নারী ও শিশু সহিংসতার বিরুদ্ধে ১৬ দিনব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে বেসরকারি সংস্থা তরঙ্গের সাথে যৌথভাবে ‘আন্তর্জাতিক নারী অধিকার প্রতিরক্ষা দিবস’ শীর্ষক কর্মশালা আয়োজন করেছে ব্রিটিশ কাউন্সিল। তরঙ্গের কার্যালয়ে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
কমনওয়েলথ বৃত্তির অন্যতম বিষয় হলো কমনওয়েলথ অ্যালামনাইদের সমাজ ও গোষ্ঠীর সাথে সম্পৃক্ত হতে সহায়তা করা যাতে করে তারা নিজেদের জ্ঞান ও দক্ষতার ব্যবহারের মাধ্যমে দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে। যুক্তরাজ্যের কমনওয়েলথ স্কলারশিপ কমিশনের (সিএসসি) পক্ষে ব্রিটিশ কাউন্সিল এ কর্মশালার আয়োজন করে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) পাঁচ, যেখানে লৈঙ্গিক সমতার ওপরে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে তার অংশ হিসেবে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয় যেখানে লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার শিকার প্রায় দেড়শ’ নারী ও কিশোরী অংশগ্রহণ করে। কর্মশালায় কমনওয়েলথ অ্যালামনাইদের একটি অংশ দক্ষতার উন্নয়ন এবং নারী ও কিশোরীদের বিরুদ্ধে হয়রানি নিয়ে কয়েকটি সেশন পরিচালনা করেন এবং নারীদের যেসব প্রতিকূলতা সহ্য করতে হয় তা নিয়ে আলোচনা করেন।
সহিংসতা মুক্ত পরিবার, সমাজ ও শহর এ প্রতিপাদ্যের ওপর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। যেখানে ত্রিশজন কিশোরী চমৎকার সব স্কেচ আঁকেন। মধ্যাহ্নভোজের পর তরঙ্গের প্রধান নির্বাহী কোহিনুর ইয়াসমিনের সাথে কমনওয়েলথ অ্যালামনাইয়েরা স্বেচ্ছাসেবী অন্যান্য কমনওয়েলথ অ্যালামনাইদের ধন্যবাদ জ্ঞাপনের মাধ্যমে কর্মশালার উদ্বোধন করেন। এ সময় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীরা কর্মশালা থেকে প্রাপ্ত জ্ঞানের মাধ্যমে উপকৃত হবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন কোহিনুর ইয়াসমিন। সাউথ এশিয়া কমনওয়েলথ স্কলারশিপ অ্যান্ড ফেলোশিপ প্ল্যানের হেড অব হায়ার এডুকেশন অ্যান্ড রিজিওনাল ম্যানেজার তৌহিদুর রহমান বিভিন্ন স্তরে অ্যালামনাইরা সমাজ ও গোষ্ঠীর সাথে সম্পৃক্ততায় বাংলাদেশে কাজ করছেন তা নিয়ে আলোচনা করেন।
জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) থেকে সৌদিয়া আনোয়ার এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) থেকে ফারহানা শারমিন, এ দু’জন অ্যালামনাই ১শ’ ত্রিশ জন কর্মজীবী মা ও কিশোরীদের নিয়ে সেশন পরিচালনা করেন। অ্যালামনাই সেশনের আগে ‘হিয়ার মি টু’ শীর্ষক বক্তব্য রাখেন তৌহিদুর রহমান। বক্তব্যে তিনি আলোচনা করেন কীভাবে নারী হয়রানি একটি সর্বব্যাপী বিষয় এবং এমনকি উচ্চপদে কর্মরত নারীরাও কোনো এক সময়ে এর শিকার হয়েছেন সে বিষয়ে। তার বক্তব্যের পরে লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার শিকার নারী ও কিশোরীদের নিয়ে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হয় এবং এরপর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ও নৃত্য পরিবেশনকারীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
তৌহিদুর রহমান বলেন, ‘নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা এখন বর্তমান বিশ্বে সর্বব্যাপী, চলমান এবং সুস্পষ্ট মানবাধিকার লঙ্ঘন। তারা নির্বাক এবং নীরবে সব সহ্য করে যাচ্ছে। আমি তাদের সামনে এগিয়ে আসতে ও এ বিষয় নিয়ে কথা বলতে অনুরোধ জানাচ্ছি যাতে গোটা বিশ্ব হয়রানিকারী ওইসব অপরাধীদের নিকৃষ্টতা সম্পর্কে জানতে পারে।
সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি শেষ হয়। বক্তব্যে তরঙ্গতে কর্মরত নারীদের সাহস এবং কমনওয়েলথ অ্যালামনাইদের কাজের প্রশংসা করা হ্য় যারা অনুষ্ঠানে এসব নারীদের সাথে তাদের জ্ঞানের আদান-প্রদান করেছেন। সকল অংশগ্রহণকারীরা ক্যানভাসে ‘নারী ও শিশুদের বিরুদ্ধে কোনো সহিংসতা নয়’ শীর্ষক হ্যান্ডপ্রিন্ট দেন।