তাঁর বয়স ৮৬ বছর। কাঁধে ব্যাগ, ব্যাগের ভেতর নিজের লেখা বই। ২০ বছর ধরে অমর একুশে বইমেলায় হেঁটে হেঁটে সেই বই ফেরি করছেন তিনি। ব্যক্তিগত জীবন বর্ণিল হলেও পোশাক আর চলাফেরায় সাধারণ মানুষটি হচ্ছেন ড. ফয়জুর রহমান আল সিদ্দিক।
প্রবীণ বিজ্ঞানী ফয়জুর রহমানের লেখা বইয়ের নাম “বাঙালির জয়, বাঙালির ব্যর্থতা।” বইটি ছাপানোর যে খরচ, তিন শুধু সেই টাকা নিয়ে বইটি বিক্রি করছিলেন। হেঁটে হেঁটে বই ফেরি করার বিষয়ে ড. ফয়জুর রহমান আল সিদ্দিক বলেন, ২০ বছর আগে প্রথম প্রকাশের পর বইটি নিয়ে আর কেউ আগ্রহ প্রকাশ করেনি। কেউ প্রকাশ না করলেও ফটোকপি করে বইটি নিজেই পাঠকের হাতে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছি।
এ নিয়ে গত কয়েকদিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রচার হয়েছে। পরে বইটি প্রকাশের বিষয়ে সহযোগিতা করার আগ্রহ প্রকাশ করেন “নগদ”-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর আহমেদ মিশুক। গতকাল সোমবার রাতে বনানীতে ড. ফয়জুর রহমানের সাথে এ বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করে বইটি প্রকাশের অনুমতি নেন তিনি। পরে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান বাংলা প্রকাশের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন তানভীর আহমেদ।
বইটি প্রকাশের বিষয়ে বাংলা প্রকাশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম শরীফুল আলম বলেন, বিভিন্ন মাধ্যমে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে পারি। বইটি দেখার পর মনে হলো এটি আরও বড় পরিসরে পাঠকের কাছে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব। আর এই উদ্যোগ নিয়েছেন “নগদ”-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর আহমেদ মিশুক। আশা করছি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে নতুন করে বইটি প্রকাশ করতে পারব। “বাঙালির জয়, বাঙালির ব্যর্থতা” বইটিতে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলার চেষ্টা করেছেন ড. ফয়জুর রহমান। “বাঙালির দাস মনেবৃত্তি”, “রোগের নাম পাকিফিলিয়া”, “আমাদের সমাজ ও সংস্কৃতিতে অজ্ঞতার প্রকোপ”; এমন ১৬টি অনুচ্ছেদে বইটি বিন্যস্ত করেছেন তিনি।
১৯৩৪ সালে ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার চরমধুচারিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ড. ফয়জুর রহমান আল সিদ্দিক। তিনি ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় থেকে রসায়নে ¯œাতক সম্পন্ন করেন। এরপর থিসিস গ্রæপে এমএসসি ডিগ্রি লাভ করে পোস্ট এমএসসি গবেষণায় অংশগ্রহণ করেন। ইংল্যান্ডের ক্যামব্রিজ বিশ^দ্যিালয় থেকে পিইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। পরে ইরানের তেহরান নিউক্লিয় বিজ্ঞান ইন্সটিটিউট থেকে পোস্ট এমএসসি গবেষণা করে তিনি সুইজারল্যান্ডের ফেডারেল নিউক্লিয় ইন্সটিটিউট থেকে পোস্ট ডক্টোরাল সম্পন্ন করেন।