ঢাকার ১১টি কলেজের অংশ গ্রহণের মধ্য দিয়ে শেষ হলো দুই দিনব্যাপী রোবটিক্স প্রতিযোগিতা। প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছে নটরডেম কলেজ। আজ ঢাকার ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) নতুন ক্যাম্পাসে এই রোবটিক্স প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। জাপানের এড্যুকেশন টেকনোলোজি কোম্পানি ভেনচুরাস লিমিটেডের আয়োজনে এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ও আইসিটি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
প্রতিযোগিতার শেষ দিনে বেলা ১০টা থেকে শুরু হয় মূল প্রতিযোগিতা এবং বিকেল সাড়ে ৪টায় পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বাংলাদেশের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং সভাপতি হিসেবে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী আমিনুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন ।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভারসিটি ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) প্রফেসর ডক্টর চৌধুরী মোফিজুর রহমান এবং ভিলিং গ্রুপ জাপানের সিইও নাকামুরা। এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জাপান এক্সটারনাল ট্রেড অরগানাইজেশন (জেইটিআরও) এর বাংলাদেশ প্রধান ডাইসুকে আরাই এবং ডাটা সফট বাংলাদেশের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মাহাবুব আজম।
অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘তোমারা পৃথিবীর যে কোন প্রতিযোগিতায় জয়ী হতে পারবে। তোমরা পারবে না এমন কোন কাজ পৃথিবীতে নাই। তাই নিজেদের প্রতি আস্থা রাখো। আমার বিশ্বাস আমাদের দেশের শিক্ষার্থীরা একদিন রোবট তৈরি করবে।’ ’তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ তথ্য প্রযুক্তিতে অনেক উন্নতি করছে। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৮০টি দেশে সফটওয়ার রফতানি করে। ‘
এসময় মন্ত্রী শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তি ব্যবহারে সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘যখন কোন নতুন প্রযুক্তি আসে তখন তার ভালো এবং খারাপ দিক দুটোই আসে। তাই তোমাদের প্রযুক্তি ব্যবহারে সতর্ক হতে হবে। ‘
এর আগে বেলা ১১টায় ইউআইইউ এর অডিটোরিয়ামে এক অনুষ্ঠানে অতিথি বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এভারেস্ট বিজয়ী প্রথম বাংলাদেশী নারী নিশাত মজুমদার। তিনি তার বক্তব্যে ভয় ও বাধা কাটিয়ে কীভাবে সাফল্যের লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে হয় তা নিয়ে আলোচনা করেন। এসময় তিনি এভারেস্ট বিজয়ীয়ের সময়ে তোলা কিছু ছবি এবং কীভাবে এভারেস্ট চুড়ায় পৌঁছান তা ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে তুলে ধরেন। এরপর দুপুর সাড়ে ১২টায় শুরু হয় মূল প্রতিযোগিতার আয়োজন। প্রতিযোগিতায় ১১টি কলেজ থেকে ৫ সদস্যের একটি করে দল লাইন ট্রেসিং প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছে নটরডেম কলেজ। এছাড়াও প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ এবং তৃতীয় হয়েছে গভমেন্ট সাইয়েন্স কলেজ। এরপর দুপুর আড়ইটায় শুরু হয় জাপানের সংগীতদল বাজিনা বিট- এর সংগীত পরিবেশনা।
প্রতিযোগিতায় বিজয়ী দলকে পুরস্কার প্রদান করে প্রফেসর ডক্টর চৌধুরী মফিজুর রহমান, ভাইস চ্যান্সেলর, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভারসিটি এবং মিনহাজ উদ্দিন আনওয়ার, গ্রামীণফোন এক্সেলারেটর প্রোগ্রাম।
এর আগে প্রতিযোগিতার প্রথমদিনে (২১ মার্চ, ২০১৮) শিক্ষার্থীদের জন্য একটি ওয়ার্কশপ আয়োজন করা হয়। ওয়ার্কশপ পরিচালনা করেন ভিলিং গ্রুপের সিইও কাজাউকি নাকামুরা, টাফটস ইউনভার্সিটি’র সিসিইও অ্যাডভাইসরি মাসাও ইশিহারা এবং মনস্টার ল্যাব বাংলাদেশের সিইও কাজাউকি নাকাইয়ামা। ওয়ার্কশপে ক্যারিয়ার সেমিনার, প্যানেল ডিসকাশন এবং কোডিং সেশনের আয়োজন করা হয়। ওয়ার্কশপে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই ও ইইই বিভাগের প্রফেসরা উপস্থিত ছিলেন। যাদের কাছ থেকে শিক্ষার্থীরা কোডিং এবং গেমিং অ্যাপ তৈরি
সম্পর্কে হাতে কলমে শিখতে পেরেছেন। এছাড়াও ওয়ার্কশপে অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা প্রোগ্রামিং, কোডিং, ইঞ্জিনিয়ারিং ও আইসিটি সম্পর্কে বিভিন্ন ধরণের দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা অর্জন করার সুযোগ পায়।
প্রতিযোগিতার রিওয়ার্ড পার্টনার হিসেবে ছিল গ্রামীণফোন,মিডিয়া পার্টনার হিসেবে ছিল আরটিভি এবং ডেইলি স্টার এবং টেকনিক্যাল পার্টনার হিসেবে ছিলো ডাটাসফট বাংলাদেশ ও মনস্টার ল্যাব জাপান।