ফেসবুকের মালিকানাধীন বার্তা আদানপ্রদানকারী অ্যাপ ‘হোয়াসটঅ্যাপ’র কঠোর সমালোচনা করেছেন টেলিগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা পাভেল দুরোভ। একে মুছে ফেলার আহবানও জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, ‘লাখ লাখ ব্যবহারকারীদের তথ্য হাতিয়ে নিচ্ছে হোয়াটসঅ্যাপ।’ একে তিনি পরিষ্কার ভাষায় ‘ট্রোজান হর্স’ বা ‘ট্রয়ের ঘোড়া’ হিসেবে চিহ্নিত করেন।
ট্রয়ের ঘোড়া বলতে ট্রয় বা ইলিয়ন নগরের পতনের বিখ্যাত গ্রিক উপকথার সঙ্গে জড়িত কাঠের ঘোড়াকে বোঝানো হয়। কথিত আছে, গ্রিকরা একটি অতিকায় কাঠের ঘোড়া তৈরি করে তার ভিতরে কিছু সেনা লুকিয়ে রেখে ঘোড়াটা ট্রয় নগরের কাছে এনে দাঁড় করায়। ট্রয়বাসীরা ঘোড়াটাকে শহরের ভিতরে নিয়ে আসে। রাতে সেনারা ঘোড়ার ভিতর থেকে বের হয়ে নগরের দরজা খুলে দেয় এবং গ্রিকরা নগরে ঢুকে তা অনায়াসেই দখল করে নেয়।
টেলিগ্রাম চ্যানেল প্রকাশিত বিশাল এক নিবন্ধে পাভেল দুরোভ হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের তথ্য হাতিয়ে নেয়ার বিষয়ে আলোকপাত করেন। কোনও রকম লুকোচুরি আশ্রয় না নিয়েই হোয়াটসঅ্যাপকে মুছে ফেলার সরাসরি আহ্বান জানান তিনি। এ প্রসঙ্গে ব্যক্তিগত তথ্য রক্ষায় ফেসবুকের দীর্ঘ ব্যর্থতার কথাও তুলে ধরেন তিনি।
২০১৪ সাল থেকে ফেসবুকের মালিকানাধীন রয়েছে হোয়াটসঅ্যাপ সে কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এটি ব্যবহারকারীদের বার্তার গোপনীয়তা রক্ষাই কেবল ব্যর্থ হয়নি। বরং হোয়াটসঅ্যাপের সঙ্গে জড়িত নয় ব্যবহারকারীদের এমন ছবি এবং বার্তার ওপর আড়ি পাততে ‘ট্রোজান হর্সে’র কাজ করছে হোয়াটসঅ্যাপ।’
সম্প্রতি ফাঁস হওয়া হোয়াটসঅ্যাপের আরেকটি কথিত ‘দুর্বলতার’ কথাও তুলে ধরেন তিনি। এ ‘দুর্বলতাকে’ কাজে লাগিয়ে হ্যাকাররা বিশেষভাবে তৈরি এমপিথ্রি ফাইল পাঠাতে পারে। আর এর মধ্য দিয়ে অ্যানরয়েড বা আইওএস ব্যবহারকারীদের সব তথ্যের ওপর আড়ি পাতা সম্ভব হয়।
ইহুদিবাদী ইসরাইলের তৈরি পেগাসাস নামের অ্যাপের মাধ্যমে হোয়াটসঅ্যাপে গোয়েন্দাগিরি চালানোর খবর সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া, সৌদি ভিন্নমতালম্বী সাংবাদিক জামাল খাসোগীর বিরুদ্ধে একই অ্যাপ ব্যবহার হয়েছে বলেও খবর প্রকাশিত হয়েছে। পাশাপাশি ভারত ও পাকিস্তানে শীর্ষস্থানীয় সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাসহ বিশিষ্টজনদের ওপর নজরদারির চালানো হয়েছে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে।