আড়ালে মুখ লুকিয়েছেন জাকারবার্গ। সামনে আসছেন না। টুইটারে ট্রেন্ড হয়েছে কোথায় তুমি জাকারবার্গ? আর পর্দার আড়ালে থাকা চলবে না। ফেসবুকের ডাটা বিক্রি হয়েছে। এখন প্রশ্ন উঠছে, যে প্রতিষ্ঠানগুলো ডাটা সংগ্রহ করে তারা কি করে? আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে। ফেসবুক কি পারবে ঘুরে দাঁড়াতে। অতীতে জাকারবার্গ পেরেছেন এবারও হয়তো সামলে নেবেন। মার্ক জাকারবার্গের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ার কথা। ফেসবুককে ‘ঠিক’ করার যে মিশনে তিনি নেমেছেন, তা আরও একবার ধাক্কা খেয়েছে। ব্যবহারকারীর তথ্য নিয়ে ফেসবুক কী করছে, সে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এ ছাড়া ফেসবুকের ব্যবসার মডেল এখন প্রশ্নের মুখে। ফেসবুকের বিরুদ্ধে তদন্ত চাইছেন ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিবিদেরা। অভিযোগ উঠেছে, কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা নামের একটি প্রতিষ্ঠানের অ্যাপ ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিল ফেসবুক। ওই অ্যাপের মাধ্যমেই কোটি কোটি ফেসবুক ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা। সেই তথ্য পরে ব্যবহার করা হয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারের কাজে। এ কাজের সঙ্গে জড়িত এক অধ্যাপক সম্প্রতি মুখ খোলায় প্রকাশ্যে এসেছে সবকিছু। এখন পুরো বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) বিভিন্ন দেশের রাজনীতিবিদেরা। প্রযুক্তি বিশ্বের অন্যতম আকর্ষণীয় প্রতিষ্ঠান বলা হলেও ফেসবুকে বিনিয়োগকারীদের ইতিমধ্যে ধাক্কা খাওয়া শুরু হয়ে গেছে। গতকাল সোমবার ফেসবুকের শেয়ারের দামে ধস নামে। এক দিনেই ফেসবুকের শেয়ারের দাম কমেছে ৬ দশমিক ৭ শতাংশ। সব মিলিয়ে প্রায় চার হাজার কোটি ডলার বাজারমূল্য কমে যাওয়ায় বিনিয়োগকারীদের কপালে ভাঁজ পড়ে গেছে। ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গকে রাজনীতিবিদেরা প্রশ্ন তুলছেন, কীভাবে পাঁচ কোটি ফেসবুক ব্যবহারকারীর তথ্য রাজনৈতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের হাতে গেল, তার ব্যাখ্যা দিতে হবে। ফেসবুক কর্তৃপক্ষের কেউ অবশ্য এখনো মুখ খোলেননি। কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা তাদের তথ্য বেহাত হওয়ার খবরগুলো পুরোপুরি অস্বীকার করেছে। তারা বলছে, থার্ড পার্টি অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে ২০১৪ সালে ফেসবুক থেকে সংগ্রহ করা সব তথ্য তারা মুছে ফেলেছিল। তথ্য সুরক্ষা নিয়মের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়, এ বিষয়টি জানার পর তারা এই পদক্ষেপ নেয়। পুরো বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগে রয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। সিলিকন ভ্যালির তথ্য ব্যবহার প্রসঙ্গে মারিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিষয়ের অধ্যাপক ফ্র্যাঙ্ক প্যাসকল বলেন, ফেসবুকের তথ্য নিয়ে যা করা হয়, সেই কালো বাক্সের ঢাকনা খুলে গেছে। স্বভাবতই কুৎসিত চিত্রটিই সামনে এসেছে। ফেসবুকের এ ঘটনা জানাজানি হওয়ায় ফেসবুকের ওপর আস্থার সংকট তৈরি হবে, এমনকি ব্যবসায়ী সুনাম নষ্ট হবে। ২০১৬ সালে মার্কিন নির্বাচন ঘিরে ভুয়া খবর ছড়ানো ও ফেসবুক টুল ব্যবহার করে মার্কিন নির্বাচনে রাশিয়ার নাক গলানোর বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েছে প্রতিষ্ঠানটি। ফেসবুকের বিনিয়োগকারী রন বেটস মনে করেন, ‘আমরা কিছুটা উদ্বেগে রয়েছি।’ ফেসবুক গতকাল জানায়, কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা কার্যক্রম অডিট করতে তারা ডিজিটাল ফরেনসিক প্রতিষ্ঠান স্টোরজ ফ্রেডবার্গকে নিয়োগ দিয়েছিল। তারা অডিটের সময় ওই ফরেনসিক প্রতিষ্ঠানকে সার্ভারে ও সিস্টেমে ঢোকার সম্পূর্ণ সুযোগ দিয়েছিল। ফেসবুকে বিনিয়োগকারী নিউইয়র্ক সিটির স্কট স্টিংগার বলেন, ‘ফেসবুকে বিনিয়োগকারী হিসেবে আমরা ভয়ংকর খবরটি গভীরভাবে পর্যালোচনা করছি।’ সাসটেইনালিটিক্সের গবেষণা ব্যবস্থাপক ম্যাথু ব্রাগ বলেন, ‘ফেসবুকে কিছু পরিবর্তন আসে কি না, আমরা সে বিষয়টি দেখছি। তাদের ব্যবসার মডেলটির সঙ্গে গ্রাহকের তথ্যের নাগাল পাওয়ার বিষয়টি যুক্ত। এসব তথ্যের তারা যত্ন করে কি না, তা বোঝা জরুরি।’ ওয়ালস্ট্রিটের বিশ্লেষকেরা বলছেন, ফেসবুকের ব্যবসা মডেলেই পদ্ধতিগত সমস্যা রয়েছে। এ প্ল্যাটফর্ম এখন আরও বেশি নিয়ন্ত্রণের দাবি করবেন নিয়ন্ত্রকেরা। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রধান বলেছেন, তথ্যের অপব্যবহার হয়েছে কি না, ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাজনীতিবিদেরা এ ব্যাপারে তদন্ত করবেন। যদি তা করা হয়, তবে তা নাগরিক প্রাইভেসি অধিকারের অগ্রহণযোগ্য লঙ্ঘন হবে। নিউইয়র্ক টাইমস ও লন্ডন’স অবজারভারের সাম্প্রতিক প্রতিবেদন ফেসবুককে আরও বেকায়দায় ফেলেছে। ওই প্রতিবেদনের পর যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ফেসবুকের বিরুদ্ধে কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপের কথা বলা হয়েছে। গত শনিবার ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার হাতে তথ্য দিয়েছে ফেসবুক। ওই তথ্য মুছে ফেলার দাবি করা হলেও আদতে তা করা হয়নি। ফোর্বসের তথ্য অনুযায়ী, ফেসবুকের এ লোকসানের দিনে সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়েছে জাকারবার্গের মোট সম্পদের ওপরও। তাঁর মোট সম্পদের ৫১০ কোটি ডলার কমে গেছে। ফেসবুকের ১৬ শতাংশ শেয়ার তাঁর। মোট সম্পদ ৬ হাজার ৯৫০ কোটি ডলার। বিশ্বের শীর্ষ ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় পঞ্চম স্থান থেকে নেমে সপ্তম স্থানে চলে গেছেন তিনি। নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ফেসবুকের তথ্য বেহাত হওয়ার ঘটনাকে প্রতিষ্ঠানটির আইনজীবী পল গ্রিউয়াল ‘দুর্নীতি ও প্রতারণা’ বলেছেন। তিনি বলেন, ‘যা যা ব্যবস্থা নেওয়ার, তা নেওয়া হবে এবং যারা নিয়ম ভেঙেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেমব্রিজ অ্যানালিটিকাকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে। হার্ভার্ডে পড়াশোনার সময় ১৯ বছর বয়সে ২০০৪ সালে ফেসবুক প্রতিষ্ঠা করেন জাকারবার্গ। পরে প্রতিষ্ঠানকে সময় দিতে গিয়ে পড়াশোনা ছেড়ে দেন তিনি। বর্তমানে ২০০ কোটির বেশি সক্রিয় ব্যবহারকারী রয়েছে ফেসবুকে। বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্ট্যাটিসটার তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালে ৪ হাজার ৭০ কোটি ডলারের আয় করে ফেসবুক। অনলাইন বিজ্ঞাপনের ৬০ শতাংশ গুগল ও ফেসবুক কর্তৃপক্ষের পকেটে যায় অভিযোগের আদ্যোপান্ত যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যমে প্রথম এ বিতর্কের সূচনা হয়। দ্য নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আমেরিকান নাগরিকদের ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রভাব রেখেছিল তথ্য বিশ্লেষণ করার প্রতিষ্ঠান কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা। এ ক্ষেত্রে ফেসবুকের কোটি কোটি ব্যবহারকারীর প্রোফাইল থেকে পাওয়া তথ্য ব্যবহার করা হয়েছিল।
সিএনএনের খবরে বলা হয়েছে, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানের অধ্যাপক আলেক্সান্ডার কোগানের তৈরি অ্যাপ্লিকেশন ‘দিসইজইওরডিজিটাললাইফ’ ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিল ফেসবুক। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, এর ফলে ব্যবহারকারীদের তথ্য জোগাড় করার সুযোগ পান ওই অধ্যাপক। ওই অ্যাপ মূলত একটি ব্যক্তিত্ববিষয়ক পরীক্ষা চালাত। কিন্তু যেসব ফেসবুক ব্যবহারকারী ওই অ্যাপ ডাউনলোড করতেন, তাঁরা আলেক্সান্ডার কোগানকে নিজেদের বিভিন্ন তথ্য নেওয়ার অনুমতিও দিতেন। এর ফলে ব্যবহারকারীদের অবস্থান, তাঁদের বন্ধু ও যেসব পোস্টে তাঁরা ‘লাইক’ দিতেন, সে সম্পর্কে জানতে পারতেন মনোবিজ্ঞানের ওই অধ্যাপক। ওই সময় ফেসবুকের নিয়মনীতির মধ্যেও এ কার্যক্রম অনুমোদিত ছিল। দ্য নিউইয়র্ক টাইমসের খবরে বলা হয়, ব্যবহারকারীদের ওই তথ্যাবলি কোগান কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার কাছে সরবরাহ করেন। ফেসবুকের নীতিমালা ভঙ্গ করেই এ কাজ করেন তিনি। ফেসবুকের পাঁচ কোটির বেশি ব্যবহারকারীর তথ্য এভাবে বেহাত হয়ে যায়। ওই সময় কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা ভোটারদের প্রভাবিত করা যাবে, এমন প্রযুক্তি উদ্ভাবনের চেষ্টা করছিল। ফেসবুক কর্তৃপক্ষের দাবি, ২০১৫ সালে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকাকে ওই সব তথ্য মুছে ফেলতে বলেছিল তারা। কিন্তু কয়েক দিন আগে জাকারবার্গের প্রতিষ্ঠান জানতে পারে, ওই তথ্যভান্ডারের সবটুকু মুছে ফেলা হয়নি। এদিকে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা কর্তৃপক্ষ বলেছে, নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে যে তথ্যের কথা বলা হয়েছে, সেগুলো ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সরবরাহ করা হয়নি। তবে ট্রাম্প শিবিরকে সেবা দেওয়ার কথা প্রকারান্তরে স্বীকার করে নিয়েছে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা। নিউইয়র্ক টাইমস ও অন্যান্য সংবাদমাধ্যমে এ নিয়ে প্রকাশিত সাম্প্রতিক প্রতিবেদনগুলো মূলত কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার সাবেক কন্ট্রাক্টর ক্রিস্টোফার উইলির সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে।
এত শোরগোল কেন? যুক্তরাষ্ট্রে ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর থেকেই গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। আলোচনায় আছে মিথ্যা সংবাদ প্রচার, সাম্প্রদায়িকতা ও ঘৃণা ছড়ানোর ক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের বিষয়টি। এ নিয়ে কিছুদিন আগে মুখ খুলেছিলেন ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গও। তখন তিনি ‘ফেসবুক বাঁচানোর’ পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও বলেছিলেন। সিএনএনের এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক বিতর্কে ফেসবুকের ব্যবসাপদ্ধতি নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। ফেসবুক যেভাবে ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য অ্যাপ ডেভেলপার ও বিজ্ঞাপনদাতাদের কাছে বিক্রি করে থাকে, সেটি তারা করতে পারে কি না, তা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। জাকারবার্গের জন্য এখন অনেকগুলো প্রশ্ন অপেক্ষা করে আছে। ব্যবহারকারীদের তথ্য কীভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে, সেই ব্যাপারে ফেসবুক কি ব্যবহারকারীদের কাছে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে পেরেছে? তৃতীয় পক্ষের কাছে তথ্য বেহাত হওয়া ঠেকাতে প্রতিষ্ঠানটি আরও কার্যকর পদক্ষেপ কি নিতে পারত? রিপাবলিকান সিনেটর জেফ ফ্লেক সিএনএনকে বলেছেন, এটি একটি বড় বিষয়। ব্যক্তিগত গোপনীয়তার লঙ্ঘনের বিষয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রশ্ন হচ্ছে, কে এটি জানে? কখন তারা জানতে পারল? কত দিন ধরে এসব চলেছিল? বিশ্লেষকদের মতে, এসব প্রশ্নের সদুত্তর দেওয়া মার্ক জাকারবার্গের জন্য একটি বিশাল চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিতে পারে।
অস্তিত্বের সংকট? বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, নতুন কেলেঙ্কারির কারণে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি ফেসবুক বিশ্বাসযোগ্যতা হারাচ্ছে। ব্যবহারকারীরা এখন ফেসবুক ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছুটা দোটানায় ভুগবেন। আর এর প্রভাব পড়বে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবসায়। দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে বিশ্লেষক ম্যালকম ন্যান্স বলেন, ‘এখন যদি বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি প্রগতিশীল ব্যবহারকারী ফেসবুককে প্রত্যাখ্যান করেন, তখন কী হবে? তাঁরা যদি বলে বসেন যে ট্রাম্প, রাশিয়া, নব্য নাৎসি ও বিভিন্ন কর্তৃত্ববাদী শক্তির উপকরণ বলেই ফেসবুক ব্যবহার করবেন না? ফেসবুক কর্তৃপক্ষের উচিত যত দ্রুত সম্ভব ক্ষয়ক্ষতি উপশমে কাজ শুরু করা। তাদের নিশ্চিত করতে হবে যে হাল আমলের তথ্যবিষয়ক কোনো ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র নয় তারা।’ সিএনএনের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, সবচেয়ে মারাত্মক বিষয় হলো আলেক্সান্ডার কোগান যেভাবে তথ্য সংগ্রহ করেছিলেন, তা ফেসবুকের নীতিমালাতেই ছিল। ফেসবুক কর্তৃপক্ষও তা স্বীকার করেছে। আবার অ্যাপ ডেভেলপার ও বিজ্ঞাপনদাতারা যাতে তৃতীয় পক্ষের কাছে তথ্য হস্তান্তর করতে না পারে, তার জন্য কোনো সুরক্ষাব্যবস্থাও ফেসবুকের নেই। ফেসবুক কর্তৃপক্ষের দাবি, ২০১৪ সাল থেকে ব্যক্তিগত তথ্যের ওপর নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীদের যথেষ্ট ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। ফেসবুকের অভ্যন্তরীণ একটি বিশ্বস্ত সূত্রের বরাত দিয়ে সিএনএন জানিয়েছে, ওই সব পদক্ষেপ তথ্যের বেহাত হওয়া পুরোপুরি বন্ধ করতে যথেষ্ট নয়। এত বিতর্কেও চুপটি করে রয়েছেন ফেসবুক প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ। মুখ খোলেননি তাঁর ডেপুটি শেরিল স্যান্ডবার্গও। ফেসবুক কর্তৃপক্ষের হয়ে বিবৃতি দিচ্ছেন একজন আইনজীবী। প্রতিষ্ঠানটির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা কেউ উত্তর দিচ্ছেন না একটি প্রশ্নের। ২০১৫ সালে তথ্য বেহাত হওয়ার কথা জানার পরও কেন এত দিন মুখ বন্ধ করে ছিল প্রতিষ্ঠানটি? বিশ্লেষকেরা বলছেন, সমস্যার গোড়া কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা বা রাশিয়ায় নয়, ফেসবুকের ভেতরই।