বিশেষ প্রতিবেদন

সরকার আইসিটি খাতের উন্নয়নে সব রকমের সুযোগ সুবিধা দেওয়ার চেষ্টায় এগিয়ে এসেছে

By Baadshah

January 26, 2020

Think. Hack. Solve. স্লোগানটিকে সামনে রেখে দেশের ১০টি জনগুরুত্বপূর্ণ সমস্যার তথ্য-প্রযুক্তি ভিত্তিক উদ্ভাবনী সমাধানের লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে “ন্যাশনাল হ্যাকাথন অন ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজিস”। আইসিটি বিভাগের “উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন একাডেমী প্রতিষ্ঠাকরণ প্রকল্প (iDEA)” তার “স্টার্টআপ বাংলাদেশ” ব্যনার নিয়ে “বাংলাদেশে অবস্থিত ভারতীয় হাই কমিশন” ও “টেক মাহিন্দ্রা লিমিটেড (TechM)”  এর সহযোগিতায় আয়োজন করছে এই হ্যাকাথন। বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে স্টার্টআপ সংস্কৃতি গড়ে তুলতে কাজ করছে সরকার যার ধারাবাহিকতায় শুরু হচ্ছে এই হ্যাকাথন।

আজ ২৫ জানুয়ারি, ২০২০ (শনিবার) ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় একটি বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্টিভেশন প্রোগ্রাম। সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইসিটি বিভাগের সম্মানিত সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম পিএএ। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. মো: জসিমউদ্দিন খান। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথিদের অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় BAURES এর পরিচালক প্রফেসর ড. মো: আবু হাদি নুর আলী খান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অব ক্রপ বোটানির প্রফেসর ড. এ.কে.এম জাকির হোসেন (সিন্ডিকেট মেম্বারJKKNIU), কম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের (JKKNIU) প্রধান প্রফেসর ড. জান্নাতুল ফেরদৌস, কম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ম্যাথ বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ মুসতাগিজ বিল্লাহ্ এবং iDEA প্রকল্পের উপ-পরিচালক কাজী হোসনে আরা। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাগ্রিকালচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের ডিন প্রফেসর ড. মো: নুরুল হক

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি আইসিটি বিভাগের সম্মানিত সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম জানান যে সরকার তরুণদের লক্ষ্যে আইসিটি খাতের উন্নয়নে সব রকমের সুযোগ সুবিধা দেওয়ার চেষ্টায় এগিয়ে এসেছে। প্রত্যেকটি জেলায় যেমন হাইটেক পার্ক তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছে ঠিক তেমনি প্রত্যেকটি জেলায় দেশীয় স্টার্টআপদের জন্য ইনকিউবেশন সেন্টার তৈরীর পরিকল্পনা গ্রহণ করছে সরকার। হাইটেক পার্কগুলোতে যেন স্টার্টআপদের জন্য অন্তত একটি ফ্লোর ডেডিকেটেড হিসেবে থাকে থাকে সেই লক্ষ্যেই আইসিটি বিভাগ কাজ করছে। ২০২১ সাল নাগাদ তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয়ের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তা বাস্তবায়নে আইসিটি ডিভিশন বেশ তৎপরতার সাথে এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এসব অর্জনে তরুণদের এগিয়ে আসতে বিশেষ অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। দক্ষ জনশক্তি গড়তে সকলকে একসাথে কাজ করতে আহ্বান জানান মাননীয় আইসিটি সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. মো: জসিমউদ্দিন খান বিশেষ অতিথি হিসেবে ৪র্থ শিল্প বিপ্লব সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন। তিনি জানান কৃষি ক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তি ভিত্তিক অনেক কাজ হচ্ছে। প্রযুক্তি ব্যবহার করে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা এসেছে। দেশকে শুধু খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা নয় তথ্যপ্রযুক্তিতেও স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে এগিয়ে আসতে হবে। কৃষিক্ষেত্রে ছাত্রদের আরো বেশি সচেতনতা বৃদ্ধি করার প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।

বিশেষ অতিথি হিসেবে iDEA প্রকল্পের উপ-পরিচালক কাজী হোসনে আরা বলেন- দেশের সকল স্থানে সরকার তার পরিপূর্ণ সেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে। “স্টার্টআপ বাংলাদেশ” ব্যানারে iDEA প্রকল্প দেশীয় উদ্যোক্তাদের ফান্ডিং করাসহ মেনটরিং, গ্রুমিং ইত্যাদি কাজ করছে। এতে বাংলদেশে খুব শীঘ্রই একটি স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম তৈরি হবে বলে তিনি আশা ব্যাক্ত করেন। তিনি জানান যে হ্যাকাথনের বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে স্টার্টআপ বাংলাদেশ- iDEA প্রকল্পের ওয়েবসাইট www.startupbangladesh.gov.bd -এ। হ্যাকাথনে অংশগ্রহণের জন্য আবেদনের শেষ তারিখ ৩১ জানুয়ারি, ২০২০ (শুক্রবার)।

অনুষ্ঠানের সভাপতি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাগ্রিকালচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের ডিন প্রফেসর ড. মো: নুরুল হক তার বক্তব্যে এমন একটা আয়োজনে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়কে পাশে রাখার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। তরুণ প্রজন্মরা এর দ্বারা উৎসাহিত হয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে একটি বলিষ্ঠ ভূমিকা নিতে পারবে বলে তিনি আশা ব্যাক্ত করেন। কৃষিশিক্ষায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় অগ্রণী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। কৃষি প্রকৌশল গ্রাজুয়েটগন সেচ কার্যক্রম ও কৃষি যান্ত্রিকীকরণে অবদান রেখে উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশের কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জন করছে। কম্পিউটারের মাধ্যমে সিমুলেশন করে ফসলের নতুন নতুন জাত উদ্ভাবন করা হচ্ছে। তিনি বলেন -আমরা চাই আমাদের কৃষির সকল সমস্যার সমাধান হবে কম্পিউটারের মাধ্যমে। বক্তব্যের শেষে তিনি সরকারের কাছে দুটো ল্যাব স্থাপনের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদানের অনুরোধ জানান।

অতিথিদের বক্তব্য শেষে হ্যাকাথন সম্পর্কিত একটি কি-নোট উপস্থাপন করেন iDEA প্রকল্পের সিনিয়র পরামর্শক আর এইচ এম আলাওল কবির। পরে উপস্থিত তরুণরা হ্যাকাথনের প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেয় । ময়মনসিংহের উক্ত ক্যাম্পেইনে প্রায় ২ শতাধিক শিক্ষার্থীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তাবৃন্দ এবং এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিগন উপস্থিত ছিলেন।

অপরদিকে,

রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে একই দিনে অনুষ্ঠিত হয় আরো একটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পেইন। রাজশাহী বিভাগের প্রায় ৪ শতাধিক অংশগ্রহণকারীদের নিয়ে আয়োজিত ঐ ক্যাম্পেইনে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন সম্মানিত ভিসি প্রফেসর ড. রফিকুল ইসলাম শেখ। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ডিন প্রফেসর ড. জহুরুল ইসলাম সরকার এবং রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. মো: সেলিম হোসেন। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান প্রফেসর ড. বশির আহমেদ। উক্ত অনুষ্ঠানে হ্যাকাথনের কি-নোট উপস্থাপন করেন iDEA প্রকল্পের পরামর্শক এ বি এম মনিরুল ইসলাম।