বাংলাদেশে অনলাইনে শিশুদের নিরাপত্তা বিষয়ক প্রচারণায় ইউনিসেফের সাথে হাত মিলিয়েছে গ্রামীণফোন ও টেলিনর গ্রুপ। রোববার জিপি হাউসে প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। ‘ডিজিটাল ডিভাইড’ দূরীকরণে ইন্টারনেটের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তবে, কিছু বিষয়ের প্রতি আমাদের সাবধানী হতে হবে। এক্ষেত্রে, নবীন জনগোষ্ঠির জন্য নিরাপদ ইন্টারনেট নিশ্চিত করা সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। একথা মাথায় রেখে গ্রামীণফোন, টেলিনর গ্রুপ এবং ইউনিসেফ আজ বাংলাদেশে ডিজিটাল প্রযুক্তির অর্থপূর্ণ ও নিরাপদ ব্যবহার নিশ্চিত করতে এক সাথে কাজ করতে একমত হয়েছে।
এ চুক্তির অধীনে, গ্রামীণফোন টেলিনর গ্রুপ ও ইউনিসেফ ‘শিশুদের অনলাইন নিরাপত্তা’ শীর্ষক বিশেষায়িত কর্মসূচি চালু করবে। ২০১৮ সালে, এ উদ্যোগে ১১ থেকে ১৬ বছর বয়সী চার লাখ স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের সরাসরি সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে ক্ষমতায়ন করা হবে। পাশাপাশি, এ উদ্যোগের মাধ্যমে ৫০ হাজার বাবা-মা, অবিভাবক ও শিক্ষকদের জানানো হবে কীভাবে নিরাপদ ইন্টারনেট অভিজ্ঞতা অর্জন করা যায়। এছাড়াও, শিশুদের অনলাইন নিরাপত্তা বিষয়ক তথ্য যোগ করার মাধ্যমে শিশুদের হেল্পলাইন (১০৯৮) সেবার সম্প্রসারণ ঘটানো হবে।
চুক্তিতে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে স্বাক্ষর করেন গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী মাইকেল ফোলি এবং ইউনিসেফ বাংলাদেশ রিপ্রেজেন্টেটিভ এদুয়ার্দ বেগবিদি। জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ম লক্ষ্যমাত্রা ১০ ‘বৈষম্য হ্রাসে’ র লক্ষ্য অর্জনে গ্রামীণফোন ও টেলিনর গ্রুপ শিশুদের অনলাইন নিরাপত্তাকে তাদের বৈশ্বিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে গ্রহণ করেছে। অনুষ্ঠানে গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাইকেল ফোলি বলেন, “আমরা ইন্টারনেট ব্যবহারের তরুণদের নিরাপদ রাখতে কাজ করে যাচ্ছি কারণ আমরা চাই, বাংলাদেশের মানুষ কোন ধরনের শঙ্কা কিংবা রক্ষণশীল মনোভাব ছাড়া ইন্টারনেট ব্যবহার করে এর সুবিধাগুলো গ্রহণ করুক। শিশুদের জন্য নিরাপদে শেখার সুযোগ সৃষ্টিতে এবং বিশ্ব তথ্যভান্ডারে আত্মবিশ্বাসের সাথে প্রবেশের সুযোগ বৃদ্ধিতে আমাদের প্রতিশ্রুতি ও আগ্রহ কীভাবে তাৎপর্যপূর্ণ পরিবর্তন আনতে পারে ইউনিসেফের সাথে আমাদের যৌথ অংশীদারিত্বই তার প্রমাণ। ”
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে ইন্টারনেটের ব্যবহার সাধারণ মানুষের কাছে পৌছেছে। অনেকেরই এখন পর্যন্ত ইন্টারনেট নিয়ে নেতিবাচক ধারণা রয়েছে। ২০১৪ সালে থেকে বাংলাদেশের স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের নিরাপদ ইন্টারনেট শিক্ষা এবং এ বিষয়ক পরামর্শদান নিয়ে গ্রামীণফোন সক্রিয়ভাবে কাজ করে আসছে। ইউনিসেফ বাংলাদেশ রিপ্রেজেন্টেটিভ এদুয়ার্দ বেগবিদি বলেন,”শিশু কিশোরদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান অনলাইন কার্যক্রম তাদের জন্য অভূতপূর্ব সুযোগ সৃষ্ট করেছে এবং নিজস্ব অধিকার নিশ্চিত করণে তাদের স্বক্রিয় অংশগ্রহণ বেড়েছে। তবে ইন্টারনেট ব্যবহার শিশু কিশোরদের জন্য কিছু অনাকাংখিত ঝুকি সৃষ্টি করে। তাই আমাদের জরুরীভাবে শিশু কিশোরদের ইন্টারনেটের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করে তাদের অনলাইন কার্যক্রম বৃদ্ধি করতে সচেষ্ট হতে হবে।”
চুক্তিস্বাক্ষর অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন গ্রামীণফোনের ডেপুটি সিইও এবং সিএমও ইয়াসির আজমান এবং চিফ করপোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার মাহমুদ হোসেন সহ গ্রামীণফোন ও ইউনিসেফের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।