TechJano

ব্লকচেইন ও আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স: আর্থিকখাতে সম্ভাবনার নতুন ক্ষেত্র

aiইজেনারেশন লিমিটেড, বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষ আইটি কনসাল্টিং এবং সফটওয়্যার কোম্পানি, “ব্লকচেইন এন্ড এআইঃ গেইম চেঞ্জারস ইন ফিন্যানসিয়াল সার্ভিসেস”শীর্ষক আর্থিক খাতে ব্লকচেইন প্রযুক্তি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভূমিকা নিয়ে একটি গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করে। উক্ত অনুষ্ঠানের সহ-আয়োজক ছিল সিটিও ফোরাম এবং ইনফরমেশন সিকিউরিটি এলায়েন্স। উক্ত বৈঠকে ব্লকচেইন এবং এআই প্রযুক্তির উৎকর্ষতা এবং অর্থনৈতিক খাতে এই দুই প্রযুক্তির ব্যবহারে কি ধরণের পরিবর্তন আনা সম্ভব এ বিষয়ে বিষদ আলোচনা হয়।বুধবার রাজধানীর কাওরান বাজারের বিডিবিএল ভবনে অবস্থিত বেসিস বোর্ডরুমে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

গোলটেবিল বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ইজেনারেশন গ্রুপের চেয়ারম্যান শামীম আহসান। বৈঠকটিতে উপস্থিত ছিলেনসিটিও ফোরামের সভাপতি তপন কান্তি সরকার, ইজেনারেশন গ্রুপের এক্সিকিউটিভ ভাইস চেয়ারম্যান এসএম আশরাফুল ইসলাম, সিটিও ফোরামের সহ-সভাপতি দেব দুলাল রায়, সিটিও ফোরামের মহাসচিব ডঃ ইজাজুল হক, যুগ্ম মহাসচিব আরফে ইলাহি মানিক, তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ মুশফিক আহমেদ, মেঘনা ব্যাংকের হেড অফ আইটি আবুল কাশেম মোহাম্মদ নাজমুল করিম, অগ্রণী ব্যাংকের উপ-মহাব্যবস্থাপক এনামুল মাওলা ও আইসিবি ইসলামি ব্যাংক থেকে এ এম শারিয়ার মজুমদার সহ বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারি ব্যাংকের হেড অফ আইটি এবং উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ।
ইজেনারেশন গ্রুপের চেয়ারম্যান শামীম আহসান বলেন, অর্থনৈতিক প্রযুক্তিতে ব্লকচেইন এবং এআই একটি উন্নয়নশীল জাতির অর্থনৈতিক অবস্থা পরিবর্তন করার ক্ষমতা রাখে। ইজেনারেশন এবং অল্প সংখ্যক স্থানীয় প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন উদ্ভাবনী প্রযুক্তি যেমন আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স,আইওটি, ডাটা এনালিটিক্স, ব্লকচেইন এবং সাইবার সিকিউরিটির উপর দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলেছে। যেহেতু আমাদের দেশের অর্থনৈতিক সেবাগুলো প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে পড়ছে, তাই এই ক্ষাতটি আমাদের ক্লায়েন্ট পোর্টফোলিওর মধ্যে বেশ বড় অংশ জুড়ে রয়েছে। স্থানীয় উল্লেখযোগ্য ব্যাংকগুলোর পাশাপাশি ইজেনারেশন বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ক্লায়েন্টদেরও প্রযুক্তিগত সেবা দিয়ে আসছে।শুধুমাত্র বিশ্বের নিম্ন মুল্যের আইটি সলিউশন প্রদানকারী দেশ থেকে বের হয়ে উদ্ভাবনে নেতৃত্ব দানকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে গ্লোবাল ব্রান্ড এ পরিণত করার জন্য আমরা অক্লান্ত কাজ করে যাচ্ছি।
সিটিও ফোরামের সভাপতি তপন কান্তি সরকার বলেন, দ্রুত পরিবর্তনশীল এই বিশ্বে আমাদের নিত্যনতুন নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এসব সমস্যা এবং জটিলতা দূরীকরণ এবং সহজকরণে ব্লকচেইন এবং এআই উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। বাংলাদেশে এআই বাজারের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। জনস্বাস্থ্য, কৃষি, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, জাতীয় নিরাপত্তা, উৎপাদন কার্যক্রম এবং সেবা খাতে এআই ব্যবহারের ব্যাপক সুযোগ রয়েছে যা আমাদের অবশ্যই বিকশিত করতে হবে। আবার কপিরাইট নিশ্চিতকরণের ক্ষেত্রে ব্লকচেইন একটি বড় ভূমিকা পালন করবে। আমাদের দেশে ভূমি রেকর্ড ব্যবস্থাপনায় ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লব আমাদের জীবনে আমূল পরিবর্তন নিয়ে আসবে। এই পরিবর্তনের সাথে খাপ খাওয়াতে না পারলে আমরা আবার বিশ্ব ময়দানে পিছিয়ে যাব।
ইজেনারেশন গ্রুপের এক্সিকিউটিভ ভাইস চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ জনসংখ্যাবহুল দেশ।ব্লকচেইন, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, মেশিন লার্নিং, ডাটা এনালিটিক্স এসব প্রযুক্তিতে বিশ্ব শ্রমবাজারে ব্যাপক চাহিদার সৃষ্টি হচ্ছে।২০২০ সালের মধ্যে ব্লকচেইনের আন্তর্জাতিক মার্কেটসাইজ দাঁড়াবে ১৪৩০ মিলিয়ন ডলারে আর এআই এর মার্কেটসাইজ দাঁড়াবে ৪৭ বিলিয়ন ডলারে অর্থাৎ অদূর ভবিষ্যতে এই দুই খাতে প্রচুর জনশক্তির চাহিদা হবে।সুতরাং এই ধরণের প্রযুক্তিতে দক্ষতা অর্জন বাংলাদেশের লক্ষ্য হওয়া উচিত।
তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ মুশফিক আহমেদ বলেন, আমরা এমন এক সম্পৃক্ত সভ্যতার দ্বারপ্রান্তে যা নিশ্চিতভাবে শিল্প বিপ্লবকে ছাড়িয়ে যাবে। বাংলাদেশের আগ্রহী যুবসমাজকে এসব প্রযুক্তির উন্নয়নে কাজে লাগানো উচিত।
উল্লেখ্য, ব্লকচেইন হল ডাটা সংরক্ষণ করার একটি নিরাপদ এবং উন্মুক্ত পদ্ধতি যে পদ্ধতি অনুযায়ী ডাটাগুলো বিভিন্ন ব্লকে একটির পর একটি চেইন আকারে সংরক্ষণ করা হয় এবং এতে ডাটার মালিকানা সংরক্ষিত থাকে। আর আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স হল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অর্থাৎ মেশিনকে মানুষের মত বুদ্ধিমত্তা দেওয়ার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল।

Exit mobile version