ফেসবুক খুব কড়া নিয়মকানুন করতে যাচ্ছে। ভুয়া ভিডিও আর ছবি দিলে কঠোর ব্যবস্থা নেবে। ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধের পাশাপাশি আরও কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারে। ফেসবুকে ভুয়া খবর ছড়ানো থামছেই না। বাড়ছে ভুয়া ও বিকৃত ছবি-ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার হার। এ নিয়ে অনেক দিন ধরেই সমালোচনার শিকার হচ্ছে ফেসবুক। ভুয়া খবর ছড়ানো ঠেকাতে ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি শুক্রবার ফেসবুক কর্তৃপক্ষ ভুয়া ছবি ও ভিডিও ঠেকানোর উদ্যোগের কথা জানিয়েছে। হোক্স বা প্রতারণামূলক খবর, ভুয়া ছবি ও ভিডিও চিহ্নিত করতে ‘ফ্যাক্ট-চেকিং’ নামের বিশেষ ব্যবস্থা নিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, ফেসবুকে বিকৃত ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি আরেকটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত বুধবার থেকে ফ্রান্সে ‘ফ্যাক্ট-চেকিং’ সুবিধাটি চালু করেছে ফেসবুক। এতে ফেসবুককে সাহায্য করছে বার্তা সংস্থা এএফপি। ফেসবুকের পণ্য ব্যবস্থাপক টেসা লায়ন্স বলেন, ফ্যাক্ট-চেকিং সুবিধাটি শিগগিরই অন্য দেশে চালু হবে। তবে কোনো মানদণ্ড ধরে ফেসবুক ও এএফপি ছবি ও ভিডিওকে পর্যালোচনা করবে, তা স্পষ্ট করা হয়নি। ছবি বা ভিডিও কতটা সম্পাদনা করা হলে তাকে ভুয়া বলা হবে, সেটিও এখনো জানানো হয়নি। টেসা জানান, নির্বাচনের সময় ভুয়া খবর ছড়িয়ে পড়া ঠেকানোর প্রচেষ্টা হিসেবে এ প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। এএফপির পক্ষ থেকে এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। ফেসবুক আরও কয়েকটি উপায়ে ভুয়া খবর ছড়ানো ঠেকানো নিয়ে কাজ করছে। থার্ড পার্টির তৈরি ফ্যাক্ট-চেকারের পাশাপাশি নিউজফিডে এ ধরনের খবর কমিয়ে দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। গত জানুয়ারি মাসে ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ বলেন, ফেসবুক বিশ্বাসযোগ্য খবর প্রকাশকদের প্রাধান্য দেবে। ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে মতামত নিয়ে মানসম্মত খবর প্রকাশক ঠিক করা হবে। ভুয়া খবর দ্রুত ছড়ানো ঠেকাতে ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে প্রতিবেদন নেওয়ার পাশাপাশি সক্রিয় কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন সামিদ চক্রবর্তী নামের ফেসবুকের আরেক পণ্য ব্যবস্থাপক। ফেসবুকের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা অ্যালেক্স স্ট্যামোস বলেছেন, শুধু ভুয়া খবর ছড়ানো নয়, ফেসবুকে অন্যান্য প্রতারণা ঠেকাতেও সচেতন আছে কর্তৃপক্ষ। ভুয়া দর্শক, ভুয়া বর্ণনা, এমনকি প্রতারণামূলক শিরোনাম, ভাষা ব্যবহার কমাতে চায় ফেসবুক। ফেসবুক ব্যবহারকারীদের তথ্য নিয়ে নির্বাচনে প্রভাব খাটানোর অভিযোগ রয়েছে ফেসবুকের বিরুদ্ধে। যুক্তরাজ্যের নির্বাচনী পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা ফেসবুকের তথ্য মার্কিন নির্বাচনে কাজে লাগিয়েছে বলে সমালোচনা হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, প্রায় পাঁচ কোটি ফেসবুক ব্যবহারকারীর তথ্য হাতিয়ে নিয়েছে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা। এ ঘটনায় পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রকাশ করে ক্ষমা চেয়েছে ফেসবুক। জাকারবার্গ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ফেসবুক ব্যবহারকারীদের তথ্য সুরক্ষায় শক্তিশালী পদক্ষেপ নেবেন তিনি।