বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস) সদস্যদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে স্কিল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের আওতায় ‘ইন্ট্রোডাকশন টু ই-কমার্স বিজনেস’ শীর্ষক একটি প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আয়োজন করে।
২৯ মে (শুক্রবার) সন্ধ্যা সাতটায় অনলাইনে এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল (বিপিসি) এর কো-অর্ডিনেটর ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব এ.এইচ.এম. শফিকুজ্জামান। তিনি বলেন, ঈদ পরবর্তী এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করার জন্য সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।কোভিড-১৯ পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ই-কমার্স প্রশিক্ষণটি অত্যন্ত যুযোপযোগী। ই-কমার্স প্লাটফর্মে সারা দেশের ব্যবসার ধারণা পরিবর্তন হবে। নতুন উদ্যোক্তারা সহজেই এই ব্যবসার ধরণের সাথে নিজেদের সম্পৃক্ত করতে পারবেন। যারা ইতোমধ্যে প্রযুক্তি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত, তারাও নিজেদের ব্যবসাকে ই-কমার্সে সম্প্রসারিত করতে উদ্যোগী হতে পারেন। এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচিটি বিসিএস সদস্যদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
বিসিএস সভাপতি মো. শাহিদ-উল-মুনীর বলেন, বিশ্বায়নের যুগে ই-কমার্স এখন ব্যবসা বাণিজ্যের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে প্রতিনিয়ত জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। ক্রেতারা ই-কমার্সের উপর ভরসা করতে শুরু করেছে। উন্নত দেশগুলোতে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সিংহভাগ অনলাইনে কেনাকাটা করে। আমরা যদি তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবসায় গ্রাহকদের চাহিদা অনুসারে দ্রুত এবং বিশ্বস্ত সেবা প্রদান করি তাহলে শিগগিরই এই খাতে আমরা আমূল পরিবর্তন আনতে সক্ষম হবো। দৃশ্যমান স্টোরের পাশাপাশি ই-কমার্স সেবার মাধ্যমে সারা দেশে গ্রাহক বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। বিসিএস সদস্যদের জন্য এই প্রশিক্ষণ সময়োপযোগী।
বিসিএস যুগ্ম মহাসচিব মো. মুজাহিদ আল বেরুনী সুজন এর সঞ্চালনায় প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে বিসিএস পরিচালক মো. রাশেদ আলী ভূঁঞা ‘ই-কমার্স ব্যবসা’ সম্পর্কে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবসায়ীদের দিক নির্দেশনা প্রদান করেন। এছাড়াও বিসিএস এর প্রাক্তন সভাপতি এস এম ইকবাল, গ্লোবাল ব্র্যান্ড প্রাইভেট লিমিটেডের চেয়ারম্যান এএসএম আবদুল ফাত্তাহ এবং রায়ান্স কম্পিউটারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ হাসান জুয়েল ই-কমার্স ব্যবসায় নিজেদের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন।
প্রশিক্ষণ কর্মসূচি পরিচালনা করেন স্মার্ট টেকনোলোজিস বিডি লিমিটেডের সফটওয়্যার বিজনেস এর প্রধান মো. মিরসাদ হোসাইন। অনলাইনে প্রায় তিন শতাধিক বিসিএস সদস্য এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণ কর্মসূচিটি বিসিএস এর ফেসবুক পেজে প্রচারিত হয়। এসময় প্রায় ২ হাজার দর্শনার্থী প্রশিক্ষণ কর্মসূচিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উপভোগ করেন।
‘ই-কমার্স পরিচিতি’ সম্পর্কে সম্যক ধারণা দিয়ে মো. মিরসাদ হোসাইন বলেন, ই-কমার্স ক্ষেত্র এখন আর ক্ষুদ্র কোন বিষয় নয়। বর্তমান সময়ে কোন পণ্য কেনার আগে সচেতন ক্রেতারা সে বিষয়ে ইন্টারনেটে জেনে নেন। বর্তমানে বাংলাদেশে ৩ হাজার কোটি টাকার ই-কমার্স বাজার রয়েছে। রয়েছে ২ হাজারের বেশি ই-কমার্স সাইট । এফ-কমার্সে (ফেসবুক) সেটি ৫০ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। শুধু দেশেই প্রতিদিন ৫০ হাজার পণ্য ই-কমার্সের মাধ্যমে ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দেয়া হয়। এই খাতে যদি আপনি পরিকল্পনা মাফিক এখনি প্রবেশ করতে পারেন ভবিষ্যত ব্যবসা বাণিজ্যে এটা আপনার বেচাকেনার অন্যতম হাতিয়ার হবে। ধারণা করা হচ্ছে ২০৪০ নাগাদ ৮৫ শতাংশ মানুষ অনলাইনে কেনাকাটা করবে। তাই নিজের ব্যবসাকে ই-কমার্সে যুক্ত করার কোন বিকল্প নেই।
তিন ঘণ্টার সেশনে তিনি ‘ইন্ট্রোডাকশন টু ই-কমার্স বিজনেস’ সম্পর্কে দর্শনার্থীদের একটি স্বচ্ছ ধারণা প্রদান করেন। প্রসঙ্গত, আইসিটি বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির যৌথ উদ্যোগে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।