ডিজিটাল দক্ষতার সাহায্যে বাংলাদেশি নারী ও তরুণদের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে ব্র্যাকের সঙ্গে মিলিতভাবে কাজ করছে মেটা, যা আগে ফেসবুক কোম্পানি নামে পরিচিত ছিল। এই যৌথ উদ্যোগের অংশ হিসেবে প্রথম পর্যায়ে ব্র্যাকের ১ হাজার জন ফ্রন্টলাইন কর্মীকে প্রশিক্ষণ দিতে একটি কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। এই কর্মীরা পরবর্তীতে ব্র্যাকের বিভিন্ন কর্মসূচির ৩ লাখ উপকারভোগীকে প্রশিক্ষণ দেবেন।
ব্র্যাকের আমরা নতুন নেটওয়ার্ক-এর ৬০ জন ইয়ুথ অ্যাম্বাসেডরকেও প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, যারা পরে নিজেদের কমিউনিটির ১ হাজার ২০০ জন তরুণকে আরও সচেতন ডিজিটাল নাগরিক হয়ে উঠতে সাহায্য করবেন। কোভিড-১৯ মহামারির কারণে সারা পৃথিবীর মানুষ ইন্টারনেটের ওপর আগের চেয়ে অনেক বেশি নির্ভরশীল হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশের নারী ও তরুণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহারের হার অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু একইসাথে, দেশে সমানভাবে বেড়েছে সাইবারক্রাইম ও অনলাইন হয়রানি। ব্র্যাকের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে নারী ও তরুণদের অনলাইনে ইতিবাচক অভিজ্ঞতা প্রদানের লক্ষ্যে তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য ও টুল দিয়ে সাহায্য করবে মেটা। এর মধ্যে আছে ডিজিটাল জগৎ নিয়ে বাংলাদেশিদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে একটি সোশ্যাল মিডিয়া ক্যাম্পেইন। মেটা-র বাংলাদেশ সংক্রান্ত পাবলিক পলিসি প্রধান সাবহানাজ রশিদ দিয়া বলেন, “আমরা জানি, ডিজিটাল জগৎ খুব দ্রুত পরিবর্তিত ও রূপান্তরিত হচ্ছে। নারী ও তরুণদের অনলাইনে ইতিবাচক অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করতে তাদের যথাযথ টুল ও জ্ঞান প্রয়োজন। তাদের প্রয়োজনীয় ডিজিটাল দক্ষতা দিয়ে অনলাইনে নিরাপদ রাখতে ব্র্যাকের অভিজ্ঞতা ও প্রাতিষ্ঠানিক বিস্তৃতি আমাদের সাহায্য করবে। এই যৌথ উদ্যোগের মাধ্যমে মেটা-র প্ল্যাটফর্মে নারী ও তরুণদের ডিজিটাল প্রয়োজন মেটাতে আমাদের কার্যক্রম আরও জোরদার হবে।” সম্প্রতি, StopNCII.org প্ল্যাটফর্মটি চালু করতে পৃথিবীজুড়ে ব্র্যাকসহ ৫০টি বেসরকারি পার্টনার সংস্থার সহযোগিতায় কাজ শুরু করেছে মেটা। সাইবারবুলিং ও হয়রানির অন্যতম উপায় হলো সম্মতি ছাড়া অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়া। প্ল্যাটফর্মটি এ ধরনের ছবি ছড়ানো বন্ধ করতে সাহায্য করছে। ব্র্যাক বাংলাদেশ-এর নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ বলেন, “বাংলাদেশ বর্তমানে ক্রমবর্ধমান সাইবার হুমকি মোকাবেলা করে চলেছে, যা সামাজিক সংহতিকে চ্যালেঞ্জ করে। এ পরিস্থিতিতে মেটা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ পার্টনার। আমরা বিশ্বাস করি, এই প্রশিক্ষণ আমাদের কমিউনিটিকে আরও দৃঢ় ও সদা প্রস্তুত থাকার জন্য প্রয়োজনীয় টুলগুলো প্রদান করবে। আজকের পৃথিবীতে, যেখানে সমাজের নাগরিকদের ডিজিটাল জীবন বাস্তব জীবনে প্রভাবে ফেলছে, সেখানে এই টুলগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।” ২০২১ সালে মেটা উইমেন’স সেইফটি হাব চালু করার ঘোষণা দেয়। অনলাইনে নারীদের প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত তথ্যগুলো এখানে পাওয়া যাবে। বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যারা নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করেন, এমন বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে এটি তৈরি করা হয়েছে। এতে নেতৃত্বস্থানীয় নারী, সাংবাদিক ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এমন নারীদের তথ্য অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। অনলাইনে কীভাবে নিরাপদ থাকা যায়, সে ব্যাপারে আরও বিস্তারিত জানতে দেখুন: https://wethinkdigital.fb.com/bd/bd-bd/stayingsafeonline/