ঘরে অবসর সময়ে বসে আছি বা বেরিয়ে কোথাও যাচ্ছি, কানের মধ্যে একটা ইয়ারফোন/হেডফোন থাকছে, তার মধ্যে উচ্চশব্দে বাজছে গান। এটা একটা বড় নেশা হলেও এর পলে যে কত বড় বড় ক্ষতি হচ্ছে আমাদের তা আমরা নিজেরাও বুঝতে পারি না। প্রায়ই কানে ইয়ারফোন লাগিয়ে পথে-ঘাটে হেঁটে মৃত্যুর খবর উঠে আসে খবরের শিরেনামে। তবু আমরা সচেতন হই কোথায়? তাই হেডফোন বা ইয়ারফোন ব্যবহারে আজই সচেতন হোন।
শুনতে পাওয়ার প্রবণতা কমিয়ে অকালেই বধির হয়ে যেতে পারেন স্রেফ যথেচ্ছ ইয়ারফোন ব্যবহারে। এই প্রসঙ্গে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন চিকিৎসক আমাদের সাবধান করেছেন। মারণ রোগের হাতছানিও এখানে এড়িয়ে যাওয়ার নয়। এ নিয়ে চলেছে সরকারি নানা প্রচারও। তবু ছবি বদলায় না। ব্যস্ত জীবনে দু’দণ্ড গান শুনে নেওয়ার সময়টুকুই যেন আমাদের মানসিক চাপ থেকে মুক্তির রসদ।
ইয়ারফোনে গান শুনুন। কিন্তু কিছু নিয়ম মেনে। এতে জীবন ও কান দুই-ই বাঁচবে, আবার গান শোনার মজা থেকেও বঞ্চিত হবেন না। হেডফোন ব্যবহারের এমন কিছু নিয়ম, যা অন্তত কিছুটা হলেও আপনাকে বাঁচাবে শারীরিক ক্ষতি থেকে। এমন কিছু কৌশল যা আপনার জীবন রক্ষাতেও সাহায্য করবে। জেনে নিন হেডফোন ব্যাবহারের কিছু নিয়ম:
১. যে সংস্থার মোবাইল ব্যবহার করছেন, ঠিক সেই সংস্থার, সেই মডেলটির ইয়ারফোনই ব্যবহার করুন। প্রতিটি সংস্থা তাদের নির্দিষ্ট মডেলের জন্য নির্দিষ্ট ইয়ারফোন তৈরি করে। ফোন থেকে বেরোনো রশ্মির তরঙ্গ, কম্পন ইত্যাদির উপর অঙ্ক কষেই ইয়ারফোনের তরঙ্গ তার ক্ষমতা ইত্যাদি ঠিক করা হয়। আমাদের অনেকেরই অভ্যাস আছে ইয়ারফোন খারাপ হলেই আমরা বাজারচলতি সস্তা ইয়ারফোন কিনে নিই। এ সব কানের জন্য খুব ক্ষতিকর। তাই ইয়ারফোন খারাপ হলে উক্ত সংস্থার ঠিক ওই মডেলেরই ইয়ারফোন কিনে ব্যবহার করুন।
২. ইয়ারফোনে গান শোনার সময় সর্বোচ্চ ভলিয়্যুমে রেখে কখনওই শুনবেন না। এতে কানের পর্দার খুব ক্ষতি হয়। যেহেতু এই আওয়াজ সরাসরি কানে প্রবেশ করে, তাই এ বিষয়ে বিশেষ সচেতনতা অবলম্বন করুন। মোবাইলের ভলিয়্যুম কখনওই মাঝামাঝির বেশি রাখবেন না। তাতে কানের পর্দার ক্ষমতার সঙ্গে তা সামঞ্জস্য রাখতে পারে। গান চালিয়ে দেখে নিন ওই ভলিয়্যুমে বাইরের চিৎকার, আওয়াজ এ সবও কানে পৌঁছচ্ছে কি-না। তা না হলে আওয়াজ আরও কমান।
৩. বাইরে বেরিয়ে গান শুনতে হলে তা শুনুন যানবাহনে যাত্রার সময় বা এক জায়গায় বসে। হাঁটার সময় বা রাস্তা-লাইন পেরনোর সময় একেবারেই নয়। শুধু নিজেই নয়, অন্যকেও এমন কাজ থেকে বিরত করুন। তবে যানবাহনে চালকের আসনে থাকলে ইয়ারফোন লাগাবেন না কানে। এতে মনঃসংযোগ নষ্ট হয়।
৪.আপনি যদি নিজের ইয়ারফোন না ব্যবহার করে অন্যের ইয়ারফোন ব্যবহার করেন, তাহলে সমস্যা আরও বেড়ে যাবে। কেননা আরেকজনের কানের ব্যাকটেরিয়া আপনার কানে ইনফেকশন তৈরি করতে পারে। তাই এরপর থেকে অন্যের ইয়ারফোন বা হেডফোন ব্যবহারের আগে তা স্যানিটাইজ বা পরিস্কার করে নিন।
৫. একটানা আধ ঘণ্টার বেসি ইয়ারফোন ব্যবহার করবেন না। মোবাইলে কোনও সিনেমা দেখতে হলে আধ ঘণ্টা অন্তর খানিক বিরতি নিন। পাঁচ-দশ মিনিট বিরাম দিন কানকে।
তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার