বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ৫টি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সেরা ১০ জন আইসিটি মেধাবী শিক্ষার্থীর নাম ঘোষণা করেছে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় আইসিটি সল্যুশন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে। আজ ঢাকার একটি হোটেলে হুয়াওয়ের সবচেয়ে বড় সিএসআর প্রোগ্রাম ‘সিডস ফর দ্য ফিউচার’ ২০১৯ বাংলাদেশ-এর সমাপনী অনুষ্ঠানে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে চীনা দূতাবাসের ইকোনোমিক অ্যান্ড কমার্শিয়াল কাউন্সিলর লি গুয়াংজুন। এছাড়া হুয়াওয়ে টেকনোলজিস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ঝাং জেংজুনও অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন।
‘সিডস ফর দ্য ফিউচার’ ২০১৯-এর বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে নির্বাচিত ১০ জন শিক্ষার্থী হলেন: বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে তাসফিয়া জাহিন ও সরকার স্নিগ্ধ সারথি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মায়িশা ফারজানা ও কৌশিক কুমার, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) থেকে তাসফিয়া সেঁউতি ও মিনহাস বিন ফারুকী, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) থেকে আতিয়া ইসলাম আঁখি ও জাহিদুল ইসলাম এবং চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) থেকে মনিশা দেব ও কামরুল হাসান। এসব শিক্ষার্থীদের নতুন প্রযুক্তি সম্পর্কে হাতে- কলমে শিক্ষা দিতে চলতি এপ্রিলেই দুই সপ্তাহের জন্য চীনের বেইজিং ও শেনজেনে নিয়ে যাওয়া হবে।
চলতি বছর পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই প্রতিযোগিতা শুরু হয়। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১২০ জন করে মোট ৬০০ শিক্ষার্থী এই প্রতিযোগিতার প্রাথমিক বাছাই প্রক্রিয়ায় অংশ নেন। তবে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৫ জন করে মোট ৭৫ জন শিক্ষার্থী প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় পর্যায়ে অংশ নেন। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫ জন শিক্ষার্থীর মধ্য থেকে চূড়ান্তভাবে দুইজন শিক্ষার্থীকে বাছাই করা হয়। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, সিনিয়র শিক্ষক এবং হুয়াওয়ের বিশেষজ্ঞ দলের সহায়তায় এসব শিক্ষার্থীকে বাছাই করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে মাননীয় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তিমন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘এ ধরনের আয়োজন আমাদের তরুণ শিক্ষার্থীদের তথ্য-প্রযুক্তির যাত্রায় আরও দ্রুত এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে। হুয়াওয়ের এই আয়োজন অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। আজ আমরা অত্যন্ত অল্প সময়ের মধ্যে পুরোপুরি ডিজিটাল হওয়ার পথে। আমি হুয়াওয়েকে ধন্যবাদ জানাই এই অগ্রযাত্রায় পাশে থাকার জন্য। আমরা বাংলাদেশে ৫জি আনতে আর একচুলও পিছিয়ে নেই। হুয়াওয়ে দেখিয়ে দিয়েছে প্রযুক্তি তাদের হাতের নাগালে কাজ করছে। হুয়াওয়ের সাথে আমরা ইতোমধ্যেই কাজ করে আশাবাদী ২০২১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে আমরা যেন ফাইভজি আনতে পারবো। তবে আমরা যাতে এর আগেই আনতে পারি সেই অনুরোধ করবো হুয়াওয়েকে।’
বাংলাদেশে চীনা দূতাবাসের ইকোনোমিক অ্যান্ড কমার্শিয়াল কাউন্সিলর লি গুয়াংজুন বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী তরুণদের সক্ষমতা বাড়াতে এমন একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করার জন্য আমি হুয়াওয়েকে ধ্যন্যবাদ জানাই। মেধাবী শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে সিডস ফর দ্য ফিউচার অনুষ্ঠানটি এতো সফলতা পেয়েছে।’ অনুষ্ঠানে হুয়াওয়ে টেকনোলজিস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ঝাং জেংজুন বলেন, ‘‘সিডস ফর দ্য ফিউচার’ বিশ্বব্যাপী হুয়াওয়ের সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ করা সিএসআর প্রোগ্রাম। এই প্রতিযোগিতার মূল উদ্দেশ্য বিশ্বমানের প্রযুক্তি উদ্ভাবনের জন্য নতুন নতুন আইসিটি মেধাবীদের দক্ষতা উন্নয়নে সহায়তা করা। আমি বিশ্বাস করি, নিজেদের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে ও সর্বশেষ প্রযুক্তি সম্পর্কে জানতে এই প্রতিযোগিতা বাংলাদেশী এই শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করছে।’’
তিনি আরও বলেন, ‘আগামী ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে হুয়াওয়ে সব ধরনের সহায়তা করবে। এছাড়াও বাংলাদেশে আইসিটি অবকাঠামো তৈরি, ভার্টিক্যাল ইন্ডাস্ট্রির ডিজিটাল রূপান্তর, ভোক্তাদের বিশ্বমানের প্রযুক্তি পণ্য সরবরাহ করতে এবং আইসিটি মেধাবীদের জন্য হুয়াওয়ে প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে। আমাদের সঙ্গে অংশ নেওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ।’ এসময় তিনি ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে ভিশন-২০২১ অর্জনে বাংলাদেশের আইসিটি খাতে অবদান রাখতে শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান। প্রসঙ্গত, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ‘সিডস ফর দ্য ফিউচার ২০১৯’প্রতিযোগিতা শুরু হয়। এরপর গত দেড় মাসে নির্বাচনী প্রক্রিয়া শেষে আজ ‘সিডস ফর দ্য ফিউচার’ ২০১৯ বাংলাদেশ পর্ব শেষ হলো।
ছবির ক্যাপশন: ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার ও হুয়াওয়ে টেকনোলজিস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ঝাং জেংজুনের সাথে চীন সফরের টিকেট ও ক্রেস্ট হাতে বাছাইকৃত ১০ জন আইসিটি মেধাবী শিক্ষার্থী।