বেসরকারি ব্যাংকের স্থায়ী পদেও কেউ ৫৯ বছরের বেশি চাকরি করতে পারবেন না। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের ক্ষেত্রে চাকরির সর্বোচ্চ বয়সসীমা হবে ৬৫ বছর। তবে ব্যাংকগুলো চাইলে বিশেষ প্রয়োজনে ৬৫ বছরের বেশি বয়সের কাউকে পরামর্শক ও উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দিতে পারবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রজ্ঞাপনে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকারদের চাকরির বয়স-সংক্রান্ত এই প্রজ্ঞাপন জারি করে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, সরকারি ব্যাংকের মতো বেসরকারি ব্যাংকগুলোকেও অবসরের বয়স-সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। ব্যাংকের চাকরিতে শৃঙ্খলা ফেরাতেই নতুন এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে ব্যাংক–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, কারও বয়স ৬৫ বছর হলে তিনি কোনো ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদে থাকতে পারবেন না। এ ছাড়া বাংলাদেশে প্রচলিত বিধান ও প্রথা অনুযায়ী রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংক ও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বয়সসীমা অনুযায়ী অবসরে যান। বর্তমানে সরকারি চাকরির মেয়াদ ৫৯ বছর পর্যন্ত। এ ছাড়া বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাঁদের পরিচালনা পর্ষদ নির্ধারিত বয়সসীমা অনুযায়ী অবসরে যান। এমডি ব্যতীত অন্যান্য নিয়মিত পদে চুক্তিভিত্তিক কর্মকর্তার ক্ষেত্রে বয়সসীমা নির্ধারিত না থাকায় অনেকের বয়স ৬৫ বছর হওয়ার পরও পদে বহাল থাকতে পারেন। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ব্যাংকের এমডি ও অধস্তন অন্য চুক্তিভিত্তিক কর্মকর্তাদের মধ্যে অবসরের বয়সসীমা নিয়ে একধরনের অসমতা রয়েছে।
এ অবস্থায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক গতকালের নির্দেশনায় বলেছে, কারও বয়স ৬৫ বছর পার হলে তিনি ব্যাংকের নিয়মিত পদে চুক্তিভিত্তিকও থাকতে পারবেন না। তবে পরামর্শক ও উপদেষ্টা পদের ক্ষেত্রে এই বয়সসীমা কার্যকর হবে না। এদিকে রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকের সঙ্গে মিল রেখে বেসরকারি ব্যাংকগুলোও অবসর গ্রহণের বয়স-সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন করলে তাতে ৫৯ বছরের ঊর্ধ্বের কেউ ব্যাংকের নিয়মিত পদে থাকতে পারবেন না।
ব্যাংক কোম্পানি আইনের ৪৫ ধারার ক্ষমতাবলে এই জারি করা এই প্রজ্ঞাপনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এও বলেছে, প্রজ্ঞাপনটি জারির সময় চুক্তিভিত্তিক কর্মকর্তাদের চুক্তির মেয়াদ এক বছর বা তার কম সময় বাকি থাকলে তাঁরা দায়িত্ব চালিয়ে নিতে পারবেন।
বেসরকারি খাতের কয়েকটি ব্যাংকে অতিরিক্ত এমডি, ডিএমডিসহ বিভিন্ন পদে ৬৫ বছর বয়সের ঊর্ধ্বের অনেক কর্মকর্তা কাজ করছেন। আবার ৫৯ বছরের পরও অনেক কর্মকর্তা আছেন। তাঁরা সবাই সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদের আশীর্বাদপুষ্ট। তাঁদের অনেকেই পরিচালকদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে এমডিকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেন। এ-সংক্রান্ত বিভিন্ন অভিযোগ আসার পরই বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন করে এই প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।