ব্যবসায়ীদের জন্য দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম শীর্ষস্থানীয় বাণিজ্যিক প্লাটফর্ম ‘পাইন ল্যাবস’ এ বিনিয়োগের ঘোষণা দিলো মাস্টারকার্ড। এই বিনিয়োগটি ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়ার ক্রমবর্ধমান অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এশিয়া অঞ্চলজুড়ে গ্রাহকদের জন্য সুবিধাজনক ই-পেমেন্ট অপশন গুলোর দ্রুত সম্প্রসারণ করা এই বিনিয়োগটির লক্ষ্য। এই অংশীদারীত্বের ফলে গ্রাহকরা ইন-স্টোর এবং অনলাইনের চেকআউট এ বিভিন্ন ধরনের কার্ডের মাধ্যমে রিয়েল-টাইম পেমেন্টে কিস্তি-ভিত্তিক সুবিধা উপভোগ করার সুযোগ পাবেন।
একই সাথে, এই চুক্তির মাধ্যমে উভয় প্রতিষ্ঠান বেশ কিছু বাড়তি সুযোগ সুবিধা দিবে। যার মধ্যে রয়েছে, পাইন ল্যাবসের এন্ড-টু এন্ড স্টোরড ভ্যালু সমাধান। এর ফলে দক্ষিণ এশিয়ার বাজারের খুচরা বিক্রেতা এবং ব্যবসায়ীরা যেখানে কাগজ ব্যবহার করে, তার পরিবর্তে এই সলুশনগুলো ব্যবহার করা যাবে। চুক্তির শর্তাবলী প্রকাশিত হয় নি।
পাইন ল্যাবস এক দশক আগে অফলাইনে খুচরা অর্থপ্রদান প্রতিষ্ঠান হিসাবে যাত্রা শুরু করে। ভারত, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং মধ্য প্রাচ্যর মার্কেটে পেমেন্ট একসেপটান্স প্রযুক্তি, স্টোরড ভ্যালু পণ্য, ইন-স্টোর কাস্টমার ক্রেডিটসহ ব্যবসায়ীদের জন্য নানাবিধ সল্যুশন প্রদান করার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি ক্রমেই বিকশিত হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে প্রতি বছর ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের লেনদেন সম্পন্ন করে, যার মাধ্যমে ৪,৫০,০০০ টি নেটওয়ার্ক পয়েন্টে প্রায় ১,৪০,০০০ ব্যবসায়ীকে সেবা দেয়া হয়।
দক্ষিণ এশিয়ার ক্রমবর্ধমান ডিজিটাল প্রক্রিয়ায় সংযুক্ত মধ্যবিত্ত সমাজে একটি বড় অংশ অনলাইনে পণ্য কেনাবেচার ক্ষেত্রে “এখনই কিনুন, পরে পরিশোধ করুন” এই ধরণের লেনদেনের খোঁজে থাকেন। এই চুক্তিটি ব্যবসায়ী, ব্র্যান্ড মালিক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ইনোভেটিভ সল্যুশনের সুযোগ প্রদানের মাধ্যম গ্রাহকদের পছন্দকে অগ্রাধিকার দিয়ে সর্বোচ্চ সুযোগ দিবে। পাইন ল্যাবস এমন একাধিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং অংশীদারদের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে, যারা ব্যবসায়ী এবং গ্রাহকদের জন্য কিস্তি অর্থায়নের ডিজাইন এবং ডেলিভারি করে থাকে।
“পাইন ল্যাবস ব্যবসায়ীদের কাছে সর্বোচ্চ মানের যে পণ্য সরবরাহ করে থাকে, সেগুলোর কথা বিবেচনা করলে এই সম্পর্কটি খুবই ইতিবাচক।”- বলছিলেন পাইন ল্যাবস এর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান লোকভীর কাপুর।
তিনি আরো বলেন, “বিশ্বব্যাপী মাস্টারকার্ডের উপস্থিতি এবং প্রযুক্তি অবকাঠামো ব্যবহার করার মাধ্যমে প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর ক্ষেত্রে একসঙ্গে কাজ করার অনন্য একটি সুযোগ রয়েছে আমাদের। এর মাধ্যমে ভারতের ভেতরের ও বাইরের গ্রাহকদের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটানোও সম্ভভ হবে।”
২০১৯ সালের মে মাসে ‘পিডব্লিউসি’ এবং ‘দ্য অ্যাসোসিয়েটেড চেম্বারস অব কমার্স অব ইন্ডিয়া’র করা যে সমীক্ষাটি প্রকাশিত হয়েছে, সেখানে দেখা যাচ্ছে যে, ভারতে ভোক্তা পণ্যগুলিতে কিস্তিভিত্তিক অর্থ প্রদানের বাজার ২০২১ সাল নাগাদ ১৬.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছাবে। ২০২৫ সালের মধ্যে যেটার বাজার মূল্য বৃদ্ধি পেয়ে ৫২.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
“মানুষ কীভাবে কেনাকাটা করবে সেটা এখন ঠিক করছি স্মার্ট ডিভাইসগুলো। এই অংশীদারিত্বের মাধ্যমে আমরা নতুন নতুন উদ্ভাবনী সমাধান বের করা অব্যহত রাখছি এবং সাধারণ মানুষের জন্য হাতের আঙুলের ছোঁয়ায় অর্থ পরিশোধের নতুন সুযোগ করে দিচ্ছি।“-বলছিলেন মাস্টারকার্ডের এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের কো-প্রেসিডেন্ট আরি সরকার।
“পাইন ল্যাবের সাথে যৌথ প্রচেষ্টায় আমরা দক্ষিণ এশিয়াসহ বিশ্বজুড়ে আমাদের গ্রাহকদের কাছে তাদের পছন্দকে পৌঁছে দেওয়া এবং সেই পছন্দের অংশীদার হওয়ার কৌশলকে পুনরায় জোরদার করছি”।