গ্লোবাল টেকনোলজি লিডার শাওমি আজ (বৃহস্পতিবার) দেশের বাজারে তাদের সর্বশেষ ফ্ল্যাগশিপ মি ১১এক্স উন্মোচন করেছে। স্মার্টফোনটিতে আছে অসংখ্য ফিচার; যার মধ্যে আছে সর্বাধুনিক হার্ডওয়্যার ও সেরা স্পেসিফিকেশন। নতুন ফিচারগুলোর মধ্যে আছে ই৪ ১২০হার্জ অ্যামোলেড ডিসপ্লে, ডলবি অ্যাটমস ডুয়েল স্পিকার, আইপি রেটিং এবং চমকপ্রদ ডিজাইন। হালকা এবং স্টাইলিশ ডিজাইনের মি ১১এক্স-এ গ্রাহকদের সর্বোত্তম অভিজ্ঞতা দিতে ফ্ল্যাগশিপের সবগুলো উপাদানের সন্নিবেশ ঘটানো হয়েছে।
নতুন স্মার্টফোন উন্মোচন নিয়ে শাওমি বাংলাদেশের কান্ট্রি জেনারেল ম্যানেজার জিয়াউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘শাওমির লক্ষ্য শুধু প্রিমিয়াম পণ্যই নয়, সেটা ওই ক্লাসের মধ্যে সেরা প্রযুক্তির সমন্বয়ে নিয়ে আসা, যাতে আমাদের গ্রাহকরা উপকৃত হন। মি ১১এক্স উন্মোচনের মধ্য দিয়ে আমরা আশা করছি, গ্রাহকদের আগামী দিনের সকল চাহিদা পূরণের পাশাপাশি নতুনত্বের সুবিধা মিলবে। ফ্ল্যাগশিপ লেভেলের অভিজ্ঞতা দেওয়ার জন্য মি ১১এক্স ফোনটিতে সুপিরিয়র ক্যামেরা, অত্যাধুনিক ডিসপ্লের সমন্বয় রাখা হয়েছে।’
মি ১১এক্স
কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৮৭০ প্রসেসরে উন্নত পারফরম্যান্স মি ১১এক্স ফোনে সর্বোচ্চ শক্তিশালী পারফরম্যান্স ও দক্ষতা নিশ্চিত করতে ফ্ল্যাগশিপ গ্রেডের কোয়ালকমের স্ন্যাপড্রাগন ৮৭০ প্রসেসর ও ক্রায়ো ৫৮৫ চিপসেট দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে ৫জি সংযোগ দেওয়া হয়েছে। গত বছর বাজারে আনা ফ্ল্যাগশিপ স্ন্যাপড্রাগন ৮৬৫ প্রসেসরের সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায়, নতুন প্রসেসরটি তার চেয়ে ১২ শতাংশ বেশি পারফরম্যান্স দেয়। এতে রয়েছে ডেডিকেটেড প্রাইম কোর ৩.২গিগাহার্জ প্রসেস ক্ষমতা। ডিভাইসটি আসছে আল্ট্রাফাস্ট এলপিডিডিআর৫ এবং ইউএফএস ৩.১ স্টোরেজে; যা দেবে শক্তিশালী পারফরম্যান্স। ডিভাইসটিতে থাকা লিক্যুইড কুল প্রযুক্তি ১.০ প্লাস সহজে ফোনটি গরম হতে দেয় না। ফলে কোনো ধরনের অসুবিধা ছাড়াই দীর্ঘ সময় একটানা ও আরামদায়ক পারফরম্যান্স দিতে সক্ষম।
১২০হার্জ ই৪ অ্যামোলেড এই সেগমেন্টের মধ্যে সবচেয়ে ভালো ডিসপ্লে দিচ্ছে মি ১১এক্স। ফোনটিতে রয়েছে ৬.৬৭ ইঞ্চির এফএইচডি প্লাস ১২০হার্জ ই৪ অ্যামোলেড ডট ডিসপ্লে; সঙ্গে রয়েছে ৩৬০হার্জ রিফ্রেশ রেট। আপগ্রেড করা ম্যাটেরিয়াল ডিসপ্লের উজ্জ্বলতা দেয় ১৩০০ নিট। সেই সঙ্গে এটি আগের প্রজন্মের চেয়ে ব্যাটারি খরচ কমায় ১৫ শতাংশ। স্মুথ ও দেখায় অনন্য অভিজ্ঞতা দিতে এটি আসছে ১৩০০নিট ব্রাইটনেসে, সাপোর্ট করবে এইচডিআর ১০প্লাস, থাকছে এমইএমসি প্রযুক্তি। ডিসপ্লেতে আরামদায়ক দেখার জন্য সুনির্দিষ্ট মাত্রায় আলো সরবরাহ করে। সেই সঙ্গে ৩৬০ ডিগ্রি লাইট সেন্সিং প্রযুক্তি সঠিকভাবে কালার ক্যাপচার করতে পারে, ফলে ডিসপ্লেতে দেখার ক্ষেত্রে বাড়তি কোনো চাপ থাকে না। ডিভাইসটির ডিসপ্লের সুরক্ষা দিতে দেয়া হয়েছে কর্নিং গরিলা গ্লাস ৫ প্রযুক্তি। ফলে সামনে ও পিছনে উভয় দিকেই দুর্ঘটনাবশত পড়ে গিয়ে, কিংবা অন্য কোনোভাবে স্ক্র্যাচ পড়া থেকে সুরক্ষা দেয়।
৪৮ মেগাপিক্সেল এআই ট্রিপল ক্যামেরা এআই ট্রিপল ক্যামেরা সেটআপে আসছে মি ১১এক্স। যার প্রাথমিক ক্যামেরা ৪৮ মেগাপিক্সেলের, ৫ মেগাপিক্সেলের টেলিম্যাক্রো ক্যামেরা এবং ৮ মেগাপিক্সেলের আল্ট্রা-ওয়াইড ক্যামেরা থাকছে; সঙ্গে থাকছে ২০ মেগাপিক্সেলের ফ্রন্ট শ্যুটার। ডিভাইসটি দিনের আলো এবং স্বল্প আলোতেও অসাধারণ সব ছবি তুলতে সক্ষম। ল্যান্ডস্কেপ ছবি নিতে এতে আছে ১১৯ ডিগ্রি এফওভি, ফলে হাই রেজ্যুলেশনে কোনো ভবন কিংবা বড় গ্রুপ ছবিও তোলা যাবে।
ডলবি অ্যাটমসের সঙ্গে অবিশ্বাস্য সাউন্ড মি ১১এক্স আসছে ডলবি স্টেরিও সেটআপে। এতে ডলবি অ্যাটমস থাকায় পাওয়া যাবে উন্নতমানের অডিও সাউন্ডের অভিজ্ঞতা। এ ছাড়া ডিভাইসটি আসছে হাই-রেস অডিও সার্টিফিকেটে; যা উন্নতমানের সাউন্ড দিতে সক্ষম। এমনকি এতে হেডফোনে পাওয়া যাবে দুর্দান্ত আউটপুট।
ফাস্ট চার্জিং ব্যাটারি ডিভাইসটিতে আছে ৪৫২০এমএএইচের বিশাল ব্যাটারি। এই ব্যাটারিতে যেকোনো ধরনের ব্যবহারে ফোনটি নিশ্চিন্তে একদিন ব্যবহার করা যাবে। ফোনটি ৩৩ ওয়াটের ফাস্ট চার্জিং সাপোর্ট করে। বক্সে থাকছে ৩৩ ওয়াটের ফাস্ট চার্জার, যা দিয়ে স্মার্টফোনটি শূন্য থেকে ৫০ শতাংশ চার্জ হবে মাত্র ১৯ মিনিটে।
দাম ও কবে পাওয়া যাবে মি ১১এক্স তিনটি কালার ভ্যারিয়েন্ট কসমিক ব্ল্যাক, লুনার হোয়াইট ও সেলেসশিয়াল সিলভারে শীঘ্রই দেশের বাজারে পাওয়া যাবে। মি ১১এক্স পাওয়া যাবে ৬জিবি+১২৮জিবি এবং ৮জিবি+১২৮জিবি ভ্যারিয়েন্টে। দাম যথাক্রমে ৩৯ হাজার ৯৯৯ টাকা ও ৪২ হাজার ৯৯৯ টাকা।
শাওমি সম্পর্কে শাওমি কর্পোরেশন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ২০১০ সালের এপ্রিল মাসে এবং ২০১৮ সালের ৯ জুলাই (১৮১০.এইচকে) হংকং স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান বোর্ডে তালিকাভুক্ত হয়। শাওমি একটি ইন্টারনেট কোম্পানি যা আইওটি প্লাটফর্মের মাধ্যমে স্মার্টফোন ও স্মার্ট হার্ডওয়্যারের সঙ্গে সংযুক্ত।
সবার জন্য প্রযুক্তির সমান অধিকার নিশ্চিতে শাওমি উদ্ভাবন ও মানে গুরুত্ব দেয়। সবসময় শাওমি তাদের গ্রাহকদের অভিজ্ঞতাকে মূল্যায়ন করে উচ্চমানের প্রযুক্তি আনার চেষ্টা করে। কোম্পানিটি সম্প্রতি বিশ্বের সেরা সব উদ্ভাবনী পণ্য এনেছে, যা ‘অনেস্ট প্রাইস’ বা সাশ্রয়ী মূল্যে জীবনকে আরও সহজ করে তোলে।
বর্তমানে শাওমি বিশ্বে তৃতীয় বৃহত্তম স্মার্টফোন ব্র্যান্ড ও বিশ্বের বৃহত্তম কনজ্যুমার আওটি প্লাটফর্ম প্রতিষ্ঠা করেছে। এই প্লাটফর্মে স্মার্টফোন ও ল্যাপটপ ছাড়াই ২৯৮.৫ মিলিয়নের বেশি ডিভাইস সংযুক্ত রয়েছে। বর্তমানে বিশ্বের ৯০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলে শাওমির পণ্যগুলো ব্যবহার হচ্ছে।
২০২০ সালের আগস্টে কোম্পানিটি ফরচুন গ্লোবালের সেরা ৫০০ তালিকায় দ্বিতীয়বারের মতো স্থান করে নিয়েছে, সেই তালিকায় শাওমির অবস্থান ৪২২তম। যা গত বছরের তুলনায় ৪৬ ধাপ ওপরে। এ ছাড়া ইন্টারনেট সার্ভিস ও রিটেইলিং ক্যাটাগরিতে সপ্তম অবস্থানে আছে।
শাওমি হ্যাং সেন সূচক, হ্যাং সেন চীন এন্টারপ্রাইজ সূচক ও হ্যাং সেন টেক সূচকেও রয়েছে।
শাওমি সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুনঃ http://blog.mi.com/en/