প্রযুক্তি বিশ্ব

নিরিবিলি সংসার করতে রাজনীতি ছেড়ে দিলেন ট্রাম্পের মেয়ে ইভাঙ্কা, কিন্ত কেন

By Sajia Afrin

December 24, 2024

রাজনীতিতে আর ফিরবেন না ট্রাম্পের মেয়ে ইভাঙ্কা, কাজ করবেন আড়ালে থেকে। করবেন ঘরকন্না। স্বামী জ্যারেড কুশনারকে নিয়ে সুখে থাকতে চান। বাপের রাজনৈতিক ঝামেলায় যাবেন না। কিন্তু কেন? আছে তার যুক্তি। কারন এর আগে বড় ধাক্কা খেয়েছেন।

মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন জানায়, ইভাঙ্কা ট্রাম্প রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়িয়ে ব্যক্তিগত জীবনের পথে।

যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বড় মেয়ে ইভাঙ্কা ট্রাম্প তাঁর পুরো প্রাপ্তবয়স্ক জীবনে বাবার বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অংশ নিয়েছেন। যখন ট্রাম্প আবাসন খাতের ব্যবসায় মগ্ন ছিলেন, ইভাঙ্কা তাঁর হোটেলগুলোর নকশা তৈরির কাজে ব্যস্ত ছিলেন। টেলিভিশনে ট্রাম্পের জনপ্রিয় শোতে তিনি বোর্ডরুমের সদস্য ছিলেন। এরপর ট্রাম্প যখন প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচন করেন, তখন তাঁর প্রচারণায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ২০১৭ সালে ট্রাম্প প্রথমবার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর ইভাঙ্কা হোয়াইট হাউসের ওয়েস্ট উইংয়ে উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেন।

তবে ২০২১ সালের জানুয়ারিতে ট্রাম্পের প্রেসিডেন্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ইভাঙ্কা ওয়াশিংটন ছেড়ে ফ্লোরিডার মিয়ামিতে স্থায়ী হন। ২৩ বছর বয়স থেকে ওয়াশিংটনে থাকা ইভাঙ্কা এবার শহরটি ছাড়ার পাশাপাশি রাজনীতি থেকেও দূরে সরে দাঁড়ান। তিনি স্পষ্ট করে জানান, রাজনীতিতে ফেরার কোনো পরিকল্পনা তাঁর নেই।

২০২২ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্প তৃতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিলে ইভাঙ্কা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, তিনি তাঁর পরিবারের জন্য একটি ব্যক্তিগত জীবন গড়ে তুলতে চান এবং রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার ইচ্ছা নেই। ২০২৪ সালে ট্রাম্প পুনরায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেও ইভাঙ্কা নিজের অবস্থানে অটল। তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো জানিয়েছে, ইভাঙ্কা ও তাঁর স্বামী জ্যারেড কুশনার মিয়ামিতে ব্যক্তিগত জীবন কাটাচ্ছেন এবং জনসমক্ষে খুব একটা দেখা দিচ্ছেন না।

ইভাঙ্কার রাজনীতি থেকে দূরে সরে যাওয়ার পেছনে বিভিন্ন কারণ রয়েছে। হোয়াইট হাউসে কাজ করার সময় তিনি নানা সমালোচনার মুখে পড়েন। কিছু সিদ্ধান্তে প্রভাব রাখতে না পারায় এবং নৈতিকতাবিষয়ক প্রশ্নের মুখোমুখি হয়ে তাঁকে নিজের নামে প্রতিষ্ঠিত কাপড়ের ব্র্যান্ড বন্ধ করতে হয়। তবে রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানোর পর তিনি নিজের জীবনের নতুন পথ খুঁজে নিচ্ছেন।

সম্প্রতি এক পডকাস্টে ইভাঙ্কা বলেন, “রাজনীতি বেশ অন্ধকারাচ্ছন্ন একটি জগৎ। সেখানে অনেক নেতিবাচক বিষয় রয়েছে, যা আমার জীবনের ইতিবাচক দিকগুলোর সঙ্গে মানানসই নয়।” তিনি আরও বলেন, রাজনীতি থেকে দূরে থাকা তাঁর পরিবার ও ব্যক্তিগত জীবনের জন্য ভালো সিদ্ধান্ত।

তবে ইভাঙ্কা পুরোপুরি রাজনীতি থেকে বিচ্ছিন্ন নন। তিনি নিয়মিত তাঁর বাবার সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন এবং বিভিন্ন বিষয়ে অনানুষ্ঠানিকভাবে উপদেশ দেন। যদিও এসব কাজ জনসমক্ষে আসে না।

এদিকে, ইভাঙ্কার স্বামী জ্যারেড কুশনারও ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্ত হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেননি। তবে মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ে পরামর্শ দেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।

রাজনীতি থেকে দূরে সরে গেলেও ট্রাম্প পরিবারের সদস্য হিসেবে ইভাঙ্কা এখনো আলোচনার কেন্দ্রে। বাবার প্রতি তাঁর আস্থা ও পরামর্শদানের ভূমিকা আড়ালেই থেকে যাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।