বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সহিংস-উগ্রবাদ প্রতিরোধে দুইদিন ব্যাপী,
২৫-২৬ জুলাই সম্প্রীতি উৎসবের আয়োজন করতে যাচ্ছে ’মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ)
পরিচালিত প্রকল্প ’সম্প্রীতি’। রোববার, ২১ জুলাই, জাতীয় প্রেসক্লবে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ
সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
সম্প্রীতি উৎসব ২০১৯ শীর্ষক এই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সম্প্রীতির কর্মসূচি
ব্যবস্থাপক শাহরিয়ার মান্নান, উপ- কর্মসূচি ব্যবস্থাপক জনাব মনিরুজ্জামান ও ক্রসওয়াক
কমিউনিকেশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব এম.এ. মারুফ।
দুইদিন ব্যাপী উৎসবটি অনুষ্ঠিত হবে সেলিব্রেটি হল, বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স সেন্টারে। উদ্বোধনী
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পীকার,
জনাব ফজলে রাব্বি মিয়া এম.পি। এছাড়াও অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন ’মানুষের জন্য
ফাউন্ডেশনের’ নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম।
উৎসবের প্রথম দিন প্রদর্শনী, অনুপ্রেরণামূলক অনুষ্ঠান ও কনসার্ট অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া
আয়োজনের অংশ হিসেবে থাকবে বাংলা মাধ্যম, ইংরেজি মাধ্যম ও মাদ্রাসার শিক্ষকদের ও
শিক্ষার্থীদের নিয়ে আলাদা আলাদা গোলটেবিল আলোচনা হবে । দ্বিতীয় দিনেও প্রদর্শনী,
অনুপ্রেরণামূলক অনুষ্ঠান ও কনসার্টের পাশাপাশি সরকারের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও
সাংবাদিকদের মধ্যে আলাদা আলাদা গোলটেবিল আলোচনা হবে। উৎসবটি সবার জন্য উন্মুক্ত।
সম্মেলনে বক্তারা জানান, সম্প্রীতি প্রকল্প তরুণদের নিয়ে কাজ করতে চায়। সামাজিক
যোগাযোগ মাধ্যমে বা অন্য কোনভাবে তারা যেন উগ্রবাদে প্ররোচিত না হয়, দেশের তরুণরা
যাতে যৌক্তিক বিবেচনা করতে পারে- সেই অবস্থান তৈরির উদ্দেশে যাত্রা শুরু করল সম্প্রীতি।
সংবাদ সম্মেলনে লন সম্প্রীতির কর্মসূচি ব্যবস্থাপক শাহরিয়ার মান্নান বলেন, ‘‘মানুষের
জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ) বাংলাদেশের জাতীয় পর্যায়ের একটি অন্যতম বেসরকারি উন্নয়ন
সংস্থা,যা ২০০২ সাল থেকে মানবাধিকার ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে। এমজেএফ এর সকল
কর্মসূচি বাংলাদেশের সংবিধান, জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল (২০১২), সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা
(২০১৬-২০২০) এবং টেকসই উন্নয়ন এজেন্ডা ২০৩০ এর সাথে ধারণা ও কৌশলগতভাবে
সম্পর্কযুক্ত।
এরই ধারাবাহিকতায় এমজেএফএর “যুব ও সামাজিক সংহতি” কার্যক্রমের আওতায় ঝড়পরধষ
অপঃরড়হ ধহফ গড়নরষরুধঃরড়হ ভড়ৎ চৎবাবহঃরড়হ ড়ভ জধফরপধষরুধঃরড়হ ধহফ ঊীঃৎবসরংস ঃযৎড়ঁময ঊহযধহপবফ ধহফ
ঞধৎমবঃবফ ওহঃবৎাবহঃরড়হং (ঝঅগচজঊঊঞও) প্রকল্প সহিংস উগ্রবাদ প্রতিরোধে বৃহত্তর ঢাকার
ছয়টি জেলায় বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রকল্পটি ¯œাতক/¯œাতকোত্তর পর্যায়ের কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়
ও মাদ্রাসা পড়–য়া শিক্ষার্থীদের মাঝে সহনশীলতা, পরমত সহিষ্ণুতা, ভিন্নতা গ্রহণের
মানসিকতা ও মননশীলতা চর্চার মাধ্যমে সামাজিক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে।
কারণ আমরা দেখছি যে,বর্তমানে বিশ্বে¦ এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। একবিংশ শতকের এই
অভাবনীয় অগ্রগতিরকালে বিশ^ সভ্যতার অন্যতম সংকট হিসেবে সামনে এসেছে মানুষের
সাথে মানুষের সংঘাত। প্রতিটি মহাদেশ জুড়ে আজ বিবেকবান দায়িত্বশীল মানুষের মনে
আশঙ্কা হয়ে দেখা দিয়েছেÑতিলতিল করে গড়ে তোলা মানুষের মানবিক সভ্যতাটি কবে তো?
নাকি ধ্বংস হয়ে যাবে আত্মবিনাশী সংঘাতের পথ ধরে? বিশ্বজুড়ে নানা অস্থিরতার ছোঁয়া
লেগেছে বাংলাদেশেও। কর্মসংস্থানের অভাব, বেকারত্ব, পারিবারিক বন্ধনের শিথিলতা, ধর্ম নিয়ে
অপব্যাখ্যা, সোস্যাল মিডিয়ায় উগ্রবাদীদের দৌরাতœ্য, খেলাধূলা, বিনোদন ও সাংস্কৃতিক
কর্মকান্ডে অংশগ্রহণের সীমাবদ্ধতা, সৃজনশীল ও উদ্ভাবনী কাজে উৎসাহিত না করা এবং
বিভিন্ন ধরনের অস্থিরতা তরুণদের মনোজগতে সংশয় ও শূন্যতা তৈরি করেছে। নানামুখী
অস্থিরতার কারণে সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও সহিংসতা উগ্রবাদের বিস্তার হচ্ছে। ’’
ক্রসওয়াক কমিউনিকেশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম.এ. মারুফ বলেন, ‘‘আমরা
আশাবাদী। এই কঠিন প্রশ্নের সামনে দাঁড়িয়ে মানুষের মানবিক সভ্যতার বিজয়ের কথা
উচ্চারণ করতে চাই। আমরা বলতে চাই, এই সংকট, এই শঙ্কার বিপরীতে একটাই উত্তরÑ
সম্প্রীতি। একমাত্র সম্প্রীতিই পাওে মানুষের সাথে মানুষের মেলবন্ধন ঘটিয়ে ¯^প্নের সেই
মানবিক সভ্যতাকে বাস্তবে রূপ দিতে।
সম্প্রীতি প্রকল্প মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের একটি উদ্যোগ, যা তরুণদের জন্য ও তরুণদের সাথে
নিয়ে। এ প্রকল্পটি বিতর্ক, খেলাধুলা, সাইবার সচেতনতা, উদ্যোক্তা কার্যক্রমে উদ্বুদ্ধকরণ, শিল্প
ও সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে তরুণদের মানবিক মূল্যবোধকে জাগিয়ে তুলতে কাজ করছে, যেন
তরুণ-তরুণীরা মেধা ও বিশ্লেষণী ক্ষমতা দিয়ে উগ্রবাদ প্রতিরোধে সচেষ্ট হতে পারে। আমরা
কাজ করছি উগ্রবাদ নির্মূলে নয়, উগ্রবাদী হয়ে ওঠার যে কারণগুলো রয়েছে তা নিরসনে।
অর্থাৎ সমস্যা তৈরী হওয়ার আগেই তা প্রতিরোধ করতে। সম্প্রীতি প্রকল্পটি ফেব্রæয়ারী’ ১৮
থেকে যেকাজগুলো করছে, তার মধ্যে অন্যতম হলো:
উগ্রবাদ সম্পর্কে তরুণদের ধারণা ও তা প্রতিরোধে করণীয় জানতে বৃহত্তর ঢাকার
ছয়টি জেলার তিন হাজার তরুণের উপর জরিপ পরিচালনা
৩৮টি সংগঠনকে সহিংস উগ্রবাদ প্রতিরোধে সম্পৃক্ত করা। যার মধ্যে রয়েছে: ইয়্যুথ
গ্রæপ, থিয়েটার গ্রæপ, ডিবেটিং সংস্থা, ফিল্ম মেকিং সংস্থা, বিশ্ববিদ্যালয় ও
বিশ্ববিদ্যালয় ভিত্তিক ক্লাব, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া, সফটওয়্যার ও সাইবার
সেফটিভিত্তিক সংগঠন এবং এনজিও।
– ২৩৬টি বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও মাদ্রাসার (ফাজিল ও কামিল) প্রায় ৪৯০০০ শিক্ষার্থীকে
সরাসরিভাবে সৃজনশীলতা ও মূল্যবোধ চর্চায় উদ্বুদ্ধ করতে সহ-শিক্ষাকার্যক্রমে সম্পৃক্ত
করা।
প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ৮৯,০০০ তরুণদের মাঝে সহিংস উগ্রবাদ এবং সাইবার
অপরাধ বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি
ধর্মীয় উগ্রবাদ প্রতিরোধে ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও মাদ্রাসা বোর্ডকে সম্পৃক্তকরণ
এবং আন্ত:ধর্মীয় সংলাপ আয়োজন
ওয়েবসাইটভিত্তিক প্রচারণা এবং প্রতিযোগিতামূলক কার্যক্রম আয়োজন
৬টি জেলার জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, সাংবাদিক, সুশীল সমাজ ও সাংস্কৃতিক
সংগঠনকে সহিংস উগ্রবাদ বিষয়ে প্রচারণা কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করা
হলিআটিজান পরবর্তি সহিংসতা উগ্রবােেদর অবস্থা,সরকারী ও বেসরকারি উদ্যোগ
এবং ভবিষ্যৎ কর্মসূচী প্রণয়ণে সুপারিশ সংগ্রহ করতে কান্ট্রি নিড্ধসঢ়;স
এসেসমেন্ট পরিচালনা (চলমান)। ’’