টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে নীতিমালা, উদ্ভাবন, অবকাঠামো এবং দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশে ডিজিটাল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস ইকোসিস্টেম শক্তিশালীকরণের লক্ষ্যে রবিবার ঢাকার আগারগাঁওয়ে অবস্থিত আইডিবি ভবনে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) এবং জাতিসংঘের মূলধন উন্নয়ন তহবিল (ইউএনসিডিএফ) মধ্যকার একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এতে বাস্তবায়ন অংশীদার হিসেবে কাজ করবে এটুআই।
ইউএনডিপি বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক প্রতিনিধি ভ্যান নুয়েন এবং ইউএনসিডিএফ-এর এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারি প্রীতি সিনহা নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে এই সমঝোতা স্মারকে স্মাক্ষর করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন এটুআই এর প্রকল্প পরিচালক (যুগ্মসচিব) ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর, এটুআই-এর পলিসি জনাব অ্যাডভাইজার আনীর চৌধুরী এবং ইউএনসিডিএফ এর এশীয় অঞ্চলের আঞ্চলিক কোঅর্ডিনেটর মিস মারিয়া পারডোমো।
স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের আওতায়, ইউএনসিডিএফ-এর অর্থায়নে (যেমন- অনুদান ও পরিশোধযোগ্য ঋণ) দেশের ক্ষুদ্র এবং আর্থিকভাবে দূর্বল উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন উদ্যোগে সীড মানি প্রদান করা হবে। এর আওতায় দক্ষতা উন্নয়ন, নীতিমালা প্রণয়ন এবং বাংলাদেশের ডিজিটাল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস ইকোসিস্টেম উন্নয়নে নিজেদের মধ্যে অভিজ্ঞতা বিনিময় করা হবে। এছাড়া একটি অভিন্ন লক্ষ্য অর্জনে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক শক্তিশালীকরণে মাধ্যমে প্রান্তিক জনগণের কাছে এই অংশীদ্বারিত্বের আওতায় সুবিধা পৌঁছে দিতে একটি ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করা হবে। যা একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ডিজিটাল অর্থনীতি প্রতিষ্ঠায় কাজ করবে। সেই সাথে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে বাংলাদেশের মতো দেশে ডিজিটাল অর্ন্তভুক্তিমূলক অর্থনীতি বাস্তবায়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
এটুআই এর প্রকল্প পরিচালক (যুগ্মসচিব) ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্পের সফল বাস্তবায়নের পরবর্তীতে আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের উদ্দেশ্যে কাজ শুরু করেছি। এই সমঝোতা স্মারকের মধ্য দিয়ে ইউএনডিপি, ইউএনসিডিএফ এবং এটুআই-এর মধ্যকার সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরো বেগবান হবে পাশাপাশি ডিজিটাল আর্থিক ব্যবস্থায় সমাজের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর বিশেষ করে নারী উদ্যোক্তাদের অর্ন্তভুক্তিকরণ ও প্রবেশাধিকার নিশ্চিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
ইউএনডিপি বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক প্রতিনিধি ভ্যান নুয়েন বলেন, উন্নয়নের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে একটি দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটুআই, ইউএনডিপি, ইউএনসিডিএফ আজকের এই অংশীদারিত্বে উভয়ের সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্কের ক্ষেত্রে অনেক সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র তৈরি করবে। তবে, আমরা এখানেই থেমে যেতে চাই না। আমাদের সহযোগিতামূলক মাধ্যমে বিশ্বে অন্যান্য দেশের প্রান্তিক মানুষের কাছে পৌঁছে যেতে চাই।
ইউএনসিডিএফ-এর এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারি প্রীতি সিনহা বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, ইউএনসিডিএফ এবং ইউএনডিপি যৌথভাবে উদ্ভাবন, ক্ষুদ্র সঞ্চয়, ডিজিটাল অ্যাক্সেস এবং ডিজিটাল ফিন্যান্সকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে সমাজের সকলের জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্য পূরণ করবে। গত কয়েক বছরে আর্থিক ও উন্নয়নে খাতে বাংলাদেশের অভাবনীয় সাফল্য রয়েছে। তাদের এই অভিজ্ঞতা থেকে বিশ্বের অন্যান্য দেশের শিক্ষা নিতে পারে। সামনের দিনে আমরা বাংলাদেশের ডিজিটাল ফিন্যান্সের উন্নয়নের একসাথে কাজ করতে চাই।
এটুআই এর পলিসি অ্যাডভাইজার জনাব আনীর চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে এসডিজি অর্জনে নাগরিকবান্ধব আর্থিক সমাধান এবং নাগরিকদের সঞ্চয়ে উৎসাহী করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ইউএনসিডিএফ-এর সাথে এটুআই-এর ডিএফএস টিম কাজ করছে। প্রান্তিক পর্যায়ের জনগণকে আর্থিক লেনদেনের সুবিধার আওতায় নিয়ে আসতে ফিনটেক ভিত্তিক স্টার্টআপ উন্নয়নে ইউএনসিডিএফ এর সাথে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ‘ফিনল্যাব বিডি’ চালু করেছে এটুআই। এছাড়া ইউএনসিডিএফ এর সহযোগিতায় দেশের ৫০ হাজারেরও বেশি প্রান্তিক পর্যায়ের কুটির, ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি (সিএসএমই) উদ্যোক্তাদের অনলাইনে প্রশিক্ষণ প্রদান করেছে একশপ। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উচ্চ-আয়ের দেশের রুপান্তরের লক্ষ্যে ডিজিটাল বিভাজনের ব্যবধান কমিয়ে আনার জন্য দক্ষতা উন্নয়নে আমাদের মনোযোগী হতে হবে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে ইউএনডিপি, ইউএনসিডিএফ এবং এটুআই এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।