TechJano

বিসিএসআইআরের বিজ্ঞান সম্মেলন নতুন উদ্ভাবনের প্রতিশ্রুতিতে শেষ হলো

আগামী দিনে নতুন নতুন গবেষণা ও উদ্ভাবনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে শেষ হলো দেশের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক মিলনমেলা। বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের (বিসিএসআইআর) ঢাকা ক্যাম্পাসে আজ শনিবার বিকালে পর্দা নেমেছে তিন দিনের আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্মেলন ২০২১-এর।

বাংলাদেশ, আমেরিকা, কানাডা, জার্মানি, চীন ও ভারতসহ বিশে্বর বিভিন্ন দেশের এক হাজারের বেশি বিজ্ঞানী, গবেষক ও প্রকৌশলী দেশের ইতিহাসে এই প্রথম সশরীরে ও ভার্চুয়ালভাবে তাদের গবেষণাকর্ম উপস্থাপন করেন।

সমাপনীতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্মেলনের সফলতাকে অভিনন্দন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘স্টিম ইঞ্জিন আবিষ্কারের ১০০ বছর পর এবং বিদ্যুৎ আবিষ্কারের ৮০ বছর পর ভারতবর্ষে এর ব্যবহার শুরু হয়। কিন্তু বর্তমানে আইসিটির মহাবিপ্লব শুরু হওয়ায় সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশ তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে ডিজিটাল বাংলাদেশ আজ বিশ্বদরবারে উদাহরণ সৃষ্টি করেছে।’

তথ্যমন্ত্রী এই সময় যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার একটি বক্তব্য স্মরণ করেন। কেনিয়া সফরের সময় ওবামা বলেন, ‘আইসিটি ব্যবহার করে গ্রামীণ অর্থনীতির ব্যাপক পরিবর্তন কীভাবে করা যায় আফ্রিকার দেশগুলো বাংলাদেশের কাছ থেকে তা শিখতে পারে।

তথ্যমন্ত্রী বিসিএসআইআরসহ দেশের বিজ্ঞানী ও গবেষকদের তাদের অসামান্য কৃতিত্বের জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন যে, হেনরি কিসিঞ্জারের তলাবিহীন ঝুড়ির বাংলাদেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। শুধু তাই নয়, টেলিমেডিসিন থেকে শুরু করে অনলাইনে অর্থ প্রেরণ এমনকি উপজেলা পরিষদে এক ছাদের নিচে সব পরিষেবা সবই সম্ভব হয়েছে সজীব ওয়াজেদ জয়-এর ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের মাধ্যমে।’ আন্তর্জাতিক এই সম্মেলনে সব তরুণ বিজ্ঞানীর মেধা ও যোগ্যতা উন্নত বাংলাদেশ গড়ার কাজে লাগানোর আহ্বান জানান তিনি।

সমাপনী অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘যেকোনো দেশের শিক্ষা বা বিজ্ঞানচর্চার মূল চাবিকাঠি মাতৃভাষায় শিক্ষা অর্জন করা। জাপান, জার্মানি, চীন এবং অনেক উন্নত দেশ উচ্চ শিক্ষায়ও তাদের মাতৃভাষা ব্যবহার করে। ফলে শিক্ষার্থীরা যেকোনো কঠিন বিষয় সহজেই বুঝতে পারে।’ বিসিএসআইআরও বিজ্ঞান গবেষণার বিভিন্ন জটিল বিষয় বাংলায় তৈরি ও প্রচারের উদ্যোগ নিতে পারে বলে অভিমত দেন প্রতিমন্ত্রী।

মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, এ দেশের বিজ্ঞানীরা তথ্য-যোগাযোগ, পরিবেশ, সোলার এনার্জি, আর্সেনিক দূরীকরণ, পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করছে যা বাংলাদেশকে উন্নত দেশে পরিণত করতে সহায়ক হবে।

অনুষ্ঠানের সভাপতি বিসিএসআইআরের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. আফতাব আলী শেখ তার ভাষণে বলেন, ‘কোভিডের মতো বিশ^ব্যাপী দুর্যোগ সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি বিসিএসআইআরের বিজ্ঞানীদের স্মরণ করিয়ে দেন যে, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশনায় বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড. মুহাম্মদ কুদরাত-এ-খুদার হাত ধরে বিসিএসআইআর দেশের অন্যতম প্রধান গবেষণা কেন্দ্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। বর্তমান সরকারের পক্ষে এই কেন্দ্রকে নিরলসভাবে সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান এবং মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আনোয়ার হোসেন।

এ সময় সিনিয়র সচিব বাংলাদেশে এই প্রথম সহস্রাাধিক দেশি-বিদেশি গবেষক, বিজ্ঞানী এবং প্রকৌশলীদের অংশগ্রহণে সফলভাবে সমাপ্ত আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্মেলনের কয়েকটি তথ্য তুলে ধরেন।

Exit mobile version