ইন্টারভিউ

রোবটিক্স গবেষণায় কাজ করে যাচ্ছে জাপান-বাংলাদেশ রোবটিক্স গবেষণা কেন্দ্র

By Baadshah

July 19, 2019

বর্তমানে আমরা এমন এক যুগে বাস করছি যেখানে আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি যেমন রোবটিক্স, কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা,  মেশিন লার্নিং, আইওটি(ইন্টারনেট অফ থিংকস), বিগ ডেটা ইত্যাদি বিষয়ে জ্ঞান না থাকলে একটি দেশ অনেক পিছিয়ে যাবে। সম্প্রতি জাপান বাংলাদেশ রোবটিক্স অ্যান্ড এডভান্স টেকনোলজি রিসার্স সেন্টারের এক বছর পূর্তি হয়েছে। এই উপলক্ষে জাপান বাংলাদেশে রোবটিক্স অ্যান্ড এডভান্স টেকনোলজি রিসার্স সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মাদ ফারহান ফেরদৌস গত এক বছরে প্রতিষ্ঠানটির অর্জন ও সাফল্য এবং সেই সাথে আগামী দিনগুলোর কর্ম পরিকল্পনা ইত্যাদি বিষয় তুলে ধরেছেন।

প্রতিষ্ঠানটির লক্ষ্য পূরনঃ-

প্রতিষ্ঠানটি গঠিত হয়েছিলো বাংলাদেশ, জাপান, কোরিয়া, ভারত, আমেরিকা ইত্যাদি দেশের গবেষক, প্রফেসর এবং বিজ্ঞানমনস্ক শিক্ষার্থীদের নিয়ে যার মূখ্য উদ্দেশ্য ছিলো দেশ বিদেশের তরুণ-তরুণী, ছাত্র-ছাত্রীদের একত্রে করে দেশ ও আন্তজার্তিক পর্যায়ে যতদূর সম্ভব সবার মাঝে রোবটিক্স তথা প্রযুক্তি ভিত্তিক শিক্ষার ছোয়া পৌছানো। যার জন্য আমাদের প্রতিষ্ঠান গতবছর বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশগ্রহন করে তার মাঝে আমেরিকাতে ১ টি, বাংলাদেশে ৩ টি। উক্ত সম্মেলন গুলোতে বিভিন্ন সেমিনার, ওয়ার্কশপ এবং বিভিন্ন গবেষনা প্রবন্ধ উপস্থাপিত হয়েছিলো এবং আমি নিজেও কিছু করেছিলাম। এছাড়াও দেশীয় পর্যায়ে বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে আধুনিক প্রযুক্তি যেমনঃ রোবটিক্স, কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা, প্রোজেক্ট শো ইত্যাদি সম্পর্কে আমরা মোটামুটি ধারন দিতে পেরেছি। সকলকে আরও গভীর ও দক্ষভাবে কাজ করানোর লক্ষ্যে আমাদের প্রতিষ্ঠান সর্বাত্মক ভাবে চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউনিট গঠনের মাধ্যমে তাদের গবেষণামুলক কাজকে দেশীও ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ইতোমধ্যে তুলে ধরতে পেরেছি। গত বছর আমাদের প্রতিষ্ঠানের সদস্যরা তাদের গবেষনাধর্মী কাজ গুলো বাংলাদেশ সহ বিভিন্ন দেশে তুলে ধরার সুযোগ পেয়েছে যেমনঃ আমেরিকা, জাপান, ইন্ডিয়া, স্পেন ইত্যাদি।

প্রতিষ্ঠানটির অর্জন ও সাফল্যঃ

প্রতিষ্ঠানটির গত বছরের সব থেকে বড় অর্জন হলো গত মে মাসের ৩-৫ তারিখ ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার ডিপার্ট্মেনেটের সাথে যৌথ ভাবে ICASERT-2019 আন্তর্জাতিক সম্মেলন ও রোবফেস্ট-২০১৯ আয়োজন করা। উক্ত অনুষ্ঠানে গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা “ডিজিটাল বাংলাদেশ” গড়ার লক্ষ্যে রোবটিক্স, ইঞ্জিনিয়ারিং, সায়েন্স যে গুরুত্বপূর্ন অবদান রয়েছে তা তুলে ধরেন এবং তিনি তার বাণী তে আরও উল্লেখ করেন যে এই ধরনের গবেষনা ও শিক্ষাকে গুরুত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার তাছাড়াও অনুষ্ঠানের সংশ্লীষ্ট সকলকেই তিনি শুভেচ্ছা জানান। তাছাড়াও উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ইয়াফেজ ওসমান। দেশ ও দেশের বাহিরে যেমনঃ জাপান, কোরিয়া, ইন্ডিয়া, মালোশিয়া, নেপাল প্রভৃতি দেশ থেকে রোবটিক্স, কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা, মেশিন লার্নিং, আই ও টি ইত্যাদি বিষয় নিয়ে গবেষণাকারী প্রফেসররা উপস্থিত ছিলেন এবং তারা তাদের গবেষণা গুলো তুলে ধরেন। তাছাড়াও গবেষ্ক ও প্রফেসররা আস্বাস দেন যে তারা বাংলাদেশে এই ধরনের উন্নয়নে তারা সহযোগীতা করবেন। এছাড়াও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আমেরিকার ইষ্টার্ন ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয় এবং ওয়াশিংটন স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ আন্তর্জাতিক সম্মেলন ICIEV, IVPR, ABC 2019 এ অংশগ্রহন করে কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন বাঙ্গলায় কথা বলা রোবট, পেসিফ বাইপেল রোবট, আই ও টি, মেশিন লার্নিং ও অটোমেটিক বোতল ডিসপোজাল সিস্টেম সম্মপর্কে গবেষণা কাজকে উপস্থাপন করা ও বাংলাদেশকে তুলে ধরা। বাংলাদেশে দুটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি(ইউ আই ইউ) ও আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে ওয়ার্কশপ ও প্রোজেক্ট প্রদর্শন করা। বাংলাদেশ গ্রাম ও শহর পর্যায়ে আধুনিক টেকনোলজি সম্পর্কে জানানোর লক্ষ্যে রংপুর, যশোর, সাতক্ষীরা ও ঢাকা সহ বিভিন্ন কলেজ ও স্কুলে ওয়ার্কশপ ও সেমিনার আয়োজন করা হয়। যার ভূতপূর্ব সাফল্য বর্তমানে সকলের দৃষ্টিগোচর।

কর্মসুচী ও কাজের পরিকল্পনাঃ

আমি এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যেমে শুধু তরুণ ও শিক্ষার্থীদের স্বপ্নই দেখাতে চাই না, সেটিকে বাস্তবে রুপ দিতে চাই।ইতোধ্যে আমাদের টেকনিক্যাল টিম মেম্বার ও আমি আমেরিকা গিয়ে আমাদের কাজকে বিশ্বের খ্যাতনামা প্রফেসর, গবেষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছি। বিদেশি খ্যাতনামা প্রফেসর, গবেষক ও শিক্ষার্থীরা ইতোমধ্যে বাঙ্গলাদেশে ছেলেমেয়দের কাজের প্রশংসা করেছে, তারা বলেছে শত বাধা বিপত্তির মাঝেও বাঙ্গলাদেশের তরুন প্রজন্ম এগিয়ে যাচ্ছে। আর এই এগিয়ে যাওয়াকে আরও দ্রুত্তম করতে আমারা কাজ করে যাব। আমরা ধারাবাহিক ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও স্কুলে গবেষণা কার্যক্রম, ওয়ার্কশপ ও সেমিনার করে যাব।সেই সাথে আমি আশা প্রকাশ করছি আমরা যদি যথেষ্ট অর্থ আমাদের কর্মকান্ড ও গবেষণার জন্য অনুদান পাই তাহলে আমরা দেশবাসীকে উন্নত গবেষনা, মানুষের উপকারে আসে এমন ডিভাইস ও প্রযুক্তি আগামীতে দিতে পারব।