ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার জানান, দুই মাসের মধ্যে দেশে মাল্টিলেয়ার মাদারবোর্ড তৈরি হবে। গত চার মাসে দেশে ছয়টি কারখানা উদ্বোধন করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘আগামী দুই মাসের মধ্যে দেশে মাদারবোর্ড (মাল্টিলেয়ার) তৈরি হবে। গত চার মাসে দেশে ছয়টি কারখানা উদ্বোধন করা হয়েছে। এসবের ধারাবাহিকতায় ডিজিটাল ডিভাইসের বাজারও বাংলাদেশের দখলে থাকবে।’ তিনি বলেন, ‘অনেকে বিশ্বাস করেনি যে, আমরা ল্যাপটপ বানাবো, মোবাইল ফোন বানাবো। এসব তো ক্রস করেই ফেলছি, আমরা এখন মাদারবোর্ড বানানোর যুগে পৌঁছে গেছি।’ ডিজিটাল ডিভাইসের অপরিহার্য অনুষঙ্গ মাদারবোর্ড। বর্তমানে দেশে টু লেয়ারের মাদারবোর্ড তৈরি হলেও শিগগিরই মাল্টিলেয়ারের মাদারবোর্ডও তৈরি করা হবে। একাধিক প্রতিষ্ঠান দেশেই মাদারবোর্ড তৈরি করবে। জানা গেছে, এরই মধ্যে ওয়ালটন মাদারবোর্ড উৎপাদন শুরু করেছে। এজন্য ওয়ালটনের রয়েছে সারফেস মাউন্টিং টেকনোলজি, যার মাধ্যমে প্রিন্টেড সার্কিট বোর্ড বা পিসিবি বোর্ডের ওপর নিখুঁতভাবে সূক্ষ্ম-সূক্ষ্ম পিন বসিয়ে উচ্চমান ক্ষমতা সম্পন্ন মাদারবোর্ড তৈরি করা হবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে ডিজিটাল ডিভাইসের বাজার দখল করতে মাদারবোর্ড তৈরির কোনও বিকল্প নেই। বিদেশি প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে এবং দেশের প্রযুক্তি বাজার নিজেদের দখলে রাখতে হলে মাদারবোর্ড উৎপাদনে যেতে হবে। মাদারবোর্ড দেশে তৈরি করা গেলে সংশ্লিষ্ট ডিজিটাল ডিভাইসের দামও কমবে। মোস্তাফা জব্বার জানান, শিগগিরই মাদারবোর্ড বানানোর জন্য যেসব উপাদান রয়েছে সেগুলোর জন্য এক শতাংশ শুল্কর স্ট্যাটিউটরি রেগুলেটরি অর্ডার জারি হয়ে যাবে। জানা গেছে, সরকার দেশের পাঁচ কোটি শিক্ষার্থীর হাতে ল্যাপটপ তুলে দিতে চায়। সরকার স্থানীয় প্রযুক্তি পণ্য নির্মাতাদের কাছ থেকে ল্যাপটপ নিতে আগ্রহী। অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের দেওয়ার জন্য দোয়েল ল্যাপটপ প্রকল্প থেকেও ল্যাপটপ নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এই বিশাল কর্মযজ্ঞ সামাল দিতে দেশে মাদারবোর্ড তৈরি করলে যেমন সাশ্রয়ী হবে, তেমনি একটি হার্ডওয়্যার শিল্পও দাঁড়িয়ে যাবে। দেশের ডিজিটাল ডিভাইসের ৮০ শতাংশ চাহিদা বাংলাদেশে তৈরি ডিভাইসেই মেটাতে চায় সরকার। আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের কয়েকটি ল্যাপটপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে কারখানা নির্মাণ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে সূত্রে প্রকাশ। ওই প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেশে কারখানা স্থাপন, প্রযুক্তি পণ্য সংযোজন, বিপণন, রফতানিসহ আরও কি সুবিধা দেওয়া যায় সে বিষয়ে প্রস্তাবনা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। তালিকায় রয়েছে স্যামসাং, হুয়াওয়ে, ডেল, এইচপি ও লেনোভোর মতো পাঁচটি কোম্পানি। চীনের প্রযুক্তিপণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে এরই মধ্যে কারখানা স্থাপনের জন্য গাজীপুরের কালিয়াকৈরের বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্কে ৭ একর জায়গা বরাদ্দ পেয়েছে। অন্যদিকে দেশীয় উদ্যোক্তাদের সহযোগিতায় নরসিংদীর শিবপুরে স্থাপন করা হয়েছে স্যামসাংয়ের কারখানা। এই কারখানায় বর্তমানে ফোর-জি স্মার্টফোন তৈরি হলেও ভবিষ্যতে ল্যাপটপ তৈরি করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ