সম্প্রতি হুয়াওয়ে এবং এলিভেট (ইএলইভিএটিই) আয়োজিত একটি ভার্চুয়াল সম্মেলনে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের সরকারি ও জলবায়ু সম্পৃক্ত আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিগণ এশিয়ায় সবুজায়নের পুনরুদ্ধারের বিষয়ে আলোচনা করেন। এই সম্মেলনে চলমান বৈশ্বিক মহামারি, পরিবেশের ওপর মানুষের সৃষ্ট নেতিবাচকের প্রভাব এবং সবুজায়নের পুনরুদ্ধারের বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব পায়।
এখানে বলা হয়, বিশুদ্ধ বাতাস ও কার্যকর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করার পাশাপাশি বৈশ্বিক মহামারির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে কমিউনিটিগুলোকে সহায়তা করবে। বড় শিল্পখাতে শক্তির ব্যবহার ও নিঃসরণের মাত্রা হ্রাস করতে পারে ডিজিটাল প্রযুক্তি। এ প্রযুক্তিগুলোর মধ্যে রয়েছে বিগ ডাটা ও আইওটি সল্যুশন। পাশাপাশি, ডিজিটাল প্রযুক্তি এআই সল্যুশন ব্যবহারের মাধ্যমে নবায়নযোগ্য শক্তিগুলোর অধিক উৎপাদনে সহায়তা করতে পারবে। আর এভাবেই হতে পারে করোনা পরবর্তী সময়ের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার।
চীন ছাড়া এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলগুলোতে বিশ্ব জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক লোক বাস করে এবং ২০১৯ সালে বিশ্বের মোট জিডিপির প্রায় ২৫ শতাংশ এসেছে এ দেশগুলো থেকে, যা নতুন আইসিটি অবকাঠামোর সমন্বয় এবং টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের সমন্বিত কৌশল এবং সবুজ অর্থনৈতিক মডেলের প্রত্যাশাকে তুলে ধরে।
এ নিয়ে হুয়াওয়ের করপোরেট সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও বোর্ডের ডিরেক্টর ক্যাথরিন চ্যান বলেন, ‘আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, পৃথিবীর ভালোর জন্যই প্রযুক্তির ব্যবহার করতে হবে, কারণ এটিই আমাদের বসবাসের একমাত্র স্থান। তিনি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং কার্বন নিঃসরণ হ্রাস, নতুন নবায়নযোগ্য জ্বালানি সম্পদের ব্যবহার এবং সবুজ আইসিটি সল্যুশনের মাধ্যমে গতিশীল অর্থনীতির বিকাশে হুয়াওয়ের অবদানের বিষয়টিও উল্লেখ করেন। তিনি আরো বলেন, ‘প্রকৃতির সাথে একটি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরিতে আমাদের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা ও বিশ্ব কমিউনিটির দক্ষতার বিষয়ে আমার পূর্ণ বিশ্বাস রয়েছে।’
প্যারিস চুক্তি জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাকে সমর্থন করে, এর সাথে সামঞ্জস্য রেখে উৎপাদন প্রক্রিয়ায়, কার্যক্রম ও পণ্য এবং পরিষেবা প্রদানের প্রক্রিয়ায় পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব কমাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হুয়াওয়ে। উন্নত পৃথিবী বিনির্মাণের জন্য উদ্ভাবনী প্রযুক্তি নিয়ে আসার অঙ্গীকারের অংশ হিসেবে লো-কার্বন সোসাইটি তৈরিতে সম্পদ সাশ্রয়ের মাধ্যমে এবং শিল্পখাতেকে এগিয়ে নেয়াই আমাদের লক্ষ্য।
অনুষ্ঠানে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের সরকারি ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো থেকে বক্তাগণ অংশগ্রহণ করেন। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন আসিয়ান সেক্রেটারিয়েটের হেড অব দ্য এনভায়রনমেন্ট ডিভিশন ও সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট ডিরেক্টরের অ্যাসিসটেন্ট ডিরেক্টর ড. ভং সোক, রিপাবলিক অব কোরিয়ার মিনিস্ট্রি অব ফরেন অ্যাফেয়ার্সের ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যাম্বাসেডর ইয়ূন-চুল উ, পার্টনারশিপ ফর অ্যাকশন অন গ্রিন ইকোনমি (পিএজিই-ইউএনইপি) এর হেড অব সেক্রেটারি আসাদ নাকবি, পিপলস রিপাবলিক অব চায়নার মিনিস্ট্রি অব ইকোলজি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টের ন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশনের ডেপুটি ডিরেক্টর মা আইমিন, গ্লোবাল গ্রিন গ্রোথ ইনস্টিটিউটের (জিজিজিআই) ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল হাইয়ূন জেনি কিম, ইউনাইটেড নেশনস গ্লোবাল কমপ্যাক্টের হেড অব এশিয়া প্যাসিফিক নেটওয়ার্কস মেং লিউ।
এলিভেটের (ইএলইভিএটিই) সিনিয়র অ্যাডভাইজার রিচার্ড ওয়েলফোর্ড বলেন, ‘অনুষ্ঠান থেকে পরিষ্কারভাবে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিভিন্ন বিষয় ও অন্যান্য পরিবেশগত সমস্যার সমাধানে কোভিড-১৯ পরবর্তী চ্যালেঞ্জ ও সুযোগের বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা পাওয়া গেছে। সরকার, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও নাগরিক সমাজের প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যকর অংশীদারিত্বের মাধ্যমে সামনের দিনে একটি ‘গ্রিন গ্রোথ অ্যাজেন্ডা’ বাস্তবায়ন সম্ভব।’