TechJano

মাধ্যমিক পর্যায়ে শিখন শেখানো কার্যক্রমে ই লার্নিং

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন সেসিপ-এর উদ্যোগে “মাধ্যমিক পর্যায়ে শিখন-শেখানো কার্যক্রমে ই-লার্নিংয়ের ব্যবহার” বিষয়ক একটি গোলটেবিল বৈঠক আজ বৃহস্পতিবার প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলের সুরমা হলে অনুষ্ঠিত হয়।

শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনির সভাপতিত্বে এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মুহিবুল হাসান চৌধুরী। অনুষ্ঠানে অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির ভিসি মুনাজ আহমেদ নুর, অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদ উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নর্থ সাউদ ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক মোঃ রোকনুজ্জামান। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিব ড. মোঃ মাহামুদু-উল-হক।

বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য আসলে আমাদের সর্বপ্রথম মান বলতে কী বুঝায় তা ঠিক করতে হবে। তিনি জানান, আমাদের এমন প্রযুক্তি বাছাই করতে হবে যা কম খরচে দীর্ঘমেয়াদী সুফল বয়ে আনবে ও টেকসই হবে। সভায় শিক্ষা উপমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটকে কাজে লাগিয়ে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে টেলিভিশনের মাধ্যমে কন্টেন্ট সম্প্রচারের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

অধ্যাপক মুনাজ শিক্ষার বিভিন্ন স্তরে প্রযুক্তি ব্যবহারের চাহিদা নিরূপণের ওপর আলোকপাত করেন। তিনি রক্ষণাবেক্ষণ খরচ সাশ্রয়ী হার্ডওয়্যার ব্যবহারের কথা বলেন। অধ্যাপক কায়কোবাদ সাশ্রয়ী প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে মানব-সম্পদ উন্নয়নের কথা বলেন, বাংলাদেশ একটি জনবহুল দেশ হিসাবে উল্লেখ করে বলেন, শিক্ষার গুনগত মান বাড়লে বিদেশ থেকে দেশে টাকা আসবে।

সেসিপের কন্টেন্ট ডেভেলপমেন্ট পার্টনার ইএটিএলের এমডি এম এ মুবিন খান বলেন, ই-লার্নিংয়ের মাধ্যমে দেশের শহর ও গ্রামের মধ্যে শিক্ষার বৈষম্য দূর হবে, শিক্ষার গুনগত মানের উন্নতি হবে। ই-লার্নিংয়ের সুফল পেতে হলে কানেক্টিভটি ও ডিভাইস সুবিধা বাড়াতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। এছাড়া তিনি স্কুলের জন্য একটি স্বতন্ত্র ডাটা নেটওয়ার্ক স্থাপনের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন।

এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) আর্থিক সহায়তায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের সেসিপ কর্মসূচির আওতায় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার মান উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয় যার মধ্যে রয়েছে ৭১০টি বিদ্যালয়ে আইসিটি লার্নিং সেন্টার স্থাপন ও ই-লার্নিং কন্টেন্ট ডেভেলপমেন্ট। এছাড়া ই-লার্নিং নিয়ে সচেতনতা তৈরির জন্য দেশের ৯টি অঞ্চলে ই-লার্নিং মেলার (ক্যাম্পেইন) আয়োজন করা হয়েছে।

ই-লার্নিংয়ের অর্থ হচ্ছে ইলেক্ট্রনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শেখানো। গতানুগতিক পাঠ্যবই আর কাগজে কলমে পড়াশুনার পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সহজে-স্বাচ্ছন্দ্যে পাঠদানই হচ্ছে ই-লার্নিংয়ের অন্যতম উদ্দেশ্য।

ই-লার্নিং বলতে ইন্টারনেটে পাঠ্যপুস্তকের কোনো বিষয়ের ওপর শুধু লেকচার ভিডিও দেখাকেই বুঝায় না। বরং এই ব্যবস্থার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা যেকোনো বিষয় সম্পর্কে পড়ার পাশাপাশি বিভিন্ন অনুশীলনী চর্চা করতে পারে এবং অনুশীলনীগুলোর ধরণ প্রচলিত বইয়ের অনুশীলনীর মত বা অনুশীলনী থেকে ভিন্নও হতে পারে (যেমন: ছোট ছোট গেম)। ই-লার্নিং পদ্ধতিতে একজন শিক্ষক এবং শিক্ষার্থী উভয়েই অংশগ্রহণ করতে পারে।

পাঠদানে তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে একদিকে ছাত্র-ছাত্রীরা তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহারে অভ্যস্ত হবে, অন্যদিকে পাঠের বিষয়বস্তু সম্পর্কে বিস্তারিত ও বিশ্বমানের জ্ঞান অর্জন করতে পারবে। এতে করে শিক্ষার্থীরা বিশ্বের সব দেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করার সক্ষমতা অর্জন করবে, যা বর্তমান সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রচেষ্টাকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নেবে।

Exit mobile version