TechJano

যে অ্যাপ সবার দরকার

‘সেলফ প্রটেক্ট’ অ্যাপ তৈরির জন্য এটুআইয়ের ‘উদ্ভাবকের খোঁজে ২০১৭-তে ও সলভ-এ-থন-২০১৭ দেড় হাজার উদ্ভাবকের মধ্যে জাতীয় পর্যায়ে নির্বাচিত সেরা ১৫ উদ্ভাবকের একজন নির্বাচিত হয়েছিলাম।এর আগে ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে খুলনা বিভাগীয় ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলা ও মেহেরপুর জেলা ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলায় শ্রেষ্ঠ তরুণ উদ্ভাবকের সম্মাননা পাই। এবং ২০১৮ সালে আবারও ও মেহেরপুর জেলা ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলায় শ্রেষ্ঠ তরুণ উদ্ভাবকের সম্মাননা পাই। এই অ্যাপ উদ্ভাবনের জন্য ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনির্ভাসিটি আমাকে ১০০% ওয়েবার বা স্কলারশিপ দেই এবং আমি বিনা টিউশন ফি তে কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে লেখাপড়া করেছি।

সেলফ প্রটেক্ট অ্যাপটির ডাউনলোড করতে ভিজিট করুন www.selfprotectapp.com অথবা https://goo.gl/2SMJJt

অ্যাপটি কেন ব্যবহার করবেন?
বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরণের অপরাধ যেমন নারী ও শিশু নির্যাতন, মাদক পাচার, মানি লন্ডারিং, চাঁদাবাজি, ভাড়াটে খুন, প্রতারণা, মানব পাচার, ডাকাতি, দুর্নীতি, কালো বাজারি, রাজনৈতিক সহিংসতা, সন্ত্রাসবাদ ও অপহরণ, ইত্যাদি সংঘঠিত হয়। এসব অপরাধের প্রভাবে জনসাধারণের নিরাপত্তা ব্যাহত হয়। বাংলাদেশ পুলিশ এর সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী বিগত ২০১7 সালে সারা বাংলাদেশ পুলিশের হিসাব অনুযায়ী প্রায় 213529 টি অপরাধ সংঘটিত হয়েছে যার মধ্যে চুরি, ডাকাতি, হত্যা, রাহাজানি, দাঙ্গা-হাঙ্গামা, অপহরণ, নারী ও শিশু নির্যাতন সহ অন্যান্য অপরাধ রয়েছে। অপরাধ সংঘঠনের সময় বা পরে দ্রুত আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে অবহিত করার মত কোন সহজ সমাধান এখনও আমাদের নেই। বিপদের মূহুর্তে কারও পক্ষে পুলিশকে দ্রুত অবহিত করার বা সাহায্য প্রার্থনা করার সহজ কোন ব্যবস্থা না থাকায়, সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত বিভিন্ন বিপদে অসহায়ত্বের শিকার হচ্ছে। একটি দ্রুত অবহিতকরণ ব্যবস্থা বিভিন্ন ভাবে এক্ষেত্রে উপকারে আসতে পারে। যেমন, ১) ডাকাত ও ছিনতাই কারীর কবল থেকে রক্ষা পেতে। ২) স্কুল-কলেজগামী ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত ও অপহরণ কারীর কাছ থেকে রেহাই পেতে। ৩) কোন দুস্কৃতিকারীকে পুলিশের হাতে ধরিয়ে দিতে। ৪) অপরাধীর আক্রমনের শিকার ব্যক্তিকে দ্রুত সাহায্য ও সহযোগিতা করতে। ৫) অপরাধ সংঘটিত স্থান দ্রুত খুঁজে বের করতে পুলিশ কে সহায়তা। ৬) অনাকাঙ্খিত দুর্ঘটনার সময় পুলিশের সহায়তা পেতে। ৭) সন্ত্রাসী কর্মকান্ড রুখতে পুলিশকে সহায়তা ৮) দূর্ঘটনার সময় জরুরী সেবা যেমন অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, নিকটস্থ হাসপাতাল ইত্যাদি সেবা পেতে। এছাড়াও প্রয়োজনীয় নিকটস্থ সেবা সমূহ এটিএম বুথ, হোটেল-রেস্টুরেন্ট ইত্যাদি সহজেই খুঁজে পেতে।৯. হারিয়ে বা চুরি যাওয়া মোবাইল ফোনটি খুঁজে পেতে।

অ্যাপটি কিভাবে কাজ করবে?
ইন্টারনেট সংযোগ না থাকলেও কাজ করে এটি। ফোন হারিয়ে গেলে খুঁজে পেতেও কাজে লাগবে এ অ্যাপ।
১. অ্যাপটি স্মার্টফোনে ইনস্টল করা থাকলে, যে কোন বিপদের সময় ফোনের পাওয়ার বাটনটি পরপর ৩-৪ বার প্রেস(Press) করার সঙ্গে সঙ্গেই নিকটস্থ আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা ও ফ্রেন্ডস এবং ফ্যামিলির কাছে ব্যাক্তির অবন্থানসহ প্রয়োজনীয় বার্তা পৌছে যাবে। মুহুর্তের মধ্যেই আইন-প্রয়োগকারী সংস্থা ও ফ্রেন্ডস এবং ফ্যামিলি ঐ ব্যাক্তির অবস্থান জানতে পারবে এবং তাকে সাহায্য করতে পারবে।
২.এমনকি ফোন হারানো বা চুরি হয়ে গেলেও মোবাইল ফোনের সিম পরিবর্তন করলে ফোনটির অবস্থান, ব্যবহৃত নতুন সিমের সিরিয়াল নম্বর ও ফোনের আই.এম.ই.আই.(IMEI) নম্বর অ্যাপে সেটআপকৃত ফ্রেন্ডস এবং ফ্যামিলি নম্বরে পৌঁছে যাবে। এই তথ্যগুলো আইন-প্রয়োগকারী সংস্থাকে সরবরাহ করলে ব্যবহারকারী তার ফোনটি ফিরে পেতে সক্ষম হবে।
৩.এই অ্যাপের মাধ্যমে জরুরী সেবা যেমন পুলিশ স্টেশন, হাসপাতাল, ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্স, ব্লাড ব্যাংক ইত্যাদির লোকেশনসহ ফোন নম্বর সংগ্রহ করতে পারবে।
৪.ব্যবহারকারীর নিকটস্থ বাস-ষ্টান্ড, এটিএম বুথ, ব্যাংক, রেস্টুরেন্ট, শপিংমল ইত্যাদি অ্যাপ স্ক্রিণে দেখা যাবে এবং ব্যবহারকারী তা থেকে তার প্রয়োজনীয় সেবা গ্রহণ করতে পারবেন।
৫.এছাড়াও এই অ্যাপের মাধ্যমে ব্যবহারকারী আইন-প্রয়োগকারী সংস্থা, মানবাধিকার কমিশন, আইনী সহায়তা কেন্দ্র, দূর্নীতি দমন কমিশন এর কাছে প্রয়োজনীয় অভিযোগ এবং মতামত জানাতে পারবে ।

অ্যাপটি কিভাবে কাজ করবে আরো বিস্তারিত:
সেবা পাওয়ার জন্য ব্যবহারকারীকে মোবাইলে (স্মার্টফোনের) অ্যাপটি ইন্সটল করে সবসময় সক্রিয় রাখতেহবে। যে কোনো বিপদের সময় স্মার্টফোনের লকথাকাঅবস্থায়ফোনের পাওয়ার বাটনটি পরপর ৩ বার প্রেস করার সঙ্গে সঙ্গেই নিকটস্থ আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা ও ফ্রেন্ডস এবং ফ্যামিলির কাছেব্যাক্তির অডিও, ফুটেজ এবং অবস্থান মানচিত্রসহ প্রয়োজনীয় বার্তা পৌঁছে যাবে। এমনকি মোবাইল ফোনটি হারিয়েগেলেও বা ছিনতাইকারী নিয়ে যাওয়ার পর ফোনের সিমপরিবর্তন করলে অ্যাপটিথেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ওই মোবাইল ফোনটির অবস্থান, ব্যবহৃত নতুন সিমনাম্বার, ফোনের আই.ই.এম.আই সহ পুলিশের ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন ও ফ্রেন্ডস এন্ডফ্যামিলির নাম্বারে চলে আসবে।

অ্যাপটি ব্যবহার করার জন্য ব্যবহারকারীর কোন ইন্টারনেট কানেকশন বা ডাটা অন থাকা লাগবে না। অর্থাৎ ব্যবহারকারীর ইন্টারনেটকানেকশন অফ থাকলেওজিপিএস অন থাকার জন্য সার্ভিস প্রোভাইডার বা মোবাইল অপারেটরের সাহায্যে সেন্ট্রাল সার্ভার এর মাধ্যমে বার্তাটি নিকটস্থ পুলিশ স্টেশনে ও অ্যাপ এ সেটআপকৃত ফ্রেন্ডস এন্ডফ্যামিলির নাম্বারে পৌঁছোবে। মোবাইল ফোনটি ছিনতাইকারী নিয়ে যাওয়ার পর সিম পরিবর্তন করলে অ্যাপটি থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ওই মোবাইল ফোনটির অবস্থান পুলিশের ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন ও ফ্রেন্ডস এন্ড ফ্যামিলির নাম্বারে চলে আসবে। এতে করে ছিনতাইকারীর অবস্থান জানা সম্ভব ও তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হবে।
এছাড়াও এই অ্যাপের মাধ্যমে আইন-প্রয়োগকারী সংস্থা, আইনী সহায়তাকেন্দ্র, মানবাধিকার কমিশন, নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ সংস্থার কাছেপ্রয়োজনীয় অভিযোগ এবংমতামত জানাতে পারবেন। এবং অ্যাপের মাধ্যমে জরুরী সেবা যেমন হাসপাতাল, ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্স, ব্লাড ব্যাংক ইত্যাদিসাহায্য সহায়তা নিতে পারবে। ব্যবহারকারীর নিকটস্থ হাসপাতাল, ফায়ারসার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্স ,এটিএম বুথ, ব্যাংক, আবাসিক হোটেল,রেস্টুরেন্ট,শপিংমল ইত্যাদি অ্যাপ স্ক্রিণে দেখা যাবে এবং ব্যবহারকারী তা খেকেতারপ্রয়োজনীয় সেবাটা গ্রহণ করতে পারবে।
অ্যাপটি নিয়ে আমার প্রত্যাশা :
সরকার যদি এই অ্যাপটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করতে অনুমতি ও অ্যাপসটির নির্দিষ্ট কিছু সীমাবদ্ধতা দূরীকরণে এবং অ্যাপসটিরউন্নতি সাধনে সার্বিক সহযোগিতা করেন, তাহলে সরকারের স্বপ্নের ডিজিটাল বাংলাদেশের জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করণে আরো একটি নতুন মাত্রা যুক্ত হবে। সেই সাথে সফলতার মুখ দেখবে আমার উদ্ভাবন।

ইতোমধ্যে অ্যাপসটি পাইলট প্রকল্প আকারে স্বাধীনতার স্তূতিকাগার মেহেরপুর জেলায় প্রাথমিকভাবে বাস্তবায়েনর জন্য চালু হয়েছে। অ্যাপটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রয়োজনী সব ধরণের সহযোগীতার আহ্বান জানিয়েছি। মেহেরপুরের জেলা পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসক মহোদয় মেহেরপুর জেলাতে এই অ্যাপটির পরীক্ষামূলকভাবে শুরু করেছেন।

এ ধরণের অ্যাপ বানানোর চিন্তা কিভাবে এলো:
২০১২ সালের মার্চে একদিন চুয়াডাঙ্গার রেলওয়ে স্টেশন থেকে সন্ধায় বাসায় (মেহেরপুর) ফিরছিলাম। হঠাৎ ৭-৮ জনের একটা ছিনতাইকারীর দল এসে আমার মানিব্যাগ ওমোবাইল ফোনটা কেড়ে নিয়ে যায়। ঠিক তখনই আমার মাথায় একটা আইডিয়া আসে। সারাদেশে আমার মতো প্রতিদিন এমন অসংখ্য মানুষ ছিনতাইকারী কিংবাঅপহরণকারীর কবলে পড়ছেন। এমন অনাকাঙ্ক্ষিত বিপদের সময় খবরটা তাৎক্ষণিক কীভাবে আপনজন বা আশেপাশের পুলিশ প্রশাসনের কাছে পৌঁছে দেয়া যায়। এ নিয়ে ভাবতে থাকি।

স্মার্টফোনে যদি এমন একটা অ্যাপ্লিকেশন (সফটওয়্যার) থাকত, যেটার মাধ্যমে একটা বাটন চাপার সাথে সাথেই বিপদের কথা পুলিশ প্রশাসনের কাছে জানানো সম্ভব, তাহলে হয়তো ছিনতাইকারীদের পুলিশে ধরিয়ে দিয়ে হারানো মোবাইল ফোনটা ফিরে পাওয়া যেতো। সেদিন থেকেই আইডিয়াটিকে কীভাবে মোবাইল অ্যাপে রূপান্তরিতকরা যায় তা নিয়ে গবেষণা করতে থাকি।বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনে দেশব্যাপী পরিচালিত মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন (অ্যাপ) উন্নয়নে সচেতনতা ও দক্ষতাবৃদ্ধির কর্মসূচির আওতায় সারা দেশের ন্যায় চুয়াডাঙ্গার ফার্স্ট ক্যাপিটাল ইউনির্ভাসিটি অব বাংলাদেশ এ ২০১৪ সালের ৮ থেকে ১২ ফেব্রুয়ারি ৫ দিনের মোবাইলঅ্যাপ্লিকেশন (অ্যাপ) তৈরির প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ নিয়ে মোবাইল অ্যাপ তৈরির শিক্ষা লাভ করি।

মোবাইল অ্যাপ ডেভোলোপমন্টের জন্য প্রশিক্ষণ নেয়ার সময় আমার প্রশিক্ষকদের সাথে আইডিয়াটিা শেয়ার করলে তারা আমাকে সব ধরণের সাহায্য করার আশ্বাস দেন। তখন তাদের নির্দেশনা ও পরামর্শে স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করা শুরু করি। তার পর থেকে প্রশিক্ষক ও মেন্টরদের সহযোগিতায় অ্যাপের বিভিন্নফিচার যোগ করতে থাকি। দীর্ঘ দুই বছর অক্লান্ত পরিশ্রম করে শেষ হলো নাগরিক নিরাপত্তা, জরুরি সাহায্য ও অপরাধ দমনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাকেসহায়তাকারী মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ‘সেলফ প্রটেক্ট’ অ্যাপের কাজ। এরপরে বিভিন্ন ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলা, বিজ্ঞান মেলাতে প্রদর্শন করতে থাকি এরপর গণমাধ্যমে এটিপ্রকাশ পায়। বর্তমানে এটি উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে।

আমার ঠিকানা ও শিক্ষাজীবন:
মেহেরপুর মুজিবনগর উপজেলার মহাজনপুর ইউনিয়নের বাবুপুর গ্রামে জন্ম । বাবা মো. জামাত আলী, মা শাহানারা খাতুন গৃহিনী। দুই ভাই ও একবোনের মধ্যে সবার বড় ।মা-বাবার স্বপ্ন ছিল ছেলে বড় হয়ে ডাক্তার হবে। মেহেরপুর পৌর কলেজ থেকে ২০০৯ সালে এইচএসসি পাস করে ডাক্তার হওয়ার জন্য ঢাকাতে মেডিকেল কোচিং শুরুকরি। কিন্তু আমার স্বপ্ন ছিলো গতানুগতিক ধারা থেকে বের হয়ে ব্যতিক্রমী উদ্ভাবনী কিছু করার। এরজন্য মেডিকেল ভর্তিপরীক্ষায়ও অংশগ্রহণ করিনি। অন্য কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েও ভর্তি পরীক্ষা দেই নাই। সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার উদ্দেশ্যে ভর্তি হই রাজধানীর ড্যাফোডিলইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএসসি ইন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে।

কয়েক সেমিস্টিার পড়ার পর মাথায় জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে ঢাকায় দীর্ঘদিন চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ না হলে ডাক্তার পরামর্শে সুস্থ হওয়ার জন্য রাজধানী ছেড়ে গ্রামেরবাড়িতে চলে যেতে হয় । দুই বছর বাড়িতে চিকিৎসার পরে সুস্থ হয়ে ওঠি। চিকিৎসায় অনেক টাকা ব্যয় হওয়াতে আর্থিক সমস্যার জন্য আমার আর ঢাকায় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনির্ভাসিটিতে ফেরা সম্ভব হলো না। পরে পার্শ্ববর্তী চুয়াডাঙ্গায় ফার্স্ট ক্যাপিটাল ইউনির্ভাসিটি অব বাংলাদেশে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ডইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তি হই। তখনই সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনে দেশব্যাপী পরিচালিত মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন (অ্যাপ) উন্নয়নে সচেতনতা ওদক্ষতা বৃদ্ধির কর্মসূচিতে অংশ নেন। এরপরেই শুরু হয় তার উদ্ভাবনী কার্যক্রম। কিন্তু পারিবারিক আর্থিক সমস্যার কারণে গবেষণা ও পড়াশুনা এক সাথে চালিয়ে যেতে অনেক কষ্ট হয় ।

আবার ঢাকায় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনির্ভাসিটিতে ফেরার কারণ, একদিনড্যাফোডিল বিশ্বদ্যিালয়ের চেয়ারম্যান সবুর খান স্যারকে ফেসবুকে ম্যাসেজের মাধ্যমে আমার গবেষণা ও অ্যাপ সম্পর্কে জানালে তিনি বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করেআমাকে দেখা করতে বলেন। দেখা করে গবেষণা ও অ্যাপ সম্পর্কে বললে এর জন্য প্রশংসা করেন। দুই বছর আগেও ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিংবিভাগে পড়ালেখা করা, চলে যাওয়ার কারণ এবং বর্তমানে পারিবারিক আর্থিক সমস্যার কারণে গবেষণা ও পড়াশুনা চালিয়ে যেতে কষ্টের কথা শুনে স্যার সঙ্গে সঙ্গেইআমাকে স্কলারশিপ দেয়ার কথা জানান। তখন আমি ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রেডিট ট্রান্সফার করে সিএসইতে ভর্তি হই এবং এখান থেকে পড়াশুনা শেষ করেছি।

স্যার আমাকে নতুনভাবে স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার আশ্রয় দিয়েছেন। এক সময়ে ভেঙে যাওয়া স্বপ্নকে বাস্তবে দেখার প্রেরণা যুগিয়েছেন। তখন থেকেই তিনি আমাকে সার্বিকভাবে সহায়তা করছেন। তিনি আমাকে এই সাপোর্ট না দিলে হয়তো এই উদ্ভাবনের কাজটা আমার পক্ষে করা সম্ভব হতো না। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. সৈয়দ আখতার হোসেন স্যার সহযোগিতা করছেন।

তথ্যপ্রযুক্তি জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে দেশ ও জনকল্যাণমূলক প্রযুক্তির উদ্ভাবন ও জননিরাপত্তামূলক আরও যুগোপযোগী বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার তৈরি করে পরিবার,সমাজ, দেশ ও জাতিকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কাজ করে সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কাজে অংশীদার হওয়ার ইচ্ছা।
ইতিমধ্যে আমার উদ্ভাবনী টিম নিয়ে সেলফ প্রটেক্ট (www.selfprotectapp.com) নামের একটি স্টার্টআপ আইটি ফার্ম শুরু করেছি।

লেখক: সাদ্দাম হোসেন। উদ্ভাবক। 

Exit mobile version