TechJano

যুক্তরাজ্য ডিজিটাল অর্থনীতিতে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবে 

ডিজিটাল অর্থনীতিতে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থানকে সুসংহত করতে সব ধরনের সহযোগিতা করবে যুক্তরাজ্য। যুক্তরাজ্য সফররত বাংলাদেশের আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সাথে যুক্তরাজ্যের ডিজিটাল, কালচার, মিডিয়া অ্যান্ড স্পোর্ট মন্ত্রী ম্যাট ওয়্যারম্যান দ্বি-পাক্ষিক বৈঠককালে এমন প্রতিশ্রুতি দেন । যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট ওয়েস্টমিনস্টারে আয়োজিত বৈঠকে তারা দু’দেশের পারস্পারিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় বিশেষ করে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সার্বিক অগ্রগতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।

বৈঠকে পলক ম্যাটকে জানান, বাংলাদেশে দ্রুত বিকাশ লাভ করছে ডিজিটাল অর্থনীতি। দেশের ১০ কোটির মতো মানুষ এখন ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকে। আর এটি ডিজিটাল অর্থনীতির সবেচেয়ে সম্ভাবনাময় দিক। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি দ্রুত গতিতে ডিজিটাল হচ্ছে।

পলক বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্প বাস্তবায়নে সরকার ইতিমধ্যেই ডিজিটাল অর্থনীতির ৩টি এজেন্ডা গ্রহণ করেছে। এগুলো হলো প্রযুক্তি দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলা, দেশের সব নাগরিককে ব্রডব্যান্ড সংযোগের আওতায় নিয়ে আসা এবং ক্যাশলেস সোসাইটি গড়ে তোলা। মোবাইল ব্যাংকিং থেকে ডিজিটাল ওয়ালেটে রূপান্তরের কাজও শেষ পর্যায়ে। দেশের নারীরা ফ্রিল্যান্সিংয়ে উল্লেখযোগ্য হারে এগিয়ে আসছে। তরুণ্য শক্তিই এই ডিজিটাল অর্থনীতির সবচেয়ে বড় শক্তি বলে তিনি উল্লেখ করেন। বৈঠকে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশী রাষ্ট্রদূত সাদিয়া মুনা তাসনিমসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরাম বাংলাদেশকে কী ভাবে দেখছে সে বিষয়টি ম্যাটের দৃষ্টিতে আনা হয়। তাকে জানানো হয়, অনলাইন শ্রমশক্তির দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। সাশ্রয়ী শ্রমবাজার এবং মূলধন ঝুঁকি এড়াতে যুক্তরাজ্যের আইটি কোম্পানিগুলোও বাংলাদেশের দিকে ঝুঁকছে। মূলতঃ ২০০৮ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘোষণার পর দেশ এখন ডিজিটাল অর্থনীতির দিকে হাটছে।

বৈশ্বিক বিভিন্ন অর্জন ও উপাত্ত তুলে ধরে বৈঠকে জানানো হয়, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে একসময় কৃষির অবদান ছিলো ৮০ শতাংশ। এখন দেশের অর্থনীতিতে কৃষির অবদান মাত্র ১৯ শতাংশ। তারপরও বাংলাদেশ এখন খাদ্য উদ্বৃত্বের দেশে রূপান্তরিত হয়েছে। মেধা ও প্রযুক্তির সমন্বয়ে খাদ্য উৎপাদনে প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হয়েছে। আবার উৎপাদিত কৃষি পণ্য সরাসি ভোক্তার কাছে পৌঁছাতে এখন ব্যাপকভাবে ডিজিটাল মাধ্যম, মোবাইল পেমেন্ট সিস্টেম ব্যবহৃত হচ্ছে। ফেসবুকের মাধ্যমেও হাজার হাজার তরুণ গড়ে তুলছে নিজেদের কর্মসংস্থান।

বৈঠকে বাংলাদেশের অগ্রগতিকে অভাবনীয় বলে মন্তব্য করেন ম্যাট ওয়্যারম্যান। তিনি ডিজিটাল অর্থনীতি ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সব ধরনের সহযোগিতার করতে যুক্তরাজ্য সরকারর পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতি দেন।

বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে স্টার্টআপ সংস্কৃতি গড়ে তুলতে পারস্পারিক যোগাযোগ ও মতবিনিময় করা, ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণ, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব বিষয়ে সক্ষমতা তৈরি করতে ইমার্জিং টেকনোলজি, আইওটি, বিগ ডাটা, ব্লক চেইন, কৃত্রিম বুদ্ধিমাত্তাসহ উদীয়মান প্রযুক্তি সম্পর্কে যৌথভাবে গবেষণা বিষয়ে উভয়ে একমত পোষণ করেন।

এছাড়া বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক ও ফিনটেক এরিয়াতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করার লক্ষে দুই দেশের মধ্যে যৌথভাবে সমঝোতা চুক্তির সম্পাদনের বিষয়ে এক মত পোষণ করা হয়। এই বছর 2020 সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উদ্‌যাপন উপলক্ষে আইসিটি বিভাগ দেশি-বিদেশি স্টার্টআপদের জন্য “বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্রান্ট” ঘোষণা করেছে। এতে ব্রিটিশ স্টার্টআপগণও অংশগ্রহণ করবে বলে বৈঠকে জানানো হয়।

Exit mobile version