TechJano

বসুন্ধরা সিটিতে কি হচ্ছে? নেপথ্যে ১০০ আইফোন ১০?

বসুন্ধরা সিটিতে দামি মোবাইল পাওয়া যায় সেকথা সবাই জানেন। আইফোনও নতুন আছে। কিন্তু ১৯ মে শনিবার যা ঘটল পুরোই নাটক।
রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সে অভিযান চালিয়ে শ–খানেক মোবাইল ফোন জব্দ করেছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। আজ শনিবার শুল্ক ফাঁকির অভিযোগে এসব মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। এর প্রতিবাদে বাইরে এসে সড়ক অবরোধ করেন শপিং কমপ্লেক্সের ব্যবসায়ীরা। এ সময় তাঁরা অভিযানে অংশ নেওয়া শুল্ক কর্মকর্তাদের ঘেরাও করে রাখেন।
পরে উভয় পক্ষের মধ্যে বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে জব্দকৃত মোবাইল ফোনের কাগজপত্র যাচাই–বাছাই করা হয়। শনিবার বেলা ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কাজী মো. জিয়াউদ্দিন ও র‍্যাব-২–এর একজন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সে অভিযান চালানো হয়। অভিযানকারীরা লেবেল-১, লেবেল-৫ ও লেবেল-৬–এর কয়েকটি মোবাইল ফোন বিক্রির দোকানে তল্লাশি করেন। এ সময় অভিযানকারী দল লেভেল-১–এর বি ব্লকের সেল অন ও গেজেট জোন নামের দুটি দোকান থেকে শ–খানেক আইফোন জব্দ করে। র‍্যাব ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জব্দ হওয়া সেটগুলো আইফোন ১০ ও আইফোন ১০–এক্স মডেলের। এ ছাড়া লেভেল-১–এর আরও তিনটি দোকান থেকে মোবাইল ফোনের বেশ কিছু খালি প্যাকেট জব্দ করা হয়।
বেলা ১টার দিকে কাজী মো. জিয়াউদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, জব্দ হওয়া এসব আইফোনের প্রতিটির আনুমানিক বাজারদর এক লাখ টাকা। প্রতিটি আইফোন সেট থেকে ৩৫-৪০ হাজার টাকা শুল্ক ফাঁকি দেওয়া হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
অভিযান শেষে বের হওয়ার সময় শুল্ক কর্মকর্তা ও ম্যাজিস্ট্রেটদের শপিং কমপ্লেক্সের নিচতলায় ঘিরে রাখেন মোবাইল ব্যবসায়ীরা। পরে শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তারা পেছনের দরজা দিয়ে বের হন। কিন্তু বাইরে আসার পর আবারও ব্যবসায়ীরাও সড়কে চলে আসেন। এ সময় ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কাজী মো. জিয়াউদ্দিনসহ অন্যদের ঘিরে রাখেন। একপর্যায়ে ব্যবসায়ীরা সড়ক পান্থপথ অবরোধের পাশাপাশি সড়কে অগ্নিসংযোগ করেন। পরে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সে মোবাইল মালিকদের সঙ্গে অভিযানে অংশ নেওয়া শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর এবং র‍্যাব-২–এর কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শুরু হয়। এ সময় ব্যবসায়ীরা সড়ক ছেড়ে শপিং কমপ্লেক্সের সামনে অবস্থান নেন।
দোকান মালিকদের অভিযোগ, হয়রানি করার জন্য এ ধরনের অভিযান চালিয়ে থাকেন শুল্ক গোয়েন্দারা। ফয়সাল নামের এক মোবাইল দোকানের মালিক বলেন, ‘প্রতিবছর ঈদ ঘনিয়ে এলে রমজান মাসে এ ধরনের অভিযান চালানো হয়। তারা এসে ট্যাক্স দেওয়ার কাগজপত্র দেখাতে বলেন। আমরা দেশের বাইরে বেড়াতে যাওয়া ব্যক্তিদের কাছ থেকে একটি-দুটি করে সেট কিনে থাকি। এ ধরনের মোবাইল ফোন সেটের কোনো ট্যাক্স পেপার থাকে না। আমরা আইএমইআই নম্বর যাচাই করে এসব সেট কিনে পরে আবার বিক্রি করি। কোন একটা শ্রেণির কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে আমাদের হয়রানি করতে এ ধরনের অভিযান চালানো হয়।’
ব্যবসায়ীরা বলেন, মোবাইল ফোন সেট জব্দের পর সিজার লিস্ট (জব্দ করার তালিকা) দেওয়া হয় না। সিজার লিস্ট না দিয়ে শুল্ক গোয়েন্দারা সেট নিয়ে চলে যান। এ কারণে এসব মোবাইল ছাড়িয়ে আনাও সম্ভব হয় না।
বিকেলে শপিং মল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় জিয়াউদ্দিন বলেন, তাঁর কাছে ৬৪টি ফোন সেট আছে। এগুলোর কাগজপত্র যাচাই করে পরে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।তথ্যসূত্র: প্রথম আলো।

Exit mobile version