সবার মুখে হাসি, সবার চোখে বিস্ময়। বৃষ্টিমুখর এক সন্ধ্যায় হাজির একদল তরুণ, যুবক। রাজধানীর সুপার স্টার হোটেলের ভিআইপি রুমটি যেন পাখির কিচিরমিচির। আড্ডা কাকে বলে? তথ্য প্রযুক্তি সেক্টরে কি অবস্থা? কার কি সমস্যা কি করা উচিত। হাই-হ্যালো,হাসি মাখামাখি কি নেই আড্ডায়? আড্ডার কি কোনো উদ্দেশ্য থাকে? হ্যা, সোশাল কানেকশন। পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ। দেখা সাক্ষাত। খোজখবর। নেটওয়ার্কিং। ডিজিটাল যুগে যেন অ্যানালগ মুখোমুখি আলাপ। ফেসবুকের বুকে যা শুধু যোগাযোগ মুখোমুখিতে তা হাতে হাত চোখে চোখ রাখা। পরিচয় আর বন্ধুত্ব বাড়ানো। রোজার সময় ইফতারের এ আয়োজনকে কেন্দ্র করে পরস্পরের মধ্যে সুহৃদ্যতা বাড়ানোর এক দারুণ প্রয়াস। এ আয়োজনের কৃতিত্ব গ্রো উইথ নাহিদের উদ্যোক্তা নাহিদ হাসানের।
নাহিদ হাসান, পেশাগত ভাবে তাঁর পরিচয় একজন ইন্টারনেট মার্কেটার এবং উদ্যোক্তা হিসেবে। তিনি বলেন, স্বভাব সুলভ ভাবে আমি তাই করি যা করে আমি আনন্দ পাই এবং আমি বিশ্বাস করি একজন ভাল মানুষ হতে পারাটাই হচ্ছে পৃথিবীর সবচাইতে বড় সফলতা। আমি কিছুটা সেকেলে, তাই এই যান্ত্রিক জীবনেও আমি আমার পরিবার, বন্ধু, আত্নীয় স্বজন এবং কাছের মানুষদের নিয়ে একসাথে মিলে মিশে থাকার মধ্যেই আনন্দ খুজে পাই। বিজকোপ নামের একটি Bizcope (পূর্বে Outsource BD) অনলাইন মার্কেটিং প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তার সাথে এর প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। আরেকটি পরিচয় প্রকাশ্যে-গোপন করেন তিনি। সে পরিচয় হচ্ছে-পেওনিয়ার বাংলাদেশের বিজনেস ডেভেলপমেন্ট বিভাগের প্রধান।
ইফতার আয়োজনে একে একে হাজির হন আপওয়ার্কের বিপণন বিভাগের কর্মকর্তা সাইদুর মামুন খান, এমরাজিনা টেকনোলজির এমরাজিনা ইসলাম, মার্কেটিং গুরু হিসেবে পরিচিত আসিফ আনোয়ার, অ্যানিমেশন খাতের উদ্যেক্তা শোয়েব মোহাম্মদ, বিআইটিএমের প্রধান কোঅর্ডিনেটর সাব্বির আহমেদসহ তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ৪০ মুখ। গিয়ারলঞ্চের কান্ট্রি ম্যানেজার এস এম বেলাল উদ্দিনের কথা তো না বললেই না। আড্ডা জমাতে, পরামর্শ দিতে আর উৎসাহ দিতে তার মতো কেউ কি আর আছে? সাধে কি আর আড্ডার মধ্যমনি বলা চলে তাঁকে! তিনি যেন অনেক ফুলের মাঝে এক টুকরো গোলাপ! আড্ডার মধ্যে একগ্রুপ লোকের সঙ্গে নিভৃতে কি যেন আলাপে মশগুল দেখা গেল ইউওয়াই ল্যাবের সিওও শাহাদাত হোসেনকে। কাকে কি বলছিলেন তিনি? শুধাতেই সবাই হো হো! আড্ডাটা নিশ্চয়ই ভিন্ন ধাঁচের ছিল। তবে, একটু পর বেশ সিরিয়াস। সবাইকে কি যেন বলে উঠলেন। ব্যস ছোট ভিড়টা বড় হয়েই চলল। ইফতারের পর বৃষ্টি এসে আড্ডা যেন শেষ হতে চায় না। গ্রুপ ছবি না হলে কি আর চলে? সেও হল। কিন্তু আড্ডার রেশ যেন শেষ হল না। ঢাকা শহরের প্রাণচঞ্চল রাস্তায় বৃষ্টেভেজা শীতল বাতাসের মতোই সবার হৃদয়ে তার রেণু ছুয়ে গেল। হয়তো সবাই একদিন গেয়ে উঠবে-কফি হাউসের সে আড্ডাটা আর নেই…। মনে পড়বে, একদিন নিখাদ আড্ডা জমেছিল সুপার স্টারে।