২৯ সেপ্টেম্বর স্কুল প্রিন্সিপালদের সাথে মত বিনিময়, অভিজ্ঞতা আদান-প্রদান, বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা ও সাফল্য উদযাপন উপলক্ষ্যে রাজধানীর র্যাডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেনে অনুষ্ঠিত হয়েছে ব্রিটিশ কাউন্সিল পার্টনার স্কুলস প্রিন্সিপালস’ মিট ২০২৪। বার্ষিক এ আয়োজনে দেশের বিভিন্ন স্কুলের নেতৃত্বদানকারী ব্যক্তিবর্গ অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠান চলাকালে, বৃহৎ পরিসরে ফলপ্রসূ পরীক্ষা ব্যবস্থাপনা এবং স্কুলগুলোকে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় সহায়তা ও সুযোগ প্রদান করার মাধ্যমে ব্রিটিশ কাউন্সিল এর পার্টনার স্কুলগুলোর সাথে অংশীদারিত্বের সুফলসমূহের ওপর আলোকপাত করা হয়।
অনুষ্ঠানে স্কুলের নেতৃত্বদানকারী ব্যক্তিরা নিজেদের মধ্যে নেটওয়ার্কিং এবং অংশীদারিত্ব বাড়ানোর সুযোগ পান। অনুষ্ঠানে ১৮৩টি পার্টনার স্কুল থেকে প্রায় ২৫০ জন স্কুল লিডার অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদানকালে ব্রিটিশ কাউন্সিলের কান্ট্রি ডিরেক্টর স্টিফেন ফোর্বস বলেন, “আড়াই শ জনেরও বেশি স্কুল লিডারকে এ প্ল্যাটফর্মে একত্রিত করতে পেরে আমরা গর্বিত। এ প্ল্যাটফর্ম আমাদের সবাইকে নেটওয়ার্কিং, নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ তৈরি এবং একে অপরের কাছ থেকে জানার ও শেখার সুযোগ করে দিয়েছে। ধারাবাহিকভাবে সহযোগিতা প্রদানের জন্য আমরা আমাদের পার্টনার স্কুলগুলোকে ধন্যবাদ জানাই। আমাদের বিশ্বাস, এ প্ল্যাটফর্মটি আমাদের অংশীদারিত্বের নিদর্শনস্বরূপ।
‘ইওর ওয়ার্ল্ড কম্পিটিশন’র বিজয়ী এবং যারা ব্রিটিশ কাউন্সিল অ্যাকশন রিসার্চ গ্রান্ট ২০২৩-২৪ লাভ করেছেন, অসামান্য সাফল্য অর্জনের জন্য তাদের অভিনন্দন। আমরা বিশ্বাস করি, এ উদ্যোগগুলো বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ও শিক্ষাবিদদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নিশ্চিতকরণে তাদের সামগ্রিক উন্নয়নে ও প্রতিভা বিকাশে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।”
অনুষ্ঠান চলাকালে ‘ইওর ওয়ার্ল্ড ভিডিও কম্পিটিশিন ২০২৩-২৪’ এবং ‘পার্টনার স্কুল অ্যাকশন রিসার্চ প্রোগ্রাম’র বিজয়ীদের ক্রেস্ট দিয়ে সম্মাননা প্রদান করা হয়। ‘ইওর ওয়ার্ল্ড ভিডিও কম্পিটিশন ২০২৩-২৪’ -এর ৭৩ জন অংশগ্রহণকারী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এ প্রতিযোগিতা শিক্ষাবিদ ও শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করা এবং উদ্ভাবন ও উৎকর্ষ অর্জনের সাফল্য উদযাপনের মাধ্যমে একটি বৈশ্বিক পার্টনার স্কুল কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দেয়।
‘পার্টনার স্কুলস অ্যাকশন রিসার্চ প্রোগ্রাম’ শিক্ষক ও স্কুল লিডারদের পেশাগত উন্নয়ন, নেতৃত্ব, প্রযুক্তি এবং শিক্ষার্থীদের ফলাফলে মানসম্মত মানোন্নয়নে ভূমিকা রাখে। এ প্রোগ্রাম শিক্ষাক্ষেত্রে ধারাবাহিক পেশাগত উন্নয়ন এবং উদ্ভাবনের সংস্কৃতি গড়ে তোলে। এ প্রোগ্রামের প্রত্যেকজন সফল আবেদনকারীর আড়াই হাজার পাউন্ড পর্যন্ত ফান্ড পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। গত বছরের রিসার্চ গ্রান্ট বিজয়ী সিডার ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের নীতি ত্রিপাঠি ‘দ্য রোড টু রিওয়ার্ড: ব্রিটিশ কাউন্সিল অ্যাকশন রিসার্চ গ্রান্ট ২০২৩-২৪’ শীর্ষক একটি সেশন উপস্থাপন করেন।
এ বছর পার্টনার স্কুলগুলোর ১৫ জন গবেষক এ গ্রান্ট জিতেছেন, যার মধ্যে বাংলাদেশ থেকে রয়েছে দু’জন: বিএএফ শাহীন ইংলিশ মিডিয়াম কলেজ মো. মুরশিদুল ইসলাম এবং সিলেট ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ফাহমিদা শারমিন।
ব্রিটিশ কাউন্সিলের এক্সামস ডিরেক্টর বাংলাদেশ ম্যাক্সিম রেইম্যান পার্টনার স্কুলগুলোকে সহযোগিতার ক্ষেত্রে ব্রিটিশ কাউন্সিলের অর্জন এবং পরিকল্পনা তুলে করেন। তিনি নতুন বিভিন্ন উদ্যোগ এবং সুফল সম্পর্কেও জানান যা স্কুল, শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের উপকৃত করবে।
অনুষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ আয়োজনগুলোর মধ্যে ছিল ইনোভেশন ফর ওয়েলবিইং ফাউন্ডেশনের (আইডব্লিউএফ) নির্বাহী পরিচালক মনিরা রহমানের ‘মানসিক স্বাস্থ্য ও সুস্থতা’ শীর্ষক একটি সেশন। এছাড়া, দক্ষিণ আফ্রিকার ইউনিভার্সিটি অব স্টেলেনবোশের ডিপার্টমেন্ট অব কারিকুলাম স্টাডিজের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক ড. কুডজাই স্যাভিয়াস তারিসায়ি, ‘লিডিং দ্য চার্জ: প্রিন্সিপালস অ্যাজ এআই চ্যাম্পিয়নস অ্যান্ড গার্ডিয়ানস এগেইনস্ট ডিপফেকস’ শীর্ষক একটি অনলাইন সেশন পরিচালনা করেন এবং ব্রিটিশ কাউন্সিলের ডিরেক্টর অব অপারেশনস এক্সামিনেশনস জুনায়েদ আহমেদ, ‘এনশিওরিং ইনটিগ্রিটি: এ ডিপ ডাইভ ইনটু ব্রিটিশ কাউন্সিল এক্সাম অপারেশনস’ নিয়ে সেশন পরিচালন করেন। অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পিয়ারসন এডেক্সেল এর নেপাল ও বাংলাদেশ রিজিওনাল অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার আবদুল্লাহ আল মামুন বিন কুদ্দুস; পিয়ারসন এডেক্সেল বাংলাদেশ এর কাস্টমার সার্ভিস অ্যান্ড অপারেশনস অফিসার সামিন ইয়াসির হক; এবং এইচএসবিসি’র প্রতিনিধি, যিনি ব্রিটিশ কাউন্সিলের সাথে এইচএসবিসি’র চলমান কার্যক্রম নিয়ে বক্তব্য রাখেন। সমাপনী বক্তব্য প্রদানের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন ব্রিটিশ কাউন্সিলের ডিরেক্টর অব বিজনেস ডেভেলপমেন্ট সারওয়াত রেজা।