
যেখানে কর্পোরেট অফিসের প্রায় ৮৮% কর্মী এবং বেশ কয়েকজন ফিল্ড স্টাফ বাড়ি থেকে কাজ করছেন, দারাজ তাদের ওয়্যাররহাউজ এবং হাবগুলোতে সর্বাধিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা সহ “শুধুমাত্র জরুরী প্রয়োজনীয় কর্মী” কাঠামো পদ্ধতি গ্রহণ করেছে, যেখানে স্বল্প সংখ্যক কর্মীকে সীমিত সময়ে এসে অফিস করতে হয়। এছাড়াও এই সঙ্কটের মাঝে গ্রাহকদের দোরগোড়ায় নিরাপদে ও দ্রুত ডেলিভারি দিতে নিবেদিত ডেক্স ডেলিভারি রাইডারদের পুরস্কৃত করা হচ্ছে যার ফলস্বরূপ সংস্থারটির অপারেশনস-এর কাজ বিকশিত হয়েছে।
কর্মচারীদের ক্রমাগত তৎপর রাখতে সংস্থাটি ৬টি ইন-হাউস ক্রস-ফাংশনাল ট্রেইনিং, ২১ টি ভিন্ন অনলাইন সেশন এবং ১২ টি ফ্রি অনলাইন কোর্স অফার করেছে যার মধ্যে রয়েছে- এক্সেল, ফিটনেস ফর বিগিনারস, ক্রিয়েটিং পারফেক্ট মর্নিং রুটিন, গুগল অ্যানালিটিক্স, হিউম্যান হেলথ- ডায়েট অ্যান্ড নিউট্রিশন, মিনি কোর্স অন টাইম ম্যানেজমেন্ট, ট্রান্সফরমেশনাল লিডারশিপ, ফান্ডামেন্টালস ফর মেন্টাল ওয়েল বিয়িং ইত্যাদি। এছাড়াও কর্মীদের অনুপ্রাণিত ও প্রাণবন্ত রাখতে ১৫টি অনলাইন এনগেজমেন্ট অ্যাক্টিভিটি আয়োজন করেছে যার মধ্যে রয়েছে – ওয়ার্ক ফর্ম হোম সেলফি চ্যালেঞ্জ, ওয়ার্ক ফ্রম হোম টিম পিকচার চ্যালেঞ্জ, গ্র্যাটিচুড বক্স, ডিএফএলপি মিটিং, হেলথ অ্যান্ড ওয়েলনেস কুইজ, অনলাইন বিঙ্গো, ইফতার ফ্রম আফার, পাবজি টুর্নামেন্ট এবং মিম ম্যাডনেস।
উল্লেখ্য, প্রতিষ্ঠানটি কোভিড-১৯ সঙ্কটের মাঝেও বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল: দারাজ ফার্স্ট গেইমস (ডিএফজি) – গ্রাহকদের জন্য একটি অভিনব গেইমিং প্ল্যাটফর্ম; ডিফার্মা- (মেডিসিন ক্যাটাগোরি)- যেখানে পাওয়া যাচ্ছে প্রয়োজনীয় ঔষধ সামগ্রী; ডি-মার্ট ও ডি-ফ্রেশ – যেখানে ক্রেতারা পাচ্ছে সহজেই শাক-সবজি ও গ্রোসারি অর্ডার করার সুবিধা এবং ডি-এক্সপোর্টস – যেই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে এখন বাংলাদেশের স্থানীয় বিক্রেতারা সহজেই আন্তর্জাতিক বাজাররের অ্যাক্সেস পাবে। এছাড়াও দারাজ সফলভাবে দেশজুড়ে আরও ১৩ টি হাব উদ্বোধন করেছে ও সারা বাংলাদেশ জুড়ে ৭৫ টি সংগ্রহের পয়েন্ট পুনরায় চালু করেছে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে দারাজ কিচেনের সাহায্যে খাদ্য সরবরাহ বজায় রেখেছে।