TechJano

শপথ নিলো ই-ক্যাব নতুন কার্যনির্বাহী কমিটি

শুভকামনা আর ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হয়ে ‘নতুন করে আগমীর পথে’চলার শপথ নিয়ে আনুষ্ঠানিক অভিষেক হলো ই-ক্যাবের ২০২২-২৪ সালের কার্যনির্বাহী কমিটির। সোমবার রাতে প্যান প্যাসিফিক সোনার গাঁ হোটেলে শপথ পাঠ করান ই-ক্যাব উপদেষ্টা নজরুল ইসলাম খান। পরবর্তী দুই বছর নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালনে শপথ নেন ই-ক্যাব সভাপতি শমী কায়সার, সহ-সভাপতি মোহাম্মদ সাহাব উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মাদ আব্দুল ওয়াহেদ তমাল, যুগ্ম সম্পাদক নাছিমা আক্তার নিশা, অর্থ সম্পাদক আসিফ আহনাফ, পরিচালক সাইদুর রহমান সাঈদ, সৈয়দা আম্বারিন রেজা, শাহরিয়ার হাসান ও মোঃ ইলমুল হক সজীব। এরপর নতুন কমিটির জন্য শুভ কামনা প্রকাশ করেন নির্বাচন এফবিসিসিআই সহ-সভাপতি ও ই-ক্যাব নির্বাচন পরিচালনা বোর্ড চেয়ারম্যান আমিন হেলালী। এছাড়াও ভিডিও বার্তাতেও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন অনেকেই।

এর আগে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা উপহার দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে শহীদসহ ঘাতকের বুলেটে নিহত বঙ্গবন্ধু পরিবার সহ সকল শহীদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনে এক মিনিট নিরবতা পালনের মাধ্যমে শুরু হয় অভিষেক অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিকতা। এ পর্যায়ে ই-ক্যাবের ২০২২-২৪ সালের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন সংগঠনের আরেক উপদেষ্টা নাহিম রাজ্জাক। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ই-ক্যাব সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াহেদ তমাল।

ই-ক্যাব সভাপতি শমী কায়সারের সভাপতিত্বে অভিষেক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি বিনিয়োগ ও শিল্প উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠানের টাইটেল স্পন্সর ও এইচএসবিসি বাংলাদেশের কান্ট্রি হেড অব হোলসেল ব্যাংকিং কেভিন গ্রিন, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ও আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

সমস্বরে জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে শুরু হওয়া শুভেচ্ছা বক্তব্য পর্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নির্বাচনে জয়ের পর বিজিত প্রার্থীসহ সব সদস্যদের নিয়ে জমকালো অভিষেক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ই-ক্যাব বাণিজ্যিক সংগঠনগুলোর নেতৃত্বে নতুন মাত্রা যোগ করলো যা অনুকরণীয় হয়ে থাকবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন সালমান এফ রহমান।

তিনি বলেন, আমি ট্রেড পলিটিক্সের সঙ্গে অনেক দিন ধরেই জড়িত। মেট্রোপলিটন ও ঢাকা চেম্বারে এখন পর্যন্ত নির্বাচন না করে মুরুব্বিরা বসে নেতা নির্বাচন করতেন। এফবিসিসিআই দিয়ে আমি ট্রেড ভোট শুরু করি। কিন্তু বিজিএমইএ’র ট্রেড পলিটিক্সে গ্রুপিং হয়ে যাওয়ায় বিষয়টি চ্যালেঞ্জের হয়। ভোটের পর আজ ই-ক্যাব যেভাবে এক হয়ে আছে এটা অন্যান্য ট্রেডবডিগুলো অনুকরণ করতে পারে। আর যে কোনো পরামর্শ বা সহায়তায় ই-ক্যাবের জন্য আমার দরজা সবসময় খোলা আছে।

করোনায় ই-কমার্সের মাধ্যমে বাণিজ্য সচল রেখে মানুষের প্রয়োজন মেটানো সম্ভব হয়েছে উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি সবসময় ই-ক্যাবের বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটির পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, আমি আশা করবো আজকের নির্বাচিতরা যে কথা দিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন তারা যেনো তা রক্ষা করেন। তাহলে আমরা আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবো। এই খাতের ব্যবসায়ীরা উপকৃত হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, করোনা কালে ই-কমার্স ছিলো বাণিজ্যের লাইফলাইন। সে সময় যে ক্রাইসিস তৈরি হয়েছিলো তা দূর করতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ইতিমধ্যেই ব্যাংক এশিয় ‘র তত্ত্ববধানে এসক্রো সার্ভিস চালু করেছি। এখন যে কোনো ব্যাংক এই সুযোগ তৈরি করতে পারবে। এরইমধ্যেই ডিবিআইডি-তে নিবন্ধন কাজ শুরু হয়েছে। আর অল্পদিনের মধ্যেই সেন্ট্রাল কমপ্লেইন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ও ইন্টার অপারেবল ডিজিটাল ট্রাঞ্জেকশন প্লাটফর্ম উপহার দিয়ে ই-কমার্স এ আস্থা ফিরিয়ে একটি শক্তিশালী ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে পারবো। আগামী ৮ আগস্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্ম বার্ষিকীতে ৩০০ ই-কমার্স নারী উদ্যোক্তাকে ৫০ হাজার টাকা করে অনুদান দেবো।

দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করার ৪০ হাজার কোটি টাকার স্থানীয় বাজার সৃষ্টির ইকোসিস্টেম গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ই-ক্যাব সভাপতি শমী কায়সার বলেন, আমরা সবাই হাতে হাত রেখে একসঙ্গে কাজ করবো। কোনো বিভেদ হবে না। এন্টারপ্রেনিউর একাডেমির কাজ শুরু করতে যাচ্ছি । আগামী নভেম্বরে ১০০ দিন ও ইক্যাবের বার্ষিকীতে আবারো সব সদস্যদের নিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রতিশ্রুতি পূরণের বিস্তারিত তুলে ধরা হবে বলে জানান।

এসময় বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ, ডব্লিউটিও মহাপরিচালক হাফিজুর রহমান, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান ও হাইটেক পার্ক ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকর্ণ কুমার ছাড়াও বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির সভাপতি প্রকৌশলী সুব্রত সরকার, বেসিস সভাপতি রাসেল টি আহমেদ, আইএসপিএবি সভাপতি ইমদাদুল হক, বাক্কো সভাপতি ওয়াহিদ শরিফ, সিটিও ফোরাম সভাপতি তপন কান্তি সরকারসহ খাত সংশ্লিষ্ট বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত ছিলেন। নতুন কমিটিকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে ফুল দিয়ে তাদের শুভ কামনা জানান সংগঠনগুলোর নেতারা। অভিষেকে সকল সদস্যের সতস্ফূর্ত অংশগ্রহণে ই-ক্যাবময় হয়ে ওঠে সোনার গাঁ মিলনায়তন।
অভিষেক অনুষ্ঠানের টাইটেল স্পন্সর ছিলো এইচএসবিসি ব্যাংক। এছাড়াও পৃষ্ঠপোষক হিসেবে অংশ নিয়েছে বেঙ্গল কমার্সিয়াল ব্যাংক লিমিটেড, এডিএন টেলিকম; সহ-পৃষ্ঠপোষক ছিলো সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিস (প্রাঃ) লিমিটেড এবং শোবাই প্রাইম।

Exit mobile version