কিভাবে আপনার ডিজিটাল সম্পদ পাসওয়ার্ডটি নিরাপদ রাখবেন? বর্তমান সময়ে পাসওয়ার্ড হ্যাক করা খুব সহজ একটি ব্যাপার। তবে কয়েকটি কৌশল মেনে চললে হ্যাকিংয়ের ঝুঁকি কিছুটা হলেও কমানো সম্ভব।
কম্পিউটার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, পাসওয়ার্ড যত দীর্ঘ হবে, ব্যবহারকারীর মনে রাখা তত সহজ হবে এবং হ্যাকারদের তা অনুমান করা তত কঠিন হবে। পাসওয়ার্ড হিসেবে হয়তো কেউ বসান মোবাইল নম্বর আবার কেউ বা বসান জন্মদিনের সংখ্যা বা প্রিয় জনের নাম। কেউ ব্যবহার করেন ‘Password’ শব্দটিকেই আবার কেউ লেখেন ১২৩৪৫৬ বা I Love u, I hate u বিভিন্ন শব্দ।.পাসওয়ার্ড দিতে হবে বলেই যে কেবল একটি মাত্র শব্দ বা কয়েকটি সহজ সংখ্যা বসিয়েই দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি মিলবে ভাবছেন, তাহলে কিন্তু ভুল করবেন। সম্ভব হলে কয়েকটি শব্দ ব্যবহার করে একটি বাক্যাংশ বা একটি পুরো বাক্যকেই পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করুন। সম্প্রতি প্রযুক্তি বিষয়ক ওয়েবসাইট ‘পিসি’ ম্যাগাজিনে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সহজে অনুমান করা যায় এমন পাসওয়ার্ড ব্যবহার করলে হ্যাকাররাও অনায়াসেই এ পাসওয়ার্ডের নিরাপত্তা ভেঙে ফেলতে পারে। কষ্ট করে হলেও জটিল পাসওয়ার্ড মুখস্থ রাখতে পারলে অ্যাকাউন্ট হ্যাক হওয়ার আশঙ্কা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
আপনার ডিজিটাল অ্যাকাউন্টগুলো নিরাপদ রাখতে কী কী করতে হবে সেরকম কিছু টিপস জেনে নিন:
টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন অ্যাকাউন্ট নিরাপদ রাখতে চাইলে টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন ব্যবহার করা যেতে পারে। এই ফিচারের আওতায় প্রতিবার লগইনের সময় মোবাইলে কোড নম্বর পাঠানো হয়ে থাকে।
পাসওয়ার্ড সেইভ নিজের কম্পিউটার বাদে অন্য কোনো কম্পিউটারে ‘রিমেম্বার মাই পাসওয়ার্ড’ ফিচারটি ব্যবহার করা উচিত নয়। সাইবার ক্যাফে বা লাইব্রেরির কম্পিউটারে কোনো অ্যাকাউন্ট খুললে সেটির পাসওয়ার্ড নোট প্যাডে লিখে রাখাই ভালো
সিকিউরিটি কোয়েশ্চেন সিকিউরিটি কোয়েশ্চেন হিসেবে আপনি কোথায় বড় হয়েছেন, জন্মতারিখ বা আপনার মায়ের নাম কি এসব প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। কারণ এই প্রশ্নগুলোর উত্তর আপনার সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টগুলো থেকেও পাওয়া সম্ভব।
পাসওয়ার্ড বদল অন্য কেউ আপনার পাসওয়ার্ড জেনে গেলে দ্রুতই পাসওয়ার্ড বদল করা প্রয়োজন। এতে হ্যাকিংয়ের হাত থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব।
ইউএসবি কিগুগল, ফেইসবুক ও ড্রপবক্সের নিরাপত্তার জন্য ইউএসবি কি ব্যবহার করা যায়। এই ইউএসবি কি ছাড়া কোনো মতেই অ্যাকাউন্টে ঢোকা যাবে না। তাই ব্যবহারকারীকে সর্বদাই ডিভাইসটি বয়ে নিয়ে বেড়াতে হবে।
রাউটারের পাসওয়ার্ড অনেক রাউটারেই ডিফল্ট লগইন দেওয়া থাকে। সেখানে লগইন নেম থাকে অ্যাডমিন আর পাসওয়ার্ডের জায়গায় লেখা থাকে পাসওয়ার্ড। তাই রাউটারের পাসওয়ার্ডটিও বদল করা জরুরি।
ম্যালওয়্যার পাসওয়ার্ড যতোই শক্তিশালী হোক না কেনো তা ম্যালওয়্যার থেকে বাঁচতে পারে না। তাই অ্যান্টি-ম্যালওয়্যার সফটওয়্যার ব্যবহার করাই বুদ্ধিমানের কাজ।
পাসওয়ার্ড ম্যানেজার পাসওয়ার্ড ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যারে একসঙ্গে অনেকগুলো পাসওয়ার্ড জমা করে রাখা যাবে। লাস্টপাস, ড্যাশলেন, রোবোফার্ম, কিপাস পাসওয়ার্ড ও স্টিকি পাসওয়ার্ড সফটওয়্যারগুলো পাসওয়ার্ড ম্যানেজার হিসেবে কাজ করে থাকে।
কমন ওয়ার্ড প্রচলিত কিছু শব্দ যেমন কোয়ার্টি, নিজের নাম বা প্রিয়জনের নাম পাওয়ার্ড হিসেবে না দেওয়াই ভালো।নোট প্যাডসরাসরি পাসওয়ার্ড না লিখে এমন কিছু লেখা উচিত যা পাসওয়ার্ডটি মনে রাখতে সহায়তা করবে। এতে নোটপ্যাডটি অন্য কারও কাছে গেলেও পাসওয়ার্ডটি নিরাপদই থাকবে।
পাসওয়ার্ড বিষয়ক বিশেষ কিছু টিপস:
- সব ওয়েবসাইটে একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করবেন না।
- দীর্ঘ বাক্যে জটিল পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন।
- পাসওয়ার্ড নিয়মিত হালনাগাদ করুন।
- কম্পিউটার, সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট ও আর্থিক লেনদেনের সময় পাসওয়ার্ড দেওয়ার বিষয়ে সতর্ক থাকুন।
- অ্যাকাউন্ট লগআউট ঠিকমতো হয়েছে কি না,পরীক্ষা করুন।
- সাইবার-ক্যাফেতে পাসওয়ার্ড দেওয়ার সময় সতর্ক থাকুন।