খুব অল্প সময়ের মধ্যে শাওমি (Xiaomi) ব্রান্ডটি টেক জগতে বিশাল জায়গা করে নিয়েছে। স্যামসাং কিংবা অ্যাপেলের মতো টেক জায়ান্টের সাথে সেয়ানে সেয়ানে লড়াই করছে শাওমি এই প্রবল জনপ্রিয়তার জন্য শাওমিকেও মাঝে মাঝে পড়তে হয়েছে নকল কিংবা রিফারবিশডের ফাঁদে।
সুতরাং আপনার শখের শাওমি ফোন কেনা নিয়ে টেনশনে আছেন? আসল নাকি নকল! জেনুইন নাকি রিফারবিশড ইত্যাদি ভাবনায় মাথার চুল ছিড়ে আবুল হায়াত হয়ে যাচ্ছেন। তাহলে আসুন জেনে নেই কিভাবে আমরা Authenticity চেক করতে পার।ে
শাওমির অফিশিয়াল গ্লোবাল ফোরাম থেকে বাংলায় অনুবাদ করে নিচে দেওয়া হল।
১. Mi Verification App Method বাজারে শাওমির অনেক নকল প্রোডাক্ট ছড়িয়ে যাওয়ার ব্যাপারে শাওমি অফিশিয়াল অবহিত হয়ে একটি অ্যাপ ডেভলপ করেছে। আপনি প্রথমে স্মার্টফোনে Mi Verification App ডাউনলোড করে ইন্সটল করবেন, গুগোলে Mi Verification লিখে সার্চ দিলেই পেয়ে যাবেন এরপর ল্যাপটপ কিংবা পিসি দিয়ে (https://jd.mi.com) লিঙ্কে গিয়ে বারকোডটি স্ক্যান করবেন মি ভেরিফিকেশন অ্যাপ দিয়ে। কিছুক্ষন অপেক্ষা করার পর দেখবেন ল্যাপটপ কিংবা পিসিতে দেখাচ্ছে ভেরিফিকেশন কনফার্মেশন।
২. Do Benchmark Test এক্ষেত্রে আপনি AnTuTu কিংবা GeekBench টেস্ট করে দেখতে পারেন। যদি গড়ে আকাংখিত রেজাল্ট না আসে তবে ধরে নিতে ফোনে সমস্যা আছে। গড় স্কোর সম্পর্কে জানতে গুগোল করতে পারেন পরে মিলিয়ে দেখতে পারেন আপনার ডিভাইসে পাওয়া স্কোরের সাথে। উদাহারন – Xiaomi Redmi Note 5 Ai ভার্সনে গড়ে AnTuTu স্কোর আসবে ১ লক্ষ ১৫ হাজার ৬৭৫ (কমবেশিও হতে পারে)। এখন যদি আপনার সদ্য কেনা ফোনে বেঞ্চমার্ক টেস্ট করে উপরোক্ত রেজাল্ট না পান তবে বুঝে নিতে হবে ফোনে ঝামেলা আছে
৩. Check The MIUI ROM Version বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নকল ফোনগুলোতে থাকে কাস্টম রম। ফলে প্রথমেই আপনি আপনার ফোনের রম চেক করুন। কনফার্ম হতে না পারলে গুগোলের সাহায্য নিন। অথবা এই লিঙ্কে গিয়ে (http://en.miui.com/download.html) আপনার ডিভাইসটি সিলেক্ট করে রম ভার্সন চেক করে নিন।
৪. Authentication Label Method এই ক্ষেত্রে আপনার ফোনের বক্সটি লাগবে। আপনার ফোনের বক্সের পেছনে একটি সিকিউরিটি স্টিকার (সব শাওমি ফোনের ক্ষেত্রে নয়) লাগানো থাকে। যেখানে ২০ ডিজিটের একটি সংখ্যা থাকে যা আপনাকে স্ক্রাচ করে উঠিয়ে ভেরিফাই করতে হবে। যদি সিকিউরিটি স্টিকার না থাকে তবে একটি সিরিয়াল নাম্বার ও IMEI তথ্য থাকবে। যা আপনি নিচের এই লিঙ্কে (http://www.mi.com/verify/?lan=en#secur_en) প্রবেশ করিয়ে সহজেই চেক করতে পারবেন অথেন্টিসিটি।
৫. Install Stock MIUI ROM আপনি যদি নকল ফোনে অফিশিয়াল স্টক রম দেন তবে তা ব্রিক হয়ে যাবে। এটার কারণ খুবই সিম্পল। যখন আপনি নকল ফোনে অফিশিয়াল রম মারতে যাবেন তখন সিস্টেম বিভিন্ন প্যারামিটার চেক করে দেখে। যেমন- ডিভাইস কোড নেম হার্ডওয়্যার চেক, ডিজিটাল সিগনেচার, ফার্মওয়্যার চেক ইত্যাদি। যা নকল ফোনের সাথে মিলে না ফলাফল ফোন ব্রিক বা ডেড হয়ে যায়।
৬. In Box Accessories সবসময় শাওমির বক্সে থাকা সব এক্সেসোরিস চেক করে নেবেন। যেমন- চার্জার ও ডাটা ক্যাবল প্লাস্টিকের মোড়কে স্টিকার দ্বারা সিল করা থাকে। উক্ত স্টিকারে দুটোতে বারকোড স্টিকার ও সিরিয়াল থাকে। আপনি QR কোড স্ক্যানার দিয়ে স্ক্যান করলে উক্ত স্টিকারের সিরিয়ালের সাথে মিলে যাবে ডিসপ্লেতে শো করা সিরিয়াল।
৭. Physical Comparison এক্ষেত্রে লাগবে আপনার তীক্ষ্ণ কমন সেন্স। এছাড়াও প্রখর দৃষ্টি শক্তি ও প্রয়োজনীয় টেকনিক্যাল জ্ঞান। যেমন- আপনি ফোন কিনতে যাবার আগে আত্মীয় কিংবা বন্ধুদের সেট দেখে যেতে পারেন। কিনতে গিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে পারেন ফোনের ফিনিশিং, বিল্ড কোয়ালিটি, লোগো ইত্যাদি। এছাড়াও YouTube থেকে দেখে যেতে পারেন রিভিও। ফলে আপনি আপনারা কিনতে যাওয়া আকাংখিত ফোনের একটি বাহ্যিক বিষয় সম্পর্কে ধারণা পেতে পারেন।
৮. Compare the Price এক্ষেত্রে আপনি প্রথমে চায়নার রিটেইল দামটি জেনে নিতে পারেন ওয়েব থেকে। তারপর সেটা বাংলাদেশি টাকায় কনভার্ট করে, ট্যাক্স, ক্যারিং খরচ + যৌক্তিক লাভ/প্রফিট যোগ করে যে দামে আপনি ফোন আশা করেন তার থেকে কম দামে কেউ বিক্রি করতে চাইলে বুঝে নিতে পারেন ফেক ফোন সেটা। কারণ চায়না রিটেইল প্রাইসের চেয়ে কমে আপনাকে কে ফোন দেবে? ব্যবসায়ীরা তো আর চ্যারিটি সার্ভিস করতে বসে নেই। তথ্যসূত্র: শাওমি ইউজার পেজ।