মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার দায়ে এক তরুণকে দুই বছরের সাজা দিয়েছেন ব্রিটিশ আদালত। ‘সাইবার সন্ত্রাসী’ হিসেবে অভিযুক্ত করে ওই তরুণকে সংশোধনকেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। বিবিসি অনলাইনের খবরে এ তথ্য জানানো হয়।প্রতিবেদনে বলা হয়, অভিযুক্ত তরুণের নাম কেইন গ্যাম্বল। ১৮ বছর বয়সী এই তরুণ ব্রিটিশ নাগরিক। হ্যাকিংয়ের জন্য গ্যাম্বলের লক্ষ্য ছিল মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা ও বিচার বিভাগ। গ্রেপ্তারের পর তিনি তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ স্বীকার করেন। গতকাল বিচারক রায় ঘোষণার পর কান্নায় ভেঙে পড়েন গ্যাম্বলের মা। তবে গ্যাম্বলকে ওই সময় নিস্পৃহ দেখা যায়। বয়স কম হওয়ায় তাঁকে দুই বছরের জন্য কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গত বছরের অক্টোবর মাসে ক্র্যাকার্স উইথ অ্যাটিচুডের (সিডব্লিউএ) প্রতিষ্ঠাতা গ্যাম্বলের বিরুদ্ধে ১০ অভিযোগ আনা হয়। যুক্তরাজ্যের লেস্টারশায়ারে গ্যাম্বলের বাসা থেকে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা (সিআইএ), কেন্দ্রীয় অপরাধ তদন্ত সংস্থা (এফবিআই) ও বিচার বিভাগের তথ্য পাওয়া গেছে।গ্যাম্বল বেশ কয়েকটি অভিযোগের বিষয় স্বীকার করেছেন বলে উল্লেখ করে ওল্ড বেইলে (যুক্তরাজ্য ও ওয়ালসের কেন্দ্রীয় অপরাধ আদালত) জানিয়েছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যকারিতাকে এই ঘটনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। গ্যাম্বলের আইনজীবী তাঁকে ‘অটিস্টিক’ উল্লেখ করে ‘সাদাসিধে’ ও কখনো কারও ‘ক্ষতি’ করতে পারেন না বলে দাবি করেছেন। বিচারক হাডন-কেভ বলেছেন, গ্যাম্বল ‘সাইবার সন্ত্রাসের অভিযান’ পরিচালনা করেছেন। আদালত বলেছেন, গ্যাম্বলের কাছে ইরাক ও আফগানিস্তানে সামরিক ও গোয়েন্দা অভিযানের ‘অত্যন্ত স্পর্শকাতর’ তথ্য রয়েছে। শয়নকক্ষের একটি কম্পিউটার ব্যবহার করে গ্যাম্বল হাজার হাজার নিরাপত্তাকর্মীর তথ্য হ্যাক করেন। ২০১৫ সালের জুন থেকে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত তিনি সিআইএর সাবেক প্রধান জন ব্রেনান এবং এফবিআইয়ের উপপরিচালক মার্ক জুলিয়ানোর তথ্য হাতিয়ে নেন বাড়িতে বসে। এরপর তিনি এজেন্টদের অ্যাকাউন্ট থেকে ই-মেইল পাঠাতে শুরু করেন এবং সামরিক বাহিনীর গোপন তথ্য পাওয়ার সুযোগ পান। গ্যাম্বল উইকিলিকসসহ বেশ কয়েকটি ওয়েবসাইট ব্যবহার করেও তথ্য সংগ্রহ করে তা প্রকাশ করেন। আদালত সূত্রে জানা যায়, মার্কিন বিচার বিভাগ থেকে ২০ হাজার এফবিআই কর্মীর বিস্তারিত তথ্য হ্যাক করে গ্যাম্বল একটি বার্তা আপলোড করেন। এতে লেখা ছিল, ‘এটা ফিলিস্তিনিদের জন্য।’ ওই সময়ের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি জেহ জনসনের বাসার টিভি হ্যাক করে সেখানে বার্তা লেখেন, ‘তুমি আমার।’ এমনকি জনসনের স্ত্রী সুসান ডিমার্কোকে একটি ভয়েস মেইল পাঠিয়ে বিরক্ত করেন গ্যাম্বল। তাতে তিনি বলেছিলেন, ‘হাই ভুতুড়ে, আমি কি তোমাকে ভয় পাইয়ে দিয়েছি?’ গ্যাম্বল ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্সের সাবেক পরিচালক জেমস ক্ল্যাপারের বাড়ির ফোন ও ইন্টারনেটও হ্যাক করেন।