TechJano

বন্ধককৃত জমি একাধিকবার বন্ধক কিংবা বিক্রয় করে জালিয়ায়তির সুযোগ থাকছে না : ভূমিমন্ত্রী

ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন বন্ধককৃত (মর্টগেজড) জমি একাধিকবার বন্ধক, ক্রয়-বিক্রয় বা নামজারি সংশ্লিষ্ট জালিয়াতি রোধে এই মাসেই চালু করা হচ্ছে মর্টগেজ ডাটা ব্যাংক। এই সংক্রান্ত জালিয়াতি এবং প্রতারণার সুযোগ আর থাকছেনা।

আজ রবিবার সকালে সচিবালয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে ভূমি মন্ত্রণালয় ও ভূমি সম্পর্কিত বিভাগীয় কমিশনার সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ভূমিমন্ত্রী এ কথা জানান। এসময় ভূমি সচিব মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান পিএএ সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। 

ভূমিমন্ত্রী বলেন, মর্টগেজ ডাটা ব্যাংকের মাধ্যমে ব্যাংক, সাব-রেজিস্ট্রি অফিস, ভূমি অফিস বা নাগরিকগণকে জমির বন্ধক সংক্রান্ত তথ্য অনলাইনে যাচাই করার সুযোগ দেয়া হবে যাতে বন্ধককৃত জমি নতুন করে বন্ধক, ক্রয়-বিক্রয় বা নামজারি করার সুযোগ না থাকে। পাশাপাশি, অর্থ ঋণ আদালতের রায়ের ভিত্তিতে নামজারি সহজীকরণে বন্ধকি ডাটাবেজকে ব্যবহার করা যাবে, এতে ব্যাংকের ঋণ ব্যবস্থাপনার জন্য তথ্য সংগ্রহ সহজতর হবে এবং ঝুঁকি হ্রাস পাবে। ফলে দেশের অর্থনীতিতে সামগ্রিকভাবে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে ভূমির এই নতুন সিস্টেমের কারণে। 

ভূমি কর্মকর্তাদের নাগরিক সেবার মানসিকতা নিয়ে কাজ করারা জন্য উদ্বুদ্ধ করার ব্যাপারে ভূমিমন্ত্রী বিভাগীয় কমিশনারদের তাগিদ দেন। ভালো কাজের স্বীকৃতিসরূপ পুরস্কার প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী আরও বলেন, দুর্নীতিবাজ অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তদন্তপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক যতাযত বিচারের আওতায় আনতে হবে। 

এই সময় ভূমি সচিব জানান, চলতি অর্থ বছরে প্রথম কোয়ার্টারে অনলাইনে প্রায় ১৬৮ কোটি টাকা ভূমি উন্নয়ন কর আদায় হয়েছে। বর্তমানে প্রায় প্রতি মাসে ২ লক্ষাধিক নামজারি আবেদন অনলাইনে নিষ্পত্তি করা হচ্ছে। আবেদনের ভিত্তিতে, এই পর্যন্ত প্রায় ৬৮ হাজার খতিয়ান এবং ৬০ হাজার জমির ম্যাপ ডাকবিভাগের মাধ্যমে সারাদেশে নাগরিকের ঘরে পাঠানো হয়েছে। 

ভূমিসেবা ডিজটালাইজেশন, আন্ত:জেলা/উপজেলা সীমানা বিরোধ, ভূমি অফিস সংস্কার, অবৈধ দখল উচ্ছেদ, জলমহাল ও বালুমহালের ইজারা কার্যক্রম সহ বিভিন্ন বিষয়ে মতামত প্রকাশ করেন সভায় উপস্থিত বিভাগীয় কমিশনারবৃন্দ। 

সভায় উপস্থিত বিভাগীয় কমিশনারগণ হচ্ছেন – মোঃ খলিলুর রহমান (ঢাকা), মোঃ আশরাফ উদ্দিন  (চট্টগ্রাম), জি এস এম জাফরউল্লাহ্ এনডিসি (রাজশাহী), মোঃ জিল্লুর রহমান চৌধুরী (খুলনা), মো: আমিন উল আহসান (বরিশাল), ড. মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেন (সিলেট), মো: সাবিরুল ইসলাম (রংপুর), মোঃ শফিকুর রেজা বিশ্বাস (ময়মনসিংহ)। এছাড়া মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ বিভাগীয় কমিশনার সমন্বয় সভায় উপস্থিত ছিলেন।

এক পরিবার থেকে একাধিক ব্যক্তি, সরকারি কর্মকর্তাদের স্বামী/স্ত্রী চিংড়ি মহাল ইজারা নিতে পারবেন না

এরপর আজ দুপুরে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে জাতীয় চিংড়িমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় সভাপতিত্ব করেন ভূমি মন্ত্রী। 

এই সময়, একই পরিবার থেকে একাধিক সদস্য, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারি ও তাদের স্বামী/স্ত্রী এবং চিংড়িমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যরা চিংড়ি মহাল যেন ইজারা নিতে না পারেন সেই ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশ দেন ভূমি মন্ত্রী। কমিটির সদস্যগণের সম্মতিক্রমে এই নির্দেশ প্রদান করেন ভূমিমন্ত্রী। 

সভায় এই সময় উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য জাফর আলম। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন ভূমি সচিব মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান পিএএ। ভূমি মন্ত্রণালয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়, কক্সবাজার ও সাতক্ষীরা জেলার মাঠ প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এবং চিংড়ী চাষ ও ব্যবসায় যুক্ত ব্যক্তিবর্গ সহ বিভিন্ন অংশীজন অন্যান্যদের মধ্যে সভায় উপস্থিত ছিলেন।

আজকের সভায় বিভিন্ন জেলার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে চিংড়ী মহালের নতুন ইজারার প্রস্তাব উত্থাপন করা হয় এবং অনুমোদনের জন্য অপেক্ষারত চিংড়ি মহাল ইজারা নিয়ে আলোচনা করা হয়। উল্লেখ্য, সারা দেশে প্রায় ১৫৯৬টি চিংড়ি মহাল আছে যা কোটিকোটি টাকার রাজস্ব আয়ের উৎস।

Exit mobile version