TechJano

হকিংয়ের চরিত্র কেমন ছিল?

হকিং ছিলেন দারুণ রোমান্টিক। প্রেম আর রসবোধে ভরা একজন মানুষ। স্ট্রাইপ বারে যেতেন, বিচে রোমান্টিক সময় কাটিয়েছেন। শারীরকি অক্ষমতা তাকে দমাতে পারেনি। জীবনটাকে পুরোপুরি উপভোগ করতেন তিনি। ‘জীবন যদি মজার না হতো এটি হতো দুঃখভরা’—এ কথাগুলো বিখ্যাত বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং ধারণ করেছিলেন। ১৪ মার্চ তিনি ৭৬ বছর বয়সে মারা গেছেন। তাঁর দুর্দান্ত রসবোধ, এলিয়েন বা ভিনগ্রহের প্রাণী ও ব্ল্যাকহোল বা কৃষ্ণগহ্বরে দৃঢ় বিশ্বাসের কথা মানুষ দীর্ঘদিন মনে রাখবে। বিশ্বখ্যাত তত্ত্বগুলো আবিষ্কারের পাশাপাশি তাঁর চরিত্রের কিছু অন্য দিকও আছে। জেনে নিন সেগুলো:

কাকতাল
বিখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী গ্যালিলিও গ্যালিলির মৃত্যুর ৩০০ বছর পূর্তির দিন জন্ম দেন স্টিফেন হকিং। মারা গেলেন আরেক বিখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী আইনস্টাইনের ১৩৯তম জন্মদিনে। ১৮৭৯ সালের ১৪ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন আইনস্টাইন।

কুড়ে
স্টিফেন হকিং বলতেন, যে তাঁর উপস্থিত বুদ্ধি বা আইকিউ নিয়ে গর্ব করে সে হারার দলে। এ কথা থেকেই বোঝা যায় স্টিফেন হকিং নিজেকে মেধাবী মনে করতেন না। তিনি ছিলেন কুড়েদের দলে।

স্কুলজীবনে খুব ভালো গ্রেড পাননি। তিনি ছিলেন গড়পড়তা দলের। তবে স্কুলের বাঁধাধরা লেখাপড়ার বাইরে অন্য কিছু শেখার ব্যাপক ঝোঁক ছিল। ক্লাসে তো রীতিমতো ‘আইনস্টাইন’ খেতাব পেয়েছিলেন তিনি।

শিশুতোষ লেখক
যখন জটিল তত্ত্ব নিয়ে কাজ করতেন না, তখন হকিং শিশুতোষ বই লিখতেন। মেয়ের সঙ্গে চার খণ্ডের একটি বই লিখেছেন তিনি। ২০০৭ সালে লেখা ‘জর্জ’স সিক্রেট কি টু দ্য ইউনিভার্স’ বইটি প্রকাশের পর ২০০৯, ২০১২ ও ২০১৪ সালে এর আরও সিক্যুয়েল বের হয়। এসব বইয়ে সহজ ভাষায় অণু-পরমাণু, গ্রহ-নক্ষত্র, ব্ল্যাকহোলের বিষয়ে বর্ণনা করেছেন তিনি।

নৌকাচালক
স্টিফেন হকিং বিশ্ববিদ্যালয়জীবনের প্রথম দিকে ছিলেন অনেক বেশি নিঃসঙ্গ। তাই হয়তো একাকিত্ব দূর করতেই যোগ দিয়েছিলেন কলেজের বোট রেসিং টিমে। সবচেয়ে মজার কথাটি হলো, তাঁর দায়িত্ব ছিল রেসের সময় নৌকার হাল ধরে রাখা এবং এই কাজ তিনি এত সফলতার সঙ্গে করেছিলেন যে অল্প কিছু দিনেই হয়ে উঠেছিলেন পুরো অক্সফোর্ডে বিপুল জনপ্রিয়। সপ্তাহে ছয় দিন সন্ধ্যায় অনুশীলন করতে হতো বোট চালানোর।

বাজিকর
২০১২ সালে পদার্থবিজ্ঞানীরা ঘোষণা দিলেন যে তাঁরা হিগস-বোসন কণা বা ঈশ্বর কণার দেখা পেয়েছেন। এতে বেশ নাখোশ ছিলেন তিনি। কিন্তু কেন? কারণ, বাজিতে হেরে যান হকিং। হকিংস তাঁর বন্ধুর সঙ্গে ১০০ ডলারের বাজি ধরে বলেছিলেন, কখনো ঈশ্বর কণার খোঁজ পাওয়া যাবে না। কিন্তু বাজিতে তিনি হেরে যান। এর আগেও ১৯৯৭ সালে তিনি মার্কিন বিজ্ঞানী জন প্রিস্কিলের সঙ্গে বাজি ধরেন। তাঁর কথা ছিল, কৃষ্ণগহ্বর থেকে কিছু বের হতে পারে না। কিন্তু ২০০৪ সালে পরাজয় মেনে নেন তিনি।

অক্সফোর্ডে ভর্তি
বাবার ইচ্ছে ছিল ছেলে ডাক্তারি পড়বে, নয়তো অক্সফোর্ডে পড়বে অথচ টাকা ছিল না। স্টিফেন হকিং তাই অংশগ্রহণ করলেন স্কলারশিপ পরীক্ষায় এবং টিকেও গেলেন সফলতার স্বাক্ষর রেখে।

কসমোলজি তাঁর প্রিয় বিষয়
ছোটবেলা থেকে প্রচণ্ড আগ্রহ ছিল গণিতে, অথচ অক্সফোর্ডে এসে বেছে নিলেন ফিজিকসের একটি অপ্রচলিত শাখা কসমোলজি।

ভরশূন্যতায় থাকার অভিজ্ঞতা
২০০৭ সালে ৬৫ বছর বয়সে রিচার্ড ব্র্যানসনের সাহায্যে ভরশূন্য অভিজ্ঞতা নিতে মহাকাশ ভ্রমণ করেন হকিং। মহাকাশে ভাসতে ভাসতে তিনি চেয়ার ছেড়ে দেন এবং পা ছোড়ার চেষ্টা করেন।

Exit mobile version