জাতীয় স্বার্থে প্রযুক্তির টেকসই প্রযুক্তি উদ্ভাবে তরুণদের উদ্ভাবনী ও সৃজনশীলতাকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যেতে শুরু হলো সিটিও ফোরাম ইনোভেশন হ্যাকাথনের তৃতীয় আসর। শনিবার কারওয়ানবাজার সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে সংবাদ সম্মেলন করে জাতীয় পর্যায়ের এই হ্যাকাথনের নিবন্ধন শুরু করলো তথ্য প্রযুক্তিবিদদের এই জাতীয় সংগঠনটি।
হাইব্রিড মডেলে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও রাজশাহী বিভাগে একযোগে ১ সেপ্টেম্বর থেকে আইডিয়া রাউন্ড দিয়ে শুরু হবে উদ্ভাবনী ধারণা অন্বেষণে এই আয়োজন। টেকসই ধারণা দিয়ে লাখপতি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় সমস্যার সমাধান দেয়ার এই গৌরবময় সুযোগ নিতে নিবন্ধন করতে হবে অনলাইনে। আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত উচ্চমাধ্যমিক থেকে শুরু করে পরবর্তি পর্যায়ের যে কোন বাংলাদেশি নাগরিক সিটিও ফোরাম বাংলাদেশ এর ওয়েবসাইট “portal.ctoforumbd.org/innovation-hackathon-2022” থেকে নিবন্ধন করতে পারবেন।
আয়োজন নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে সিটিও ফোরাম সভাপতি তপন কান্তি সরকার বলেন, বাংলাদেশ গোল্ডেন ডিভিডেন্ট যুগে রয়েছে, মনে করিয়ে দিয়ে বলেন এই তরুণদের কে যদি সঠিক ভাবে কাজে লাগিয়ে তাদের এই সকল ইনোভেটিভ আইডিয়া কে সঠিক নার্সিং করা যায় তবেই হবে ডিজিটাল বাংলাদেশ। তাই দেরি না করে নিজেদের আইডিয়া গুলোকে সামনে নিয়ে আসতে এবং এসকল আইডিয়ার বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে এই ইনোভেশন হ্যাকাথনে অংশগ্রহণ করার জন্য।
সংবাদ সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক অথরিটির ব্যাবস্থাপনা পরিচালক ও আইসিটি ডিভিশনের অতিরিক্ত সচিব ডঃ বিকর্ণ কুমার ঘোষ বলেন, বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে ডিজিটাল হাবে পরিনত করতে এই ইনোভেশন হ্যাকাথন একটি মাইল ফলক হয়ে থাকবে, তিনি ইনোভেশন হ্যাকাথনের পার্টনার হিসেবে হাইটেক পার্ক থেকে সকল ধরনের সহযোগিতা প্রদানের কথা বলেন। এটুয়াই প্রকল্পের প্রজেক্ট ডিরেক্টর তাঁর বক্তব্যে সরকারের প্রায় ২ হাজারের ও অধিক সকল সেবা গুলোকে ডিজিটালাইজেশন প্রক্রিয়ায় নিয়ে আসতে ইনোভেশান প্রক্রিয়ার আবশ্যিকতা তুলে ধরেন।
আয়োজন সহযোগী সংগঠন বেসিস পরিচালক আহমেদুল ইসলাম বাবু বলেন, সম্ভাবনাময় উদ্ভাবনী উদ্যোগগুলোকে বাস্তাবায়নে বেসিস প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিনিয়োগের জন্য সুযোগ তৈরি করে দেয়া হবে।
আয়োজনের টাইটেল স্পন্সর হিসেবে বাংলাদেশের বৃহৎ টেকনোলজি ইন্ডাস্ট্রি ফেয়ার গ্রুপ তাদের ফেয়ার টেকনোলজি ও বিশ্ব বিখ্যাত গাড়ির ব্র্যান্ড হুন্দাই কে সাথে নিয়ে এই আয়োজনে অংশীদার হওয়ার ঘোষণা দেন দেন ফেয়ার গ্রুপের পক্ষে বিপনন প্রধান জনাব জে, এম, তসলিম কবীর, তিনি বলেন “হ্যাকাথনে অংশগ্রহনকারীদের ভবিষ্যতে চাকরির সুযোগ থাকবে বলে আশ্বাস দেন ফেয়ার গ্রুপের সম্মানিত চেয়ারম্যান রুহুল আলম আল মাহবুব।
অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে সংবাদ সম্মেলনে যুক্ত হয়ে হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. বিকর্ণ কুমার ঘোষ বলেন, তারুণ্য আর প্রযুক্তির শক্তিতে স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে সিটিও ফোরামের এই উদ্যোগে সরকার সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।
এটুআই প্রকল্প পরিচালক দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, আমরা আশা করছি স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের চ্যালেঞ্জগুলোর সমাধান এই হ্যাকাথন থেকে পাওয়া যাবে।
আয়োজনের কনভেনর প্রফেসর ডঃ সৈয়দ আখতার হোসেন বলেন, হ্যাকাথনে মেন্টরদের মাধ্যমে উদ্ভাকদের ধারণাগুলোর বাণিজ্যিক সফলতার উপর আমরা বেশি গুরুত্ব দেবো।
হ্যাকাথনের অরগানাইজিং কমিটির চেয়ার প্রফেসর ডঃ তৌহীদ ভুঁইয়া উদ্ভাবনে অগ্রগামী বিভিন্ন দেশের উদাহরণ দিয়ে বলেন, সেখান কার টেকনোলোজি গুলোকে এডাপ্ট করার জন্য এই ইনোভেশন হ্যাকাথন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
জুরি ও মেন্টর কমিটীর চেয়ার প্রফেসর ডঃ দ্বিপ নন্দি এই হ্যাকাথনে দেশের ও দেশের বাইরের প্রথিতযশা একাডেমিশিয়ান এবং ইন্ডাস্ট্রি এক্সপার্ট গন জুরি ও মেন্টর হিসেবে অংশগ্রহণ করা নিশ্চিত করে বলেন, উদ্যক্তা তৈরি করতে উদ্ভাবনকে গুরুত্ব দিতেই এই আয়োজন ।
সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তরুণদের ইনোভেশন হ্যাকাথনে নিবন্ধন করে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে গণমাধ্যম কর্মীদের সহযোগিতা কামনা করেন সিটিও ফোরামের সাধারণ সম্পাদক আরফে এলাহী মানিক।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখে ইভেন্ট কমিটির চেয়ার আশরাফুল হক, ফিন্যান্স কমিটির চেয়ার মুহাম্মাদ মুসা, কার্য নির্বাহী সদস্য মোঃ আসিফ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
সংবাদ সম্মেলনে “ক্ষুধা মুক্ত বিশ্ব, সুস্বাস্থ্য, গুণগত শিক্ষা, ই-কমার্স, এমার্জিং টেকনোলোজি, ভার্চুয়াল এসিস্টেন্স, অনলাইন সার্টিফিকেট ভেরিফিকেশান” সহ এমন আরো মুক্ত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এই হ্যাকাথন থেকে সেরা উদ্যোগগুলো আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরা হবে বলে জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ইনোভেশন হ্যাকাথন ২০২২০ এর টাইটেল স্পন্সর ফেয়ার টেকনোলজিসের হুন্দাই ব্র্যান্ড। আর হ্যাকাথনে সহযোগী হয়েছে বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি বিভাগের দুইটি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক অথরিটি ও এস্প্যায়ার টু ইনোভেট (এটুআই) এবং বেসিস। আগামী ৮ অক্টোবর ফিজিক্যাল ডেমোন্সট্রেশান এবং ২২ অক্টোবর চুড়ান্ত প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে নির্বাচিত করা হবে সেরা উদ্ভাবনী দল।