পরিবেশ বন, ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুল্লাহ আল মোহসিন চৌধুরী বলেছেন, বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতা করার মতো শিল্প-কারখানা আমাদের তেমন ছিল না। কিন্তু ওয়ালটন কারখানায় এসে আজ আমরা যা দেখলাম, তাতে আমার বিশ্বাস অচিরেই বিশ্ববাজারে ওয়ালটন বড় ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।
তিনি আরো বলেন, ইতোমধ্যেই দেশীয় বাজারের সিংহভাগ দখল করেছে ওয়ালটন। আমি আশা করি বিশ্ববাজারেও তাদের এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে। ওয়ালটন বললে সারা বিশ্ব বাংলাদেশকেই চিনবে।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল ২০১৯) গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডে রেফ্রিজারেটর ও কম্প্রেসরে এইচএফসি ফেজ আউট প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণকালে তিনি এ কথা বলেন। রেফ্রিজারেটর উৎপাদনে বিশ্বের জলবায়ু উষ্ণায়নের জন্য দায়ী এইচএফসি গ্যাসের ব্যবহার পুরোপুরি বন্ধের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকারের পরিবেশ বন, ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং জাতিসংঘের উন্নয়ন সংস্থা ইউএনডিপির অধীনে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ বন, ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. নূরুল কাদির ও মোজাহেদ হোসেন, উপ সচিব শামসুর রহমান খান, ইউএনডিপি বাংলাদেশ এর সহকারী আবাসিক প্রতিনিধি খুরশিদ আলম, কেমিক্যাল ও মন্ট্রিল প্রোটেকল বিষয়ক জাতীয় পরামর্শক আশরাফুল আম্বিয়া, বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মুল্যায়ন বিভাগের মহাপরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব মো. কামরুজ্জামান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব ড. সুলতান আহমেদ, পরিচালক মো. জিয়াউল হক, প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর ড. সত্যেন্দ্র কুমার পুরকায়স্থ। তারা প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
এর আগে সকালে অতিথিরা কারখানায় পৌঁছালে তাদেরকে স্বাগত জানান ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের পরিচালক এস এম মাহবুবুল আলম। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন গ্রুপের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর এস এম জাহিদ হাসান, আলমগীর আলম সরকার, শোয়েব হোসেন নোবেল, গোলাম মুর্শেদ, ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মীর মুজাহিদীন ইসলাম, শরীফ হারুনুর রশীদ, অপারেটিভ ডিরেক্টর তৌফিক-উল-কাদের, ইসহাক রনি, অ্যাডিশনাল অপারেটিভ ডিরেক্টর খন্দকার শাহরিয়ার মুর্শেদ প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ফ্রিজ ও কম্প্রেসরে ক্ষতিকারক এইচএফসি গ্যাস ফেজ আউটের লক্ষ্যে গত বছর ওয়ালটনের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে ইউএনডিপি। এই চুক্তি অনুযায়ী ‘এইচএফসি ফেজ আউট প্রকল্প’ বাস্তবায়নের উদ্যেগ নেয় দেশীয় এই প্রতিষ্ঠানটি। এক বছর মেয়াদী ওই প্রকল্পের আওতায় ওয়ালটন কারখানা এবং সার্ভিস সেন্টারে ফ্রিজ এবং কম্প্রেসর থেকে পুরোপুরি এইচএফসি ফেজ আউট করে গ্রিন হাইড্রোকার্বন টেকনোলজির ব্যবহার নিয়ে কাজ চলছে। ইতোমধ্যে ফ্রিজের ক্ষেত্রে এ প্রকল্পের ৮০ শতাংশ এবং কম্প্রেসরের ক্ষেত্রে ৭০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। উক্ত প্রকল্পে এইচএফসি-১৩৪এ রেফ্রিজারেন্টের পরিবর্তে পরিবেশবান্ধব এইচসি-৬০০এ (আইসোবিউটেন) রেফ্রিজারেন্ট ব্যবহার করা হচ্ছে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে বায়ুমন্ডলে বাৎসরিক প্রায় ২৩০ মেট্রিক টন এইচএফসি গ্যাসের নিঃসরণ রোধ হবে। এর মধ্য দিয়ে ‘গ্লোবাল ওয়ার্মিং’ কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে ওয়ালটন তথা বাংলাদেশ। বিশ্ব উষ্ণায়ন রোধের ক্ষেত্রে এ প্রকল্প একটি মাইলফলক হিসেবে পরিগণিত হবে।