বছর দশেক আগের কথা। যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত ম্যাকওয়ার্ল্ড সম্মেলনে ‘কি-নোট স্পিকার’ হিসেবে কথা বলছিলেন অ্যাপলের সহপ্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবস। ওই সময় খাম থেকে স্টিভ বের করে আনেন একটি যন্ত্র, যা দেখতে ল্যাপটপের মতো। তারপর ওই যন্ত্র দেখিয়ে তিনি যা বললেন, তার মানে হচ্ছে, ম্যাকবুক এয়ার নামের ওই নোটবুক হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে পাতলা নোটবুক। আর ঘোষণা দেন নোটবুকটি বাজারে আনার। অনুষ্ঠানটিতে উপস্থিত দর্শকেরাও অবাক হন পাতলা ল্যাপটপটি দেখে। এরপর থেকে আজও জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছে অ্যাপলের ম্যাকবুক এয়ার।
অনেক প্রযুক্তি বিশ্লেষক মনে করেন, ২০০৮ সালের ১৫ জানুয়ারির পর থেকে ল্যাপটপের ভবিষ্যৎ বদলে গেছে। অবশ্য সে সময় বাজারে পাতলা ল্যাপটপ যে ছিল না, তেমনটা কিন্তু নয়। ওই সময় বেশির ভাগ ল্যাপটপেই পাওয়া যেত না পূর্ণাঙ্গ কি-বোর্ড। আর সেখানে ম্যাকবুক এয়ারের ছিল দীর্ঘস্থায়ী কি-বোর্ড, বাজারে থাকা অন্যান্য ল্যাপটপের তুলনায়। অন্যান্য যন্ত্রাংশও ছিল একই মানের। আর ওজন এক কিলোগ্রামেরও কম। এ ছাড়া ম্যাকবুক এয়ারে সিডি ড্রাইভ ও একাধিক পোর্ট বাদ দেওয়া হয়। তবে এতে জুড়ে দেওয়া হয়েছিল নতুন মাল্টি-টাচ ট্র্যাকপ্যাড ও দ্রুতগতির সলিড স্টেট ড্রাইভ (এসএসডি)। এটির দাম অবশ্য বেশি ছিল। কিন্তু ১ হাজার ৭৯৯ মার্কিন ডলারের ম্যাকবুক এয়ারের মতো একটি ল্যাপটপ বানাতে উইন্ডোজভিত্তিক ল্যাপটপ নির্মাতাদের বছরের পর বছর লেগে গেছে। তাই দামের চেয়ে এর গুণাগুণটাই হয়ে ওঠে মুখ্য।
গত ১০ বছরে ৭টি ম্যাকবুক এনেছে অ্যাপল। তবে ম্যাকবুক এয়ারের নকশা পরিবর্তনে নারাজ প্রতিষ্ঠানটি। তাই নতুন নকশায় এর চেয়েও পাতলা ল্যাপটপ ‘ম্যাকবুক’ এনেছে তারা। তবু বদলায়নি স্টিভের ‘ভিন্ন কিছু ভেবো’ চিন্তার সফল ও জনপ্রিয় ম্যাকবুক এয়ারের নকশা। এখন বাজারে থাকা ম্যাকবুক এয়ারের সংস্করণও এসেছিল প্রায় তিন বছর আগে। এ বছর নতুন ম্যাকবুকের দেখা মেলার সম্ভাবনা রয়েছে, তবে সেটা ম্যাকবুক প্রো-এর পরিবর্তে।