সিটিও ফোরাম ইনোভেশন হ্যাকাথনের চ্যাম্পিয়ন হল জাহাঙ্গীর নগর ইউনিভার্সিটি। ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের বাস্তবধর্মী ছয়টি সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করার লক্ষ্য নিয়ে সিটিও ফোরাম বাংলাদেশের আয়োজিত ‘সিটিও ফোরাম ইনোভেশন হ্যাকাথন ২০২২’-এর গ্র্যান্ড ফিনালে ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
২৮ নভেম্বর (সোমবার) বিকেলে রাজধানীর আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি–বাংলাদেশ (এ আই ইউবি) ক্যাম্পাসে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেয়া হয়।
চ্যাম্পিয়ন টিমকে পুরস্কার হিসেবে বিজয়ীদের দেয়া হয়েছে ১ লাখ টাকার আর্থিক পুরস্কার। দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি চট্টগ্রাম। তারা পায় ৭৫ হাজার টাকার আর্থিক পুরস্কার। তৃতীয় স্থান অর্জন করে আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ। চতুর্থ স্থান অর্জন করে বাংলাদেশ ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি এবং পঞ্চম স্থান অর্জন করে এ জেট টেকনোলজি।
চলতি বছরের ১৩ আগস্ট অনলাইন প্লাটফর্মে নিবন্ধন শুরু হয়ে আইডিয়া রাউন্ড, প্রোটোটাইপ রাউন্ড, অনলাইন ডেমনস্ট্রেশন ও সর্বশেষ ২২ অক্টোবর সরাসরি উপস্থাপনের মাধ্যমে প্রতিযোগিতাটি শেষ হয়। ‘ক্ষুধামুক্ত বিশ্ব, সুস্বাস্থ্য, গুণগত শিক্ষা, ই–কমার্স, এমার্জিং টেকনোলজি, ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্স, অনলাইন সার্টিফিকেট ভেরিফিকেশন’-এমন ১১টি চ্যালেঞ্জ নিয়ে শুরু হওয়া জাতীয় পর্যায়ের ভার্চুয়াল ইনোভেশন হ্যাকাথন নিবন্ধন করে প্রায় ১২৪ আইডিয়া। এর মধ্য থেকে ৫০ জন বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত প্রফেসর নিয়ে জুরি বোর্ড ও ২০ জন ইন্ডাস্ট্রি এক্সপার্ট বোর্ডের সদস্যের বিভিন্নভাবে বাছাই করা ৪১টি আইডয়া নিয়ে শুরু হয় এ হ্যাকাথন।
হ্যাকাথনের আয়োজক প্রাতিষ্ঠান সিটিও ফোরাম বাংলাদেশের সভাপতি তপন কান্তি সরকার বলেন, ‘‘আইটি ইন্ডাস্ট্রিতে দক্ষ তরুণদের অনেক চাহিদা রয়েছে। প্রতিবছর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অসংখ্য মেধাবী আইটি গ্রাজুয়েট বের হচ্ছে, কিন্তু তাদের মধ্যে ইন্ডাস্ট্রির চাহিদা মত দক্ষতা নেই। আমাদের তরুণরা অনেক মেধাবী। তাদের মধ্যে অনেক ইনোভেটিভ আইডিয়া রয়েছে। তরুণদের এই আইডিয়াগুলি যদি সঠিক ভাবে কাজে লাগিয়ে, সঠিক নার্সিং করা যায়, আমার বিশ্বাস, স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের চ্যালেঞ্জগুলোর সমাধানে অনেকটা ভূমিকা রাখা সম্ভব হবে। মেধাবী তরুণদের ভেতর থেকে উদ্ভাবনী আইডিয়াগুলোকে বের করে এনে জাতীয় স্বার্থে টেকসই প্রযুক্তি উদ্ভাবনে তরুণদের সৃজনশীলতাকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যেতে আমাদের এই প্রচেষ্টা। আশা করছি, ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে এই উদ্যোগ কিছুটা হলেও কাজে আসবে।‘’
এই আয়োজনে যেসব প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করেছেন সবার জন্য শুভ কামনা জানান কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর এএইচএম জহিরুল হক।
এআইইউবি–এর প্রো ভাইস চ্যান্সেলর ড. আব্দুর রহমান বলেন, ‘‘বিশ্বের কাছে ডিজিটাল হাবে পরিণত করতে এই ইনোভেশন হ্যাকাথন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তাদের এই প্রযুক্তিনির্ভর আইডিয়া বাংলাদেশকে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে। এবারের হ্যাকাথনটি মাইল ফলক হয়ে থাকবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।‘’
অন্যান্যের মধ্যে আরো বক্তব্য দেন প্রফেসর ড. বদরুল হুদা খান, আইসিটি বিভাগের জয়েন্ট সেক্রেটারি মি. প্রণব সাহা, আয়োজনের আহ্বায়ক প্রফেসর ড. সৈয়দ আখতার হোসেন, ফেয়ার গ্রুপের সিইও মি. মোস্তাকিম দায়াং, আয়োজন সহযোগী সংগঠন বেসিস পরিচালক আহমেদুল ইসলাম বাবু প্রমুখ। এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের পরিচালক এবং আয়োজনের জুরি ও মেন্টর কমিটির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. দ্বিপ নন্দি প্রমুখ।
এবারের ইনোভেশন হ্যাকাথন ২০২২–এর টাইটেল স্পন্সর ফেয়ার টেকনোলজিসের হুন্দাই ব্র্যান্ড। আর হ্যাকাথনে যুক্ত ছিল বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি বিভাগের দুটি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক অথরিটি ও এস্প্যায়ার টু ইনোভেট (এটুআই) এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)।