সম্প্রতি একটি ম্যাগাজিনকে দেওয়া সাক্ষাতকারে বেসিসের বাংলাদেশ অ্যসোসিয়েশন অফ সফটওয়্যার এন্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) সভাপতি আলমাস কবির বলেছেন, এক মাসেই বেসিসের মেম্বার সার্ভিস অটোমেটেড হচ্ছে। কয়েকদিন পরেই বেসিস নির্বাচন। মোস্তাফা জব্বার মন্ত্রী হ্ওয়ায় স্বল্প সময়ের জন্য বেসিস সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনের সুযোগ পেয়েছেন আলমাস কবীর। তিনি বলেন, আমাদের ইন্ডাস্ট্রির জন্য বড় একটা সুবিধা হচ্ছে, বেসিসের প্রেসিডেন্ট যিনি ছিলেন মোস্তাফা জব্বার তিনি এখন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী। বেসিসের কাজ হচ্ছে, ইন্ডাস্ট্রির সমস্যাগুলো নিয়ে দেনদরবার করা সরকারের সঙ্গে। তো এখন সুবিধাটা হচ্ছে, বর্তমানে যিনি মন্ত্রী তিনি নিজেই ইন্ডাস্ট্রির লোক। যেহেতু তিনি নিজেই ইন্ডাস্ট্রির দায়িত্ব পালন করে গিয়েছিলেন, তাই উনাকে আর এগুলো বোঝাতে হচ্ছে না। এই সুযোগটা আমি কাজে লাগাতে পারছি। যেমন কয়েকটা উদাহরণ দেই, এনবিআরের সাথে আমাদের কিছু ইস্যু আছে, ডিউটি নিয়ে, ট্যাক্স নিয়ে কিছু সমস্যা আছে, আমরা এক্সপোর্টে যে ইনসেনটিভ পাওয়ার কথা, বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে কিছু ইস্যু আছে, উনাকে বলার সঙ্গে সঙ্গে উনি ব্যবস্থা নিচ্ছেন। আগে মন্ত্রীকে কনভিন্স করা লাগতো, তারপর অনুরোধ করতাম, এখন ওই একটা স্টেপ আমার কমে গেছে। এটা আমার সবচেয়ে বড় সুবিধা। আর চ্যালেঞ্জ যেটা সেটাতো অবশ্যই সময়। কারণ যখনি কেউ নতুন দায়িত্ব নেয়, যেকোনো অ্যাসোসিয়েশনের ক্ষেত্রে, সদস্যদের অনেক প্রত্যাশা থাকে। সেই প্রত্যাশা পূরণ করার জন্য সময়ের দরকার হয়, সেই সময়টা আমার কাছে কম, এটাই আমার কাছে চ্যালেঞ্জ। তারপরও আমি খুব আশাবাদী, তার কারণ হচ্ছে, আমি দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই বেসিসের সদস্যদের সম্পৃক্ত করতে পেরেছি। বেসিসের ২৪টি স্ট্যান্ডিং কমিটি আছে। এই স্থায়ী কমিটিগুলো অনেকদিন ধরেই একটু নীরব ছিল, আমি সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার একদিন পরেই সব স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যানদেরকে অনুরোধ করি, আপনারা ৩১ জানুয়ারির মধ্যে অন্তত ১টা মিটিং করেন, মিটিং করে স্ট্যান্ডিং কমিটি থেকে রিকোমেন্ডেশন আমাদেরকে পাঠান, এরপর একাধিক অনেকগুলো মিটিং হয়েছে এবং অনেকগুলো রিকোমেন্ডেশন চলে এসেছে। ২৪টা স্ট্যান্ডিং কমিটিতে প্রায় ৪০০ এর বেশি সদস্য। অর্থাৎ হঠাৎ করে অনেক সদস্য অ্যাকটিভ হয়ে গেছে। দায়িত্ব নিয়েছি বেশি দিন হয়নি এর মধ্যে অনেক সদস্য সক্রিয় হয়ে গেছে। বেসিস সদস্যদের প্রসঙ্গে আলমাস কবীর বলেছেন, বেসিস তো মেম্বারদের অ্যাসোসিয়েশন। মেম্বারদের অ্যাসোসিয়েশনে মেম্বারদেরকে যে সার্ভিস দেওয়া হয়, এই সার্ভিসটা আমরা এনহ্যান্স করার চেষ্টা করছি। ২টা উদাহারণ বলছি- আমাদের অনেক মেম্বার কিন্তু ট্যাক্স সম্পর্কিত বা বিভিন্ন ধরনের ইস্যু নিয়ে ঝামেলায় পড়ে। অনেক সময় তার এমপ্লয়ী তাকে না বলে চলে গেছে, তার কাস্টমার নিয়ে চলে গেছে, তথ্য নিয়ে চলে গেছে ইত্যাদি অনেক ধরনের সমস্যা হয়। খুব শিগগির খুব বড় এবং ভালো একটা লিগ্যাল ফার্মের সঙ্গে আমরা চুক্তি স্বাক্ষর করতে যাচ্ছি, যেখানে এই লিগ্যাল ফার্ম আমাদের বেসিসের সব সদস্যদের ফ্রি আইনী পরামর্শ দেবে। বেসিস সদস্যরা বিনামূল্যে আইনি পরামর্শ নিতে পারবে। পরবর্তীতে যদি মামলার দরকার হয়, আইনজীবীর দরকার হয় তখন তারা ডিসকাউন্টেড ফিতে কাজটা করে দেবে।
একই ধরনের আরেকটা জিনিস করতে যাচ্ছি, যারা ইন্টালেকচুয়াল প্রোপার্টি (আইপি) বা পেটেন্ট নিয়ে কাজ করবেন, মুশকিলটা হচ্ছে, যদি এই কপিরাইট বা পেটেন্ট আপনার না থাকে, আপনি অনেক সময় কেস করে বা দাবি করে জিততে পারবেন না। সেজন্য আমি এনকারেজ করি সবাইকে যে, আপনার প্রোডাক্টটিকে আপনি কপিরাইট করেন, পেটেন্ট করেন। কিন্তু মুশকিলটা হয়ে গেছে বেশিরভাগ লোক, ৯৯ শতাংশ লোক কিভাবে এটা করতে হয় তা জানে না। পেটেন্টের জন্য অ্যাপ্লাই প্রক্রিয়া বেশ জটিল। এজন্য পেটেন্ট বা ইন্টালেকচুয়াল প্রোপার্টি (আইপি) বিষয়ক যে আইনজীবীরা রয়েছেন, আইপি ফোরাম আছে বাংলাদেশে, এই আইপি ফোরামের সঙ্গে চুক্তিস্বাক্ষর করে আমাদের সদস্যদের জন্য ফ্রি পরামর্শের ব্যবস্থা করবো। ফ্রিতে তথ্য জানাবে, পরবর্তীতে ডিসকাউন্টেড মূল্যে কাজটা করে দেবে।
আমি দায়িত্ব নেওয়ার পরে এই সার্ভিসগুলো আমি নতুন করে শুরু করতে যাচ্ছি। আর আমাদের ইতিমধ্যে যে সার্ভিসগুলো আছে, সেগুলো অনেক মেম্বার জানে না যে বেসিস থেকে কি কি সুবিধা বা সার্ভিস দেওয়া হয়। সেগুলো সবাইকে জানানোর জন্য আমরা ওয়েবসাইটটাকে আরো ইন্টারঅ্যাকটিভ করছি, ওয়েবসাইটে সব সার্ভিস উল্লেখ থাকবে এবং পুরো জিনিসটাকে অটোমেটেড করা হচ্ছে। ওয়েবসাইট অটোমেটেডের ফলে সদস্যরা সব সার্ভিস অনলাইন থেকে নিতে পারবে, অনলাইনে অ্যাপ্লাই করতে পারবে, টিকেটিং সিস্টেম থাকবে অর্থাৎ আমরা বেসিসে যারা ম্যানেজমেন্টে থাকবো আমরা দেখবো অর্থাৎ বেসিসের যে সেক্রেটারিয়েট স্টাফ আছে তারা দেখবো, কে যোগাযোগ করেছে, কবে যোগাযোগ করেছে, কোনো মেম্বার যদি কোনো কমপ্লেইন দিয়ে থাকে কতদিন লেগেছে তার উত্তর দিতে, এই ট্র্যাকিংটা আমাদের থাকবে এবং যদি ফি জমা দিতে হয় তাহলে অনলাইন পেমেন্ট থাকবে, অনলাইন গেটওয়ে থাকবে। অর্থাৎ মেম্বার সার্ভিস পুরোটাকেই আমরা অনলাইন করে ফেলছি এবং ১ মাসের মধ্যে এটা লঞ্চ করা হবে।